লোহিত সাগরে বাণিজ্যিক জাহাজ লক্ষ্য ফের ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়েছে ইরান সমর্থিত ইয়েমেনের হুতি বিদ্রোহীরা। মার্কিন সামরিক বাহিনী জানিয়েছে, মঙ্গলবার গভীর রাতে লোহিত সাগরে বাণিজ্যিক জাহাজ লক্ষ্য করে দুটি জাহাজ বিধ্বংসী ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়েছে হুতি বিদ্রোহীরা।
টাইমস অব ইসরায়েলের খবরে বলা হয়েছে, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্স-এ এক পোস্টে মার্কিন সেন্ট্রাল কমান্ড জানিয়েছে, মঙ্গলবার ইয়েমেনের স্থানীয় সময় রাত সাড়ে ৯টার দিকে এ হামলা হয়।
ব্রিটেনের মেরিটাইম ট্রেড অপারেশন্স কর্তৃপক্ষ প্রাথমিকভাবে ইরিত্রিয়া এবং ইয়েমেনের উপকূলের মধ্যে একটি পণ্যবাহী জাহাজের কাছে বিস্ফোরণের খবর দিয়েছে। ব্রিটিশ মেরিটাইম সিকিউরিটি ফার্ম একটি সংক্ষিপ্ত বার্তায় জানিয়েছে, জাহাজটির কোনো ক্ষতি হয়নি এবং ক্রুরা বর্তমানে নিরাপদে রয়েছেন।
একই তথ্য জানিয়ে মার্কিন সেন্ট্রাল কমান্ড (সেন্টকম) বলেছে, হুতিরা জাহাজ বিধ্বংসী ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়লেও তাতে কোনো ক্ষয়ক্ষতি হয়নি। ওই এলাকায় বেশ কয়েকটি জাহাজ আশপাশের পানিতে ক্ষেপণাস্ত্র আঘাত হেনেছে বলে জানিয়েছে।
এক্স পোস্টে মার্কিন কেন্দ্রীয় কমান্ড লিখেছে, এ নিয়ে গত ১৯ নভেম্বর থেকে এখন পর্যন্ত ২৪ বার লোহিত সাগরে চলমান জাহাজ লক্ষ্য করে হামলার ঘটনা ঘটেছে। এসব বেআইনি হামলা বহু নাবিকের জীবন ঝুঁকির মধ্যে ফেলছে। এছাড়াও এ হামলার কারণে আন্তর্জাতিক বাণিজ্য বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।
জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ আজ বুধবার আন্তর্জাতিক শান্তি ও নিরাপত্তা বজায় রাখার বিষয়ে একটি বৈঠক করতে চলেছে। ফরাসি কূটনীতিকরা জানিয়েছেন, নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠকে লোহিত সাগরে হুতি হামলার ইস্যুটি সমাধান করা হবে।
হুতি বাহিনী নভেম্বর থেকে লোহিত সাগরে জাহাজগুলোতে হামলা চালাচ্ছে। এই পথ দিয়ে যাওয়া বাণিজ্যিক জাহাজ লক্ষ্য করে তারা এ পর্যন্ত শতাধিক ড্রোন এবং ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে।
হুতিদের দাবি, গাজায় ইসরায়েলি হামলার প্রতিক্রিয়ায় ফিলিস্তিনিদের প্রতি সমর্থন জানিয়ে তারা এ হামলা চালাচ্ছে।
হুতিদের হামলার পরিপ্রেক্ষিতে লোহিত সাগরে জাহাজ চলাচলের সুরক্ষায় গত মাসে একটি বহুজাতিক নৌ টাস্কফোর্স গঠন করেছে যুক্তরাষ্ট্র।
গত রোববার (৩১ ডিসেম্বর) হুতি বিদ্রোহীরা সিঙ্গাপুরের একটি জাহাজে হামলা চালাতে গেলে তাদের ওপর পাল্টা হামলা চালায় মার্কিন নৌবাহিনী। এতে অন্তত ১০ হুতি যোদ্ধা নিহত হয়েছেন। সেই সঙ্গে বিদ্রোহী গোষ্ঠীটির তিনটি নৌকা সাগরে ডুবে গেছে। বিষয়টি নিশ্চিত করে এর প্রতিশোধের ঘোষণা দেয় হুতি যোদ্ধারা।