স্প্যানিশ ক্লাব রিয়াল মাদ্রিদ ও বার্সেলোনাসহ বিভিন্ন ক্লাবে অসংখ্য ব্রাজিল ফুটবলাররা খেলেছেন। মাঠের নৈপুণ্য ও অসাধারণ কারিকুরিই সে সময় খবরের পাতায় ওঠে আসত। তবে সেই ঐতিহ্য ছাপিয়ে সম্প্রতি নেতিবাচক খবরে কলুষিত হয়েছে স্পেনের ফুটবলাঙ্গন। রিয়াল মাদ্রিদের হয়ে খেলা ভিনিসিয়ুস জুনিয়র সদ্য সমাপ্ত মৌসুমে বারবারই বর্ণবাদী মন্তব্যের শিকার হয়েছেন। যার প্রতিবাদ হিসেবে দুটি আফ্রিকান দেশের সঙ্গে খেলবে ব্রাজিল। এবার সেই স্পেনে গিয়েও খেলার ঘোষণা দিয়েছে বিশ্বচ্যাম্পিয়নরা।
স্পেনের বিপক্ষে প্রায় ১১ বছর আগে মুখোমুখি লড়াইয়ে নেমেছিল ব্রাজিল। বৈশ্বিক সব প্রতিযোগিতায় কোনোভাবেই দেখা হচ্ছিল সাবেক দুই বিশ্বচ্যাম্পিয়নদের। সেলেসাও দেশটি বর্ণবাদবিরোধী প্রচারণার অংশ হিসেবে অনেকদিন ধরেই কর্মসূচি দিয়ে আসছিল। বিশেষত ব্রাজিল ফুটবল ফেডারেশনের (সিবিএফ) সভাপতি হওয়ার পর থেকে বেশ সক্রিয় এডনাল্ডো রদ্রিগেজ। ‘একই ত্বক, উভয় দেশ’ স্লোগান নিয়ে সেলেসাওরা স্পেনের সঙ্গে আগামী বছরের মার্চে প্রীতি ম্যাচ খেলবে।
দু’দেশের লড়াই হলেও, যুদ্ধটা মূলত বর্ণবাদের বিপক্ষে। এর আগে রদ্রিগেজের অধীনে বর্ণবাদবিরোধী কার্যক্রম শুরু করেছিল ব্রাজিলিয়ান ফুটবলের সর্বোচ্চ সংস্থা। সেটিকেই এবার তারা ‘বর্ণবাদ নিয়ে কোনো ম্যাচ নয়’ স্লোগান নিয়ে আরও প্রসারিত করতে চায়। রদ্রিগেজ চান বর্ণবাদসংক্রান্ত ফুটবলীয় আইনে যেন আরও পরিবর্তন আসে এবং ব্রাজিলের আদালত যেন স্টেডিয়ামে হওয়া বর্ণবাদী আচরণের আরও কঠোর শাস্তি দেন।
তারই ধারাবাহিকতায় ৫ বারের বিশ্বচ্যাম্পিয়নরা ১৭ জুন আফ্রিকান দেশ গিনির বিপক্ষে বার্সেলোনায় প্রথম ম্যাচ খেলবে। এরপর ২০ জুন তারা পর্তুগালের লিসবনে খেলবে সাদিও মানের সেনেগালের বিপক্ষে। তার আগে ম্যাচ দুটি আয়োজনের বিষয়ে ভিনিসিয়ুসের সম্মতি নেয় ব্রাজিল। তারই রেশ ধরে দেশটি এবার লা লিগার ম্যাচে ঘটা সেই বর্ণবাদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদস্বরূপ স্পেনের মাটিতে খেলার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
দুই দেশের ফুটবল ফেডারেশনের বিবৃতিতে বলা হয়, এই ম্যাচটির উদ্দেশ্য ‘ফুটবলে সংঘাতের বিরুদ্ধে উভয় দেশের অঙ্গীকারকে আরও বেগবান করা এবং দুই দেশের মধ্যে বিদ্যমান ভালো সম্পর্ককে আরও উষ্ণ করা।’
বর্ণবাদের বিরুদ্ধে চলমান লড়াইয়ে এই ম্যাচকে গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ মনে করছেন সিবিএফ সভাপতি রদ্রিগেজ, ‘আমার বন্ধু লুইস রুবিয়ালেসের (স্পেন ফুটবল ফেডারেশনের সভাপতি লুইস রুবিয়ালেস) সহযোগিতায় এই উদ্যোগ পৃথিবীর নানা প্রান্তে সব ধরনের বর্ণবাদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের প্রয়োজনীয়তাকেই আরও তীব্র করে তুলতে দারুণ কার্যকর ভূমিকা রাখবে।’
এর আগে সবশেষ ২০১৩ সালের জুনে কনফেডারেশন্স কাপের ফাইনালে মুখোমুখি হয়েছিল দল দুটি। রিও ডি জেনেরিও’র সেই ম্যাচে স্পেনকে ৩-০ গোলে উড়িয়ে দিয়েছিল ব্রাজিল। এখন পর্যন্ত দু’দলের ৯ লড়াইয়ে ব্রাজিল জিতেছে ৫টিতে। স্পেনের জয় দুটি, বাকি দুই ম্যাচ ড্র হয়েছে।