‘উন্নয়ন অগ্রযাত্রায় দেড় দশক পেরিয়ে স্মার্ট বাংলাদেশের অভিমুখে’ এই শিরোনামকে সামনে রেখে ২০২৩-২৪ অর্থবছরের জন্য ৭ লাখ ৬১ হাজার ৭৮৫ কোটি টাকার জাতীয় বাজেট পেশ করছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। যা চলতি অর্থবছরের সংশোধিত বাজেটের চেয়ে ১ লাখ ১ হাজার ২৭৮ কোটি টাকা বেশি।
বৃহস্পতিবার (০১ জুন) জাতীয় সংসদে এই বাজেট উপস্থাপন করেন তিনি। এর আগে জাতীয় সংসদে স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপস্থিতিতে বাজেট প্রস্তাব উপস্থাপন করবেন অর্থমন্ত্রী ।
অর্থমন্ত্রী বলেন, বর্তমানে বিশ্বের ১৭৬টি দেশে মোট ১ কোটি ৪৯ লাখের অধিক কর্মী কর্মরত আছেন। আমাদের সরকার ক্ষমতা নেওয়ার পর বিগত এক যুগে পেশাজীবী, দক্ষ, আধা দক্ষ ও স্বল্প দক্ষ ক্যাটাগরিতে সর্বমোট ৮১ লাখ ৪৭ হাজার ৬৪২ জন কর্মীর বৈদেশিক কর্মসংস্থান নিশ্চিত হয়েছে। বিশেষ করে, নারী কর্মীদের প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ প্রদান, প্রশিক্ষণার্থী, নির্বাচন ও ওরিয়েন্টেশন কার্যক্রম জেলাপর্যায়ে সম্প্রসারণ ও বিকেন্দ্রীকরণের ফলে বিগত এক যুগে প্রায় ১০ লাখ নারী কর্মী বিদেশে কর্মসংস্থানের সুযোগ পেয়েছেন। আমরা নতুন নতুন শ্রমবাজার অনুসন্ধানের কাজ চালিয়ে যাচ্ছি। ইতোমধ্যে প্রধান গন্তব্যসমূহের বাইরে পোল্যান্ড, সেশেলস, আলবেনিয়া, রোমানিয়া, স্লোভেনিয়া, উজবেকিস্তান, বসনিয়া ও হার্জেগোভিনা এবং কম্বোডিয়ায়ও বাংলাদেশি কর্মী পাঠানো সম্ভব হয়েছে।
তিনি বলেন, দক্ষতার ঘাটতির কারণে বিদেশগামী কর্মীর সংখ্যানুপাতে রেমিট্যান্স আহরণের গতি ততটা সন্তোষজনক নয়। এ পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের জন্য কর্মীদের প্রাক-বহির্গমন অবহিতকরণসহ বিভিন্ন কারিগরি কোর্সে দক্ষতা উন্নয়ন প্রশিক্ষণ দিচ্ছি। টিটিসিগুলোতে জাপানি, ইংরেজি, কোরিয়ান, চাইনিজ ভাষা শিক্ষা কোর্স চালু করেছি। প্রশিক্ষণের গুণগতমান নিশ্চিতকরণ, দক্ষতার স্বীকৃতি, দক্ষ পেশায় কর্মসংস্থানের ব্যবস্থাকরণ, স্থানীয় প্রশিক্ষণ সনদের আন্তর্জাতিক সনদায়ন নিশ্চিতকরণ এবং বৈদেশিক কর্মসংস্থানের জন্য সংশ্লিষ্ট দেশের ভাষায় দক্ষতা অর্জনসহ নানাবিধ কার্যক্রম আমরা অব্যাহত রেখেছি। বিদেশগামী প্রত্যেক কর্মীকে মাইক্রোচিপস সম্বলিত স্মার্ট কার্ড/বহির্গমন ছাড়পত্র প্রদান করা হচ্ছে। ইতোমধ্যে সৌদি আরব ও সংযুক্ত আরব আমিরাতে অদক্ষ ও আধা-দক্ষ ক্যাটাগরিতে কর্মরত বাংলাদেশি কর্মীদের দক্ষতা উন্নয়নের মাধ্যমে দক্ষ পেশায় প্রবেশের জন্য প্রশিক্ষণ প্রদানের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
মন্ত্রী আরও জানান, নিরাপদ অভিবাসন ও প্রবাসীদের সার্বিক কল্যাণ নিশ্চিতকরণে নিরবচ্ছিন্নভাবে কাজ করা হচ্ছে। প্রবাসী ও প্রত্যাগত কর্মীদের জন্য বীমা, প্রবাসে মৃত্যুজনিত ক্ষতিপূরণ, তাদের মেধাবী সন্তানদের জন্য শিক্ষাবৃত্তি, অক্ষম প্রবাসী কর্মীদের চিকিৎসার্থে অর্থ সহায়তা এবং অনলাইন অভিযোগ প্রতিকার ব্যবস্থাসহ বহুবিধ কার্যক্রম চলমান রয়েছে। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশত বার্ষিকী উপলক্ষে প্রবাসী কর্মীদের ন্যূনতম খরচে বিদেশ গমন এবং প্রত্যাগমনকালে সাময়িকভাবে অবস্থানের জন্য নির্মিত ‘বঙ্গবন্ধু ওয়েজ আর্নার্স সেন্টার’ এর মাধ্যমে প্রবাসী কর্মীদের সেবা প্রদান করা হচ্ছে