বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম বলেন, আমরা খুব শিগগিরই পুঁজিবাজারের একটা শক্ত অবস্থান দেখতে পেলেই ফ্লোর প্রাইস উঠিয়ে দিব। যখনই আমরা দেখবো বিনিয়োগকারীরা নিরাপদ, তাদের পুঁজি নিরাপদে আছে, তখনই আমরা ফ্লোর প্রাইস সরিয়ে দেব। আমরাও অধীর আগ্রহে আছি, কখন এই ফ্লোর প্রাইস তুলে দিতে পারবো৷
মঙ্গলবার (১১ জুলাই) ইকনোমিক রিপোর্টার্স ফোরাম (ইআরএফ) আয়োজিত বাংলাদেশের পুঁজিবাজারের জন্য অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জ: সম্ভাব্য প্রতিকার শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
বিএসইসি চেয়ারম্যান বলেন, আমাদের কমিশনের বয়স প্রায় তিন বছর ২ মাস। আমরা যেদিন দায়িত্ব নিয়েছিলাম সেদিন বাংলাদেশের সব মানুষ ঘরে থাকতো। সেসময় কোন ইকোনমিক একটিভিটি ছিলো না। কিন্তু ইউক্রেন যুদ্ধ যে হঠাৎ শুরু হবে তাও আমরা বুঝতে পারিনি। এটা আমাদের অনাকাঙ্ক্ষিত বিপদ। এর ফলে শুরুতেই এটা বোঝা যাচ্ছিলো খাদ্যশস্যেরএকটা ক্রাইসিস শুরু হবে কারণ, মধ্য এশিয়া আর ইউরোপের এই অঞ্চলটা খাদ্যশস্যের ভাণ্ডার। যার ফলে নিম্ম ও মধ্য আয় দেশগুলোর বিপদ শুরু হয়। রাশিয়া জ্বালানি সরবরাহ করে থাকে। তাদের উপর নিষেধাজ্ঞার কারণে চাপ পরলো জ্বালানি খাতের উপর। যার ফলে এলএনজিসহ সকল জ্বালানির দাম বাড়লো। আর এর প্রভাব পরলো শিল্প কারখানাসহ বিভিন্ন সেক্টরের উপর।
শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম বলেন, আমাদের পুঁজিবাজারে এতোগুলো চাপ, যেখানে ঠোঁটের নড়াচড়ার প্রভাবে মার্কেটের সূচক ওঠা-নামা করে। অন্যদিকে আমরা দেখতে পাচ্ছিলাম রিজার্ভের সাথে সাপ্লাই ভোলাটিলিটি কমতে শুরু করেছে। সাথে ক্যাপিটাল মার্কেটের ইনডেক্সও। আর তাই বিনিয়োগকারীদের নিরাপত্তার স্বার্থে ফ্লোর প্রাইস আরোপ করা হয়। আমরা তখন নিজেদের অনিচ্ছাতেই ফ্লোর প্রাইস দিয়েছিলাম।
বিএসইসির চেয়ারম্যান আরো বলেন, পুঁজিবাজার ভালো থাকলে মুনাফার হার কম থাকে। পুঁজিবাজার উঠা নামা করবে এটাই স্বাভাবিক। এটি হলে মুনাফা করা যায়। আমাদের অনেক বিনিয়োগকারী হুজুগে ও গুজবে বিনিয়োগ করে। লাভ হলে কোন সমস্যা নেই। লোকসান করলেই আমাদের দোষ। পুঁজিবাজার সম্পর্কে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীরাও আগ্রহী ছিলো না। কিন্তু সময় পরিবর্তন হয়েছে। তারা এখন পুঁজিবাজারে ইন্টার্ন করার জন্য আসছে।
ইআরএফ’র সভাপতি মোহাম্মদ রাফায়েত উল্লাহ মৃধার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ক্যাপিটাল মার্কেট স্ট্যাবিলাইজেশন ফান্ডের (সিএমএসএফ) চেয়ারম্যান মো. নজিবুর রহমান, ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) চেয়ারম্যান ড. হাফিজ মোহাম্মদ হাসান বাবু, চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) চেয়ারম্যান আসিফ ইব্রাহিম, এনআরবি কমার্শিয়াল ব্যাংকের চেয়ারম্যান এসএস পারভেজ তমাল, অ্যাসোসিয়েশন অফ অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট কোম্পানিজ অ্যান্ড মিউচুয়াল ফান্ডের (এএএমসিএমএফ) চেয়ারম্যান হাসান ইমাম, পিএইচডি। এ ছাড়া অনুষ্ঠানে মূল-প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ইআরএফ সদস্য মোহাম্মদ মোফাজ্জল হোসেন।