পাবনার চাটমোহরে মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)–কে নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে কটূক্তি করার অভিযোগে প্রশান্ত কুমার সাহা (২৫) নামের এক তরুণকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গতকাল সোমবার দিবাগত রাতে জেলা শহরের বাস টার্মিনাল এলাকা থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়।
প্রশান্ত কুমার চাটমোহর উপজেলার হান্ডিয়াল ইউনিয়নের একটি গ্রামের বাসিন্দা। আল-আমিন হোসেন নামের স্থানীয় এক বাসিন্দার করা মামলায় আজ মঙ্গলবার তাঁকে গ্রেপ্তার করে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতের অভিযোগে এনে দণ্ডবিধির ২৯৫, ,২৯৫ (ক) ও ১৫৩ ধারায় মামলাটি করা হয়।
চাটমোহর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনজুরুল আলম বলেন, মামলা দায়েরের পর প্রশান্তকে গ্রেপ্তার করতে মাঠে নামে পুলিশ। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জেলা সদরের কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল এলাকা থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়। আজ দুপুরে তাঁকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। ওসি বলেন, বর্তমানে এলাকার পরিস্থিতি শান্ত আছে। বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।
মামলার এজাহার ও স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গত শনিবার রাতে নিজের ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দেন প্রশান্ত কুমার। বিষয়টি জানাজানির পর এলাকাবাসী প্রতিবাদ জানিয়ে পরদিন রোববার রাতে মিছিল করেন। এ সময় বল্লভপুর এলাকার সর্বজনীন মহাদেব মন্দিরে হামলার ঘটনা ঘটে। এ নিয়ে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়লে সেনাবাহিনী, র্যাব ও পুলিশ সদস্যরা এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। এ সময় হামলায় জড়িত থাকার অভিযোগে তিনজনকে আটক করে পুলিশ ফাঁড়িতে নিয়ে আসে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। এতে বিক্ষুব্ধ জনতা ক্ষিপ্ত হয়ে আটক ব্যক্তিদের ছাড়াতে ফাঁড়ি ঘেরাও করে বিক্ষোভ করেন। একপর্যায়ে তিনজনকে ছেড়ে দিলে বিক্ষোভকারীরা চলে যান।
চাটমোহর উপজেলা পূজা উদ্যাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক প্রবীর কুমার দত্ত বলেন, একটি ফেসবুক পোস্ট থেকেই ঘটনার সূত্রপাত। যে ছেলেটি পোস্ট দিয়েছেন, তিনি এলাকায় থাকেন না। ঢাকা থেকে পোস্টটি দিয়েছিলেন বলে শুনেছেন। পরে স্থানীয় লোকজন বিষয়টি নিয়ে উত্তেজিত হন। তাঁরা মিছিল–সমাবেশ করে মন্দিরে হামলা করেন। কিছু প্রতিমা ভাঙচুরের ঘটনাও ঘটে। পরে সেনাবাহিনী ও পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। তিনি বলেন, স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিরা বসে বিষয়টির সমাধান করেছেন। পোস্ট দেওয়া ছেলেটিও গ্রেপ্তার হয়েছে। এখন পরিবেশ অনেকটাই শান্ত। মন্দির ভাঙচুরের ঘটনায় একটি মামলা করার সিদ্ধান্ত হয়েছে।
চাটমোহর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনজুরুল আলম জানান, মন্দিরে হামলা ও ভাঙচুরের অভিযোগে আজ মঙ্গলবার বিকেলে মন্দিরের সেবায়েত বাসুদেব গোস্বামী বাদী হয়ে একটি মামলা করেছেন। এতে অজ্ঞাতনামা ২০০–২৫০ জনকে আসামি করা হয়েছে।