এপ্রিল ২০, ২০২৪

বাংলাদেশে নিযুক্ত মালয়েশিয়ার রাষ্ট্রদূত হাজনাহ মো. হাশিম বলেছেন, বাংলাদেশ বিশ্বের অন্যতম আদর্শ বিনিয়োগ কেন্দ্র।

শনিবার (১৮ মার্চ) চট্টগ্রামে ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারের বঙ্গবন্ধু কনফারেন্স হলে অনুষ্ঠিত বাংলাদেশ-মালয়েশিয়া চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রির (বিএমসিসিআই) উদ্যোগে চট্টগ্রাম চেম্বারের সহযোগীতায় ক্যাটালাইজিং প্রাইভেট ইনভেস্টমেন্ট ফর ভিশন ২০৪১: অপরচুনিটিজ ফর প্রাইভেট সেক্টর ইন এ স্মার্ট বাংলাদেশ শীর্ষক বিএমসিসিআই পাওয়ারলাঞ্চ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

এসময় বিএমসিসিআই সভাপতি সৈয়দ আলমাস কবির, চিটাগাং চেম্বার সভাপতি মাহবুবুল আলম, চট্টগ্রাম চেম্বার সহ-সভাপতি সৈয়দ মোহাম্মদ তানভীর, চট্টগ্রাম চেম্বারের প্রাক্তন সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার আলী আহমেদ ও পরিচালক মাহফুজুল হক শাহ, বাংলাদেশ হাউস বিল্ডিং ফাইন্যান্স কর্পোরেশনের চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. মো. সেলিম উদ্দিন, পিএইচপি অটোমোবাইলসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আক্তার পারভেজ উপস্থিত ছিলেন।

অনুষ্ঠানে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন পলিসি এক্সচেঞ্জ বাংলাদেশের চেয়ারম্যান ড. এম মাসরুর রিয়াজ।

মালয়েশিয়ান রাষ্ট্রদূত তার বক্তব্যে বাংলাদেশ ও মালয়েশিয়ার মধ্যে বাণিজ্য ও অর্থনৈতিক সহযোগিতার ওপর আলোকপাতের পাশাপাশি বাংলাদেশের বর্তমান অর্থনৈতিক ও সামাজিক অবস্থান তুলে ধরেন। বিদেশী বিনিয়োগকারীদের জন্য বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক প্রদত্ত বিভিন্ন সুবিধার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, বাংলাদেশের সকল ক্ষেত্রেই ব্যবসার সুযোগ তৈরী করা সারা বিশ্বের সকল ব্যবসায়ীদের জন্য খুবই লাভজনক। তিনি বাংলাদেশ ও মালয়েশিয়ার মধ্যে দীর্ঘদিনের ব্যবসায়িক সম্পর্ক উন্নয়নে হাইকমিশনের পক্ষ থেকে সম্ভাব্য সব ধরনের সহযোগিতা ও সহায়তার আশ্বাস দেন।

মালয়েশিয়ান রাষ্ট্রদূত হাজনাহ মো: হাশিম বিশ্বাস করেন, দুটি ভ্রাতৃপ্রতিম দেশের মধ্যে স্বাধীনতার পর থেকেই ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক বিদ্যমান। উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে মালয়েশিয়া সবসময় বাংলাদেশের উন্নয়ন সহযোগী। বাংলাদেশ মালয়েশিয়ার দ্বিতীয় বৃহত্তম ব্যবসায়িক অংশীদার উল্লেখ করে ২০৪১ সালের মধ্যে স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে মালয়েশিয়া সরকার বাংলাদেশে বিনিয়োগ বৃদ্ধির মাধ্যমে সহযোগিতা করতে চায় বলে জানান।

পলিসি এক্সচেঞ্জ বাংলাদেশের চেয়ারম্যান এম. মাশরুর রিয়াজ অনুষ্ঠানের মূল বক্তব্য উপস্থাপন করতে গিয়ে অংশগ্রহণকারীদের সাথে বিগত ৫০ বছরে বাংলাদেশের অভাবনীয় উন্নয়নের গল্প তুলে ধরেন। তিনি বলেন, বাংলাদেশ তার উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা হিসেবে ২০৪১ সালের মধ্যে নিজেকে উন্নত দেশের কাতারে নিয়ে যাওয়ার জন্য নিরলস পরিশ্রম করে যাচ্ছে। লক্ষ্যমাত্রার দিকে ধাবিত হওয়ার জন্য যে সকল মাপকাঠি পূরণ করা দরকার তাতে বাংলাদেশ সফলতা দেখিয়েছে। তিনি বাংলাদেশে বিনিয়োগের ক্ষেত্র হিসেবে চিহ্নিত সম্ভাব্য খাতগুলো নিয়ে আলোচনা করেন এবং ভোক্তা হিসেবে বাংলাদেশের সক্ষমতা তুলে ধরেন। তিনি আরও যোগ করেন বাংলাদেশের বিপুল কর্মক্ষম তরুণ জনসংখ্যা বিদেশী বিনিয়োগ আকর্ষণের অন্যতম কেন্দ্রবিন্দু হয়ে ওঠার জন্য অবদান রেখেছে।

চট্টগ্রাম চেম্বার সভাপতি মাহবুবুল আলম বলেন, রূপকল্প ২০৪১ এর মূল উদ্দেশ্য হল বাংলাদেশের অর্থনীতিকে একটি স্বনির্ভর এবং টেকসই অর্থনীতিতে রূপান্তর করা যেখানে আমাদের জনগণের জন্য যথেষ্ট কর্মসংস্থানের সুযোগ থাকবে। এই লক্ষ্য অর্জনের জন্য বেসরকারি বিনিয়োগ বাড়ানোর বিকল্প নেই। চেম্বারের প্রাক্তন সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার আলী আহমেদ বলেন, মাতারবাড়ী গভীর সমুদ্র বন্দর হবে বাংলাদেশের গেইম চেঞ্জার। চেম্বারের প্রাক্তন পরিচালক মাহফুজুল হক শাহ বলেন, মালয়েশিয়ার বিনিয়োগকারীদের জন্য আলাদা ইকোনমিক জোন এবং চট্টগ্রাম থেকে সরাসরি মালয়েশিয়া ফ্লাইট চালু করার প্রস্তাব করেন।পিএইচপি অটোমোবাইলসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আক্তার পারভেজ বলেন, একটি ইন্ডাস্ট্রি করতে গেলে সবকিছুই এখন ঢাকা কেন্দ্রিক। চট্টগ্রাম-ঢাকা যাতায়াত করতে গেলে অনেক সময় নষ্ট হয়। তাই বিভিন্ন সরকারি দপ্তরের কার্যক্রম বিকেন্দ্রীকরণের মাধ্যমে ব্যবসা সহজীকরণ করা গেলে বিনিয়োগ উৎসাহিত হবে।

এই অনুষ্ঠানের সার্বিক সহযোগিতা ও পৃষ্ঠপোষকতার জন্য তিনি ওরিয়েন্টাল এজেন্ট লিমিটেডকে ধন্যবাদ জানিয়ে বিএমসিসিআই সভাপতি সৈয়দ আলমাস কবির বলেন, বিএমসিসিআই পাওয়ারলাঞ্চ বাংলাদেশের অর্থনৈতিক সম্ভাবনা ও উন্নয়ন বিশ্লেষণের উদ্দেশ্য নিয়ে শুরু হয়েছিল যা একই সাথে বর্তমান আর্থিক পরিস্থিতির উপর সামগ্রিক ইতিবাচক দিকনির্দেশনামূলক আলোচনা করছে। চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের এই সমসাময়িক ধারায় বাংলাদেশকে কীভাবে বিনিয়োগবান্ধব দেশ হিসেবে বিশ্বের কাছে তুলে ধরা যায় তাদের জন্য করণীয় নীতি নির্ধারণের ক্ষেত্রে ব্যবসায়ীক সম্প্রদায়ের মুখপত্র হিসেবে আমাদের চেম্বার কাজ করছে।

বিএমসিসিআই সভাপতি সৈয়দ আলমাস কবির আরো বলেন, বর্তমানে আমরা তৈরী পোশাক, শাকসবজি ও চামড়াজাত পণ্য মালয়েশিয়ায় রফতানি করি। রফতানি পণ্যের বহুমুখীকরণের উপর গুরুত্ব দিয়ে বিএমসিসিআই ও সিসিসিআই যৌথভাবে দুই দেশের মধ্যে ব্যবসা বৃদ্ধির চেষ্টা চালাচ্ছে। ডিজিটাল বাংলাদেশ এখন আমাদের সামনে বাস্তবতা তাই সরকার এখন তার পরবর্তী লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণ। স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তোলার জন্য দরকার স্মার্ট জনশক্তি এবং দাপ্তরিক কার্যক্রমের ক্ষেত্রে স্মার্টনেস।

শেয়ার দিয়ে সবাইকে দেখার সুযোগ করে দিন...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *