মার্চ ২৮, ২০২৪

পুঁজিবাজারে এক হাতের টাকা অন্য হাতে যায়। আর বিনিয়োগকারীদের থেকে টাকা হাতিয়ে নিতে ট্র্যাপ (ফাঁদ) তৈরি করে গুজব ছড়ানো হয়। তাই গুজবে কান দেওয়া যাবে না জানিয়েছেন নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম।

শনিবারে (২১ জানুয়ারি) সিলেটের একটি কনভেনশন সেন্টারে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি), বাংলাদেশ একাডেমি ফর ক্যাপিটাল মার্কেটস (বিএএসএম) এবং ক্যাপিটাল মার্কেট স্ট্যাবিলাইজেশন ফান্ডের (সিএমএসএফ) যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত ‘বিনিয়োগ শিক্ষা কনফারেন্স’ শীর্ষক এক অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

বিএসইসি চেয়ারম্যান বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংক এবং এনবিআরের সঙ্গে সমন্বয় করে আমরা সকল সমস্যার সমাধান করছি। তাই এই সংক্রান্ত যে সমস্যাগুলো ছিলো তা দ্রুতই সমাধান হয়ে যাবে। বৈশ্বিক অর্থনীতির চাপের কারণে দেশের এক্সচেঞ্জ রেট কিছুটা বেড়েছে। দুই-এক মাসের মাঝেই আশা করা যায় কারেন্ট ব্যালেন্স লেভেলে আসবে।

শিবলী রুবাইয়াত বলেন, বর্তমান সময়ের মূল উদ্দেশ্য হলো কর্মসংস্থান। তাই সব সময় বলি দীর্ঘমেয়াদি অর্থায়নের একমাত্র উৎস পুঁজিবাজার। তেলসহ সকল আমদানি পণ্যের দাম বেড়েছে। এরপরেও দ্বিতীয় বৃহত্তর পোশাক রপ্তানিকারক দেশ বাংলাদেশ। সিলেট বিভাগ স্বাধীনতার পরবর্তী সময় থেকেই বাংলাদেশের অগ্রগতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা বা অবদান রেখেছে।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশ সরকারের প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী ইমরান আহমদ বলেন, বিনিয়োগে সিলেট অনেক পিছিয়ে। বিনিয়োগ করার জন্য যে উপদেশ বা শিক্ষা দরকার তা এ অঞ্চলের মানুষ পায়নি। বিনিয়োগ আমাদের আমানত, বিনিয়োগ করে তাই অবশ্যই সবাই রিটার্নের আশা করে। জেনে-বুঝে বিনিয়োগ করলে ঝুঁকি কমবে। এই বিনিয়োগ শিক্ষা কার্যক্রম আরও বড় আকারে করতে পারলে অনেক সমস্যার সমাধান হবে। শেখ হাসিনা সরকার ব্যবসাবান্ধব। বর্তমানে রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাব বাংলাদেশে পড়েছে। এর ফলে বিভিন্ন খাতে সরকারকে ভর্তুকি দিতে হচ্ছে।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে ক্যাপিটাল মার্কেট স্ট্যাবিলাইজেশন ফান্ড (সিএমএসএফ) এর চেয়ারম্যান ও প্রধানমন্ত্রীর সাবেক মুখ্য সচিব মো. নজিবুর রহমান বলেন, পুঁজিবাজার ঝুঁকিপূর্ণ জায়গা। এরকম বিনিয়োগ শিক্ষা কার্যক্রম বিনিয়োগকারীদের মাঝে সচেতনতা বাড়াবে। সাধারণ বিনিয়োগকারীদের সুরক্ষা দিতে সাধারণ বীমা কর্পোরেশনে আলোচনা হয়েছে। বর্তমান কমিশন গতিশীল নেতৃত্বে বাজার নিয়ে কাজ করে যাচ্ছে। এই ধরণের শিক্ষা কার্যক্রমে আমাদের অন্তর্ভুক্ত করার জন্য বিএসইসিকে ধন্যবাদ জানাই।

শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদ বলেন, হঠাৎ করে একটা শেয়ারের দাম বেড়ে গেছে আর আমরা ঝাঁপিয়ে পরলাম বিনিয়োগ করতে, এভাবে করলে কিন্তু হবে না। এভাবে ঝুঁকি অনেক বেড়ে যায়। তাই জেনে বুঝে, কোম্পানির প্রোফাইল দেখে আমদেরকে বিনিয়োগ করতে হবে। বিনিয়োগকারীদের আরও অভিজ্ঞ করে গড়ে তোলার জন্য এই বিনিয়োগ শিক্ষা কার্যক্রম খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এরকম কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়ার জন্য বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনকে ধন্যবাদ।

দি সিলেট চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি তাহমিন আহমদ বলেন, আমরা সিলেটবাসীরা বিনিয়োগ করতে পছন্দ করি। এই আয়োজনের পর সিলেটের মানুষ পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ করতে আরও আগ্রহী হবে। বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনসহ মেলায় আগত পুঁজিবাজারের সাথে সম্পৃক্ত সকল প্রতিষ্ঠানকে নিয়মিত এসব আয়োজন করার আহ্বান জানান তিনি।

এ ছাড়াও অনুষ্ঠানের স্বাগত বক্তব্যে বিএসইসি কমিশনার ড. শেখ শামসুদ্দিন আহমেদ বলেন, বিনিয়োগ বৃদ্ধি না পেলে উন্নয়ন অগ্রযাত্রা বাধাগ্রস্ত হবে। পুঁজিবাজার এক্ষেত্রে ভূমিকা রাখতে পারে। পুঁজিবাজারে বিভিন্ন ধরণের প্রোডাক্ট রয়েছে। তাই বিনিয়োগকারীদের বুঝে-শুনে সচেতনতার সঙ্গে বিনিয়োগ করতে হবে।

শেয়ার দিয়ে সবাইকে দেখার সুযোগ করে দিন...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *