ভারতে বিজেপিশাসিত মণিপুরে ফের সহিংসতা হয়েছে। এবার কাকচিং জেলার সেরাউতে অজ্ঞাত মানুষজন কমপক্ষে ১০০টি পরিত্যক্ত বাড়িতে আগুন দিয়েছে। এর মধ্যে কংগ্রেস বিধায়ক কে রঞ্জিত সিংয়ের বাড়িও রয়েছে।
রাজ্যটিতে মেইতেই ও কুকি সম্প্রদায়ের মানুষের মধ্যে ৩ মে থেকে রাজ্যে সংঘর্ষ চলছে। কারফিউ এবং অন্যান্য নিষেধাজ্ঞার পর কয়েকদিন পরিস্থিতি শান্ত থাকলেও ফের সেখানে অশান্তি সৃষ্টি হয়েছে। সর্বশেষ ঘটনায় কারা জড়িত সেই বিষয়ে তথ্য পাওয়া যায়নি।
কর্মকর্তাদের মতে, কিছু লোক সেরাউ বিধায়ক রঞ্জিতের বাড়িতে ভাঙচুর শুরু করে। হিংস্র জনতা বহু বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয়। ইম্ফলের পুলিশ কর্মকর্তারা বলেন, সন্দেহভাজন সশস্ত্র কুকি জঙ্গিরা কাকচিং জেলার সেরাউতে কংগ্রেস বিধায়ক রঞ্জিতের বাসভবনে আগুন দেয়।
গত সোমবার ৪ দিনের জন্য গোলযোগপূর্ণ মণিপুর সফরে এসেছিলেন ভারতের কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। রাজধানী ইম্ফলে একটি সংবাদ সম্মেলনে সমস্ত মণিপুরবাসীকে শান্তি ফেরানোর আবেদন রেখেছিলেন অমিত শাহ। এর পাশাপাশি তিনি অস্ত্র সমর্পণেরও আহ্বান জানিয়েছিলেন।
প্রসঙ্গত, গোয়েন্দা সূত্রকে উদ্ধৃত করে গণমাধ্যমে প্রকাশ, রাজ্যটিতে সহিংসতা চলাকালীন শুধুমাত্র মণিপুরে বিভিন্ন বাহিনীর প্রায় ৪ হাজারঅস্ত্র লুট হয়েছে।
অমিত শাহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এক আবেদনে বলেন, ‘মণিপুরবাসীর কাছে আমার একান্ত অনুরোধ, দয়া করে ইম্ফল-ডিমাপুর, ২ নম্বর জাতীয় সড়ক থেকে অবরোধ তুলে নিন। যাতে খাদ্য, ওষুধ, পেট্রল, ডিজেলের মতো জরুরি জিনিসপত্র মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়া যায়। একমাত্র আমরাই একসঙ্গে এই অনন্যসুন্দর রাজ্যে স্বাভাবিকতা ফিরিয়ে আনতে পারব’।
প্রসঙ্গত, মণিপুরে শিক্ষা ও চাকরিতে সংরক্ষণ ও অন্যান্য সুবিধার জন্য ‘মেইতেই’ সম্প্রদায়কে ‘তপশিলি উপজাতি’ মর্যাদা দেওয়ার প্রচেষ্টা হলে গত ৩ মে থেকে ‘কুকি’ ও ‘মেইতেই’ সম্প্রদায়ের মানুষের মধ্যে সহিংসতা শুরু হয়। এরফলে সেখানে প্রায় ১০০ জন নিহত হয়েছে। এ ছাড়া বহু বাড়িঘরে আগুন দিয়েছে অজ্ঞাত দুর্বৃত্তরা। কমপক্ষে ৪০ হাজারের বেশি বাড়িঘর ছেড়ে মানুষ অন্যত্র পালিয়ে গেছে। বিভিন্ন আশ্রয় শিবিরেও আছেন বহু মানুষ। বিরোধীরা ওই ইস্যুতে কেন্দ্রীয় বিজেপি সরকারের তীব্র সমালোচনা করেছে। পার্সটুডে