তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, বিএনপির মূল নেতৃত্ব কার্যত তাদের দলের নেতাদের বিএনপি নামক ‘কারাগারে’র মধ্যে বন্দী করে রেখেছে, যেখান থেকে বের হয়ে কেউ নির্বাচন করতে পারবে না। আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে সচিবালয়ে মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ সব কথা বলেন।
তিনি বলেন, 'এর কারণ হচ্ছে বিএনপি করলে এখন কোনো নির্বাচন করা যায় না, সংসদ নির্বাচন, নিয়ে উপজেলা নির্বাচন, ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনও করা যায় না। আর তাদের সিদ্ধান্ত হয়, সাত সমুদ্র তেরো নদীর ওপার থেকে, যার সাথে বাস্তবতার কোনো সম্পর্ক নেই।’
‘তবে বিএনপি নামক এই কারাগার থেকে অনেকেই বের হয়ে এসেছেন’ উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, ‘আজকে অনেকেই মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। বিএনপির সাবেক সংসদ সদস্য, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য তারা অনেকেই মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। বিএনপির অনেক নেতাই স্বীকার করেন যে, আসলে এই সিদ্ধান্তগুলো বিএনপিকে ধীরে ধীরে ধ্বংসের দিকে ঠেলে দিচ্ছে।’
হাছান মাহমুদ বলেন, ‘বিএনপি এখন আকাশের দিকে আর পশ্চিমের দিকে তাকিয়ে থাকে, যদি কিছু হয়। এভাবে একটি দল টিকে থাকতে পারে না। বিএনপি আজকে আবার হরতাল ডেকেছে এবং আরো না কি কর্মসূচি দেবে। কিন্তু এই হরতালে জনগণের কোনো সাড়া নেই এবং বিএনপি মূল নেতৃত্বের এই সিদ্ধান্তের সাথে বিএনপির নেতাকর্মীরা কেউ একমত নয়। নির্বাচনী আমেজ ও ডামাডোলে বিএনপির সমস্ত কর্মসূচি হাওয়ায় মিলিয়ে গেছে। তারা একটি হাস্যকর দলে রূপান্তরিত হয়েছে। আমি আশা করবো বিএনপি এই অপরাজনীতির পথ থেকে বের হয়ে সুস্থ ধারার রাজনীতিতে ফিরে আসবে।’
‘ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি) বলেছে যে, অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না’ এ সম্পর্কিত এক প্রশ্নের জবাবে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন টিআইবি নির্বাচনের দিন দেখতে পাবে। টিআইবি’র প্রতি প্রশ্ন, ২৮ অক্টোবর থেকে দেশে সহিংসতা হয়েছে, প্রধান বিচারপতির বাসভবনে, জাজেস কমপ্লেক্সে এমন কি পুলিশ হাসপাতালে হামলা চালানো হলো, নার্সদেরকে অপদস্ত করা হলো, এম্বুলেন্সসহ ১৯টি গাড়ি জ্বালিয়ে দেওয়া হলো, রোগীবাহী এম্বুলেন্সে হামলা চালানো হলো, জীবন্ত মানুষকে বাসের মধ্যে পুড়িয়ে হত্যা করা হলো, এ নিয়ে টিআইবি’র কি বিবৃতি, কি বক্তব্য?’
হাছান মাহমুদ বলেন, ‘কাউকে ঘুষি মারলে, ধাওয়া করলে টিআইবি বিবৃতি দেয় আর এতো চোরাগোপ্তা হামলা, অগ্নিসন্ত্রাস, মানুষ পুড়িয়ে হত্যা করা হচ্ছে সে নিয়ে আপনাদের জোরালো কোনো বক্তব্য দেখতে পাচ্ছি না। এভাবে টিআইবি আসলে নিজেদের গ্রহণযোগ্যতা হারিয়ে ফেলেছে। টিআইবি যদি মনে করে একটি দল অংশগ্রহণ না করলে সেটি অংশগ্রহণমূলক নয়, তাহলে সেটি টিআইবির চিন্তার বা বোঝার দৈন্য। আজকে দেশে যে উৎসাহ উদ্দীপনা তৈরি হয়েছে ইনশাআল্লাহ নির্বাচনে জনগণের ব্যাপক অংশগ্রহণ থাকবে। আর গণতন্ত্রে দল নয়, গণতন্ত্রে জনগণের অংশগ্রহণ হচ্ছে মুখ্য।’
সাংবাদিকরা এ সময় ‘পোষাক শ্রমিক নেতা কল্পনা আক্তার কার এজেন্ট’ প্রশ্ন করলে সম্প্রচারমন্ত্রী বলেন, ‘তিনি কার এজেন্ট আমি জানি না, আপনারা খুঁজে বের করুন। তবে এক বছরে যতোবার তিনি বিদেশ গেছেন এবং বিদেশ যাত্রায় ১৪-১৫ লক্ষ টাকা খরচ হয়েছে, তা থেকে প্রশ্ন আসে একজন শ্রমিক নেতার এতো টাকা কোথা থেকে আসে, এতোবার বিদেশ যাত্রারই বা কেন প্রয়োজন।’