থিকশানার কুইকার বুঝতেই পারেননি তানজীদ হাসান তামিম। ফল, ষোলোতম বাংলাদেশি ক্রিকেটার হিসেবে অভিষেক ম্যাচেই শূন্যরান। প্রবল আলোচনায় থেকে, আশা দেখিয়ে জাতীয় দলে আসা তানজীদের এই আউট আরও একটি সমস্যা চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দেয়। সেটি হলো ওপেনিং জুটির ধারাবাহিক ব্যর্থতা।
এটিকে শুধু সমস্যা বললে ভুল হবে। প্রবল দুশ্চিন্তার বিষয়ও। স্বপ্নের বিশ্বকাপের আগে ধারবাহিকভাবে এশিয়া কাপেও ব্যর্থ বাংলাদেশের ওপেনিং জুটি। তানজীদের আউটের পর নাঈম শেখও বেশিক্ষণ থাকতে পারেননি। দারুণ কাভার ড্রাইভে সম্ভাবনা দেখালেও উইকেট বিলিয়ে ১৬ রানে ফেরেন সাজঘরে। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে শুরুতেই বাংলাদেশ চলে যায় ব্যাকফুটে।
ক্যান্ডির কালো আকাশের মতো বাংলাদেশ ডাগআউটে তৈরি হয় গুমোট পরিবেশ। হবেই না কেন। চলতি বছর নাঈম-তানজীদ জুটি বাংলাদেশের চতুর্থ ওপেনিং জুটি। এর আগে ১২ ম্যাচে দেখা গেছে তিনটি ভিন্ন ওপেনিং জুটি। তামিম-লিটন, তামিম-রনি ও লিটন-নাঈম। চলতি বছর ৪টি সিরিজসহ ১৩ ম্যাচে বাংলাদেশ একবার শুধু শতরান করতে পারে ওপেনিং জুটিতে।
আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে বৃষ্টি বিঘ্নিত সেই ম্যাচে তামিম-লিটন বাংলাদেশকে জিতিয়ে (১০২) মাঠ ছেড়েছিলেন। এ ছাড়া আর কোনো ম্যাচে কোনো ভিন্ন জুটি ফিফটির দেখাও পায়নি। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৪২ রানও তামিম-লিটনের। ৩০ রানের বেশি আসে মাত্র একবার। ৬ ম্যাচে শুরুর উইকেট পড়েছে ১০ রানের আগেই।
শুধু জুটির সমস্যা নয়, দুশ্চিন্তা বাড়াচ্ছে ওপেনারদের ফর্মও। চলতি বছর ১২ ম্যাচে ৩০.১ গড়ে সর্বোচ্চ ৩০১ রান করেন লিটন। তার মধ্যে ১ ম্যাচে তিনি চারে নেমে ৩৫ রান করেন। আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে অ্যাওয়ে সিরিজে সেই ম্যাচে অভিষেক হয় রনির। ৪ রানের বেশি করতে পারেননি এই ডানহাতি ব্যাটার।
পরের সিরিজে আফগানিস্তানের বিপক্ষে আবার তামিম-লিটনেই আস্থা রাখে টিম ম্যানেজম্যান্ট। কিন্তু প্রথম ম্যাচ পর তামিম অবসরের ঘোষণা দেওয়ায় শূন্যতা তৈরি হয় ওপেনিংয়ে। তামিম অবসর কাটিয়ে ফিরলেও ইনজুরির কারণে খেলায় ফেরেননি। সেই ম্যাচে দলে ফেরেন নাঈম। কিন্তু তিনিও আস্থার প্রতীক হয়ে উঠতে পারছেন না।
লিটনের পর দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রান আসে তামিমের ব্যাট থেকে। ১০ ম্যাচে তিনি ২৩৯ রান করেন। গড় ২৬.৯৫। নাঈম ৩ ম্যাচে ২৫ রান করেন। গড় ৮.৩৩। আর সবশেষ আজ তানজীদ ফেরেন রানের খাতা খোলার আগেই। ওপেনিং জুটি খুঁজে না পাওয়া, সঙ্গে ওপেনারদের রান খরা সব মিলিয়ে বিশ্বকাপ যতো ঘনিয়ে আসছে বাংলাদেশের দুশ্চিন্তা ততো বাড়াচ্ছে।
টস জিতে অধিনায়ক সাকিব আল হাসান বলেছিলেন, ‘শুকনা উইকেট। স্কোরবোর্ডে রান জমা করতে হবে।’ কিন্তু ওপেনিংয়ের ব্যর্থতায় শুরুতেই পথহারা বাংলাদেশ।