পুঁজিবাজারে এক সময় নগদ লভ্যাংশের আকর্ষণীয় ও নিরাপদ উৎস হিসেবে বিবেচিত তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি ঘুরে দাঁড়ানোর নতুন সুযোগ পেয়েছে। গত ২১ জুলাই এক নির্বাহী আদেশে সরকার কোম্পানিটির গ্যাস বিতরণের মাশুল (Wheeling Charge) বাড়িয়েছে।
ওই আদেশে তিতাসের গ্যাস বিতরণ চার্জ ১৩ পয়সা থেকে বাড়িয়ে ২১ পয়সা নির্ধারণ করা হয়েছে। বৃদ্ধির হার প্রায় ৬২ শতাংশ। নতুন হার চলতি জুলাই মাসের ১ তারিখ থেকে কার্যকর হয়েছে।
২০২২ সালে এনার্জি লেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি) তিতাস গ্যাসের বিতরণ চার্জ ২৫ পয়সা থেকে কমিয়ে ১৩ পয়সা বেঁধে দিয়েছিল। বিতরণ চার্জ কমিয়ে প্রায় অর্ধেকে নামিয়ে আনায় কোম্পানির মুনাফায় বড় ধরনের প্রভাব পড়ে। তাতে ২০২১-২২ হিসাববছরে কোম্পানিটির মুনাফা ২৮ কোটি ৪৩ লাখ টাকা কমে যায়। মুনাফা হ্রাসের হার ৮ দশমিক ২১ শতাংশ।
চলতি হিসাববছরের প্রথম প্রান্তিকে (জুলাই’২২-সেপ্টেম্বর’২২) তিতাসের শেয়ার প্রতি আয় বা ইপিএস কমে প্রায় অর্ধেকে নেমে আসে। আর তৃতীয় প্রান্তিকে (জানুয়ারি’২৩-মার্চ’২৩) কোম্পানিটি শেয়ার প্রতি ১ টাকা ১৯ পয়সা লোকসান দেয়।
২০০৮ সালে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হওয়া তিতাস গ্যাসের বিতরণ চার্জে প্রথম কোপ পড়ে ২০১৬ সালে। ওই বছর বিইআরসি কোম্পানিটির বিতরণ চার্জ ৫৫ পয়সা থেকে কমিয়ে ২৩ পয়সা নির্ধারণ করে। তাতে কোম্পানির মুনাফা ও পুঁজিবাজারে নেতিবাচক প্রভাব পড়ে। বিশেষ করে বিদেশী বিনিয়োগকারীরা কোম্পানির শেয়ার থেকে বিনিয়োগ প্রত্যাহার করে নিতে থাকলে বাজার চরম অস্থিতিশীল হয়ে উঠে। অনেক দেনদরবারের পর ২০১৮ সালে বিতরণ চার্জ ২ পয়সা বাড়িয়ে ২৫ পয়সা করা হয়। কিন্তু এর চার বছরের মাথায় আবার কোম্পানিটির গ্যাস বিতরণ চার্জে আবার কাঁচি চালায় বিইআরসি। ২০২২ সালের জুন মাসে এই চার্জ কমিয়ে ১৩ পয়সা নির্ধারণ করা হয়। তাতে এক সময়ের ব্লুচিপ কোম্পানিটির আর্থিক সংকটে পড়ে যায়। এবার বিতরণ চার্জ কিছুটা বাড়ানোয় কোম্পানিটি একটু শ্বাস নেওয়ার সুযোগ পাবে।