বাংলাদেশ সরকারের কাছ থেকে নেওয়া ঋণ পরিশোধে আগামী সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সময় পেল শ্রীলঙ্কা। চলতি বছরের মার্চের মধ্যে বাংলাদেশের ঋণ পরিশোধের কথা থাকলেও তা করতে ব্যর্থ হয় অর্থনৈতিক সংকটে জর্জরিত দ্বীপ রাষ্ট্রটি।
ওয়াশিংটন সময় বৃহস্পতিবার (১৩ এপ্রিল) বিশ্বব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে বাংলাদেশ অফিসে এ তথ্য জানান বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর মো. আব্দুর রউফ তালুকদার।
তিনি বলেন, ‘আজকে শ্রীলঙ্কার সেন্ট্রাল ব্যাংকের গভর্নরের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। দেশটির গভর্নর গত অক্টোবর আমার সঙ্গে দেখা করেছিল এবং তারা বলেছিল, ফেব্রুয়ারি মার্চের মধ্যে তাদের থেকে পাওনা টাকা তারা পরিশোধ করবে। কিন্তু তারা সেটি করতে পারেনি। তারা নতুন করে আমাদের কাছে সময় চেয়েছে এবং আমরা তাদের আগামী আগস্ট ও সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সময় দিয়েছি। আমাকে তারা কনফার্ম করেছে এই সময়ের মধ্যেই তারা আমাদের টাকা পরিশোধ করবে। আমরা তাদের সময় বাড়িয়ে দিয়েছি এবং এই অর্থের ইন্টারেস্টও পাব।
এক প্রশ্নে গভর্নর বলেন, ‘বিশ্বব্যাংক গ্রুপের প্রতিষ্ঠান ‘মাল্টিল্যাটারাল ইনভেস্টমেন্ট গ্যারান্টি এজেন্সি’র (মিগা) ১ বিলিয়ন ডলার ঋণের চিঠি আমরা গ্রহণ করিনি। সরকার কখনো এত শর্ট টাইমে লোন নেয় না। এই ঋণের মেয়াদ ছিল মাত্র এক বছর এবং সুদ ছিল ৯ শতাংশের উপরে। এত উচ্চসুদে আমরা কখনো ঋণ নেই না। আমরা বিশ্বব্যাংক, আইএমএফের কাছ থেকে যেসব ঋণ নেই, সে ঋণের সুদ ৩ শতাংশ। এত বেশি সুদের ঋণ নেওয়ার প্রশ্নই আসে না। এ জন্য মিগা'র প্রস্তাব আমরা প্রথমেই না করে দিয়েছি।’
এর আগে, গত অক্টোবরে শ্রীলঙ্কার কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর বলেন, চলতি বছরের মার্চের মধ্যে বাংলাদেশের কাছ থেকে ধার নেওয়া ২০ কোটি ডলারের পুরোটা পরিশোধ করবে শ্রীলঙ্কা।
ক্ষমতাসীনদের সীমাহীন দুর্নীতি, লুটপাট আর দীর্ঘমেয়াদি চিন্তা না করেই বড় বড় অবকাঠামো খাতে বিনিয়োগের সঙ্গে করোনার ধাক্কায় মুখ থুবড়ে পড়ে দ্বীপ রাষ্ট্র শ্রীলঙ্কার অর্থনীতি। তখন ২০২১ সালে চরম সংকটে থাকা শ্রীলঙ্কার পাশে দাঁড়ায় বাংলাদেশ। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের রিজার্ভ থেকে তিন দফায় ২০ কোটি ডলার ঋণ দেওয়া হয় শ্রীলঙ্কাকে। মুদ্রা বিনিময় নীতি মেনে ঋণ পরিশোধের সময়ও বেঁধে দেওয়া হয়। কিন্তু দেউলিয়া ঘোষণার পর শ্রীলঙ্কার কাছ থেকে ঋণের টাকা ফেরত পাওয়া নিয়ে দেখা দেয় অনিশ্চয়তা। তবে গত অক্টোবরে ওয়াশিংটনে বিশ্বব্যাংক গ্রুপের বার্ষিক সভায় যোগ দিতে এসে শ্রীলঙ্কার কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নরের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকের পর আশ্বাস মেলে ঋণের টাকা ফেরত পাওয়ার।