নির্বাচনের গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে পশ্চিমা দেশগুলো নয় বরং দেশের জনগণ নির্বাচনকে সমর্থন দিল কি না সেটিই বড় বিষয় বলে মনে করছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন।
রবিবার রাজধানীর একটি হোটেলে কিছু বিদেশি পর্যবেক্ষকদের সঙ্গে আলোচনা শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ কথা বলেন। পশ্চিমা দেশগুলো বাংলাদেশের নির্বাচন কীভাবে নেবে, পররাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে এমন প্রশ্ন রাখেন সাংবাদিকরা। জবাবে তিনি বলেন, পশ্চিমা দেশ নিয়ে আপনি (প্রশ্ন করা সাংবাদিককে) এত চিন্তিত কেন? আপনার নিজের প্রতি বিশ্বাস নেই! জনগণ সরকারকে ভোট দিয়েছে এটাই তো সবচেয়ে বড়। আমরা তো জনগণে বিশ্বাস করি। আমরা কোনো পশ্চিমার ওপর বিশ্বাস।
তিনি আরও বলেন, আমরা যখন একাত্তর সালে স্বাধীনতা পেয়েছিলাম, পশ্চিমা বিশ্ব আমাদের সমর্থন কি দিয়েছিল? একমাত্র ইংল্যান্ড ছাড়া পশ্চিমা কোনো দেশ সমর্থন দেয়নি। কিন্তু আমরা তো অর্জন (স্বাধীনতা) করেছি। দেশের জনগণ সমর্থ দিল কি না, এটাই বড় বিষয়। বিদেশি কে কী বলল সেটি নিয়ে আমি আগ্রহী নই, দেশের কে কী বলেছে সেটিতে আমি বিশ্বাসী।
প্রতিকূল পরিবেশের মধ্যে ভোট দেওয়ায় জনগণের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান ড. মোমেন। বলেন, বিএনপি অমুক করবে, তমুক করবে... একদিন আগে ট্রেন জ্বালিয়ে দিল। চারজন লোককে মারল। একটা আতঙ্ক ছিল। কিন্তু লোক তো ঠিকই ভোট দিয়েছে। এই প্রতিকূল পরিবেশে ভোট দিয়েছে, সমর্থন দিয়েছে।
নির্বাচনে কোথাও কারচুপি হয়নি জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, নির্বাচনে কোথাও কোনো কারচুপি হয়নি। কোথাও নকল ভোট হয়নি। নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য হয়েছে। নির্বাচন কমিশন যথেষ্ঠ পদক্ষেপ নিয়েছে। কেউ বলতে পারবে না যে, আগে ভোট হয়ে গেছে। এ ব্যাপারে এক পয়সারও ছাড় দেয়নি নির্বাচন কমিশন।’
‘তবে ভোটদানের প্রসেস স্লো ছিল। আমি দেখেছি, প্রধানমন্ত্রীর ভোট দিতেও তিন মিনিট লেগেছে। আমার যারা ভোটার, তাদের বেশিরভাগের ভোট দিতে প্রায় আধঘণ্টা সময় লেগেছে। আবার সার্ভার ডাউন হয়ে গেছে।
বিদেশি পর্যবেক্ষকদের ভোট পর্যবেক্ষণ প্রসঙ্গে ড. মোমেন বলেন, ‘আমেরিকার লোকজন একটা সেন্টারে গেছে সকাল ছয়টায়। তখন তো কোনো লোকজন ছিল না। আমি শুনেছি তারা এত সকালে গেছে কারণ... কেউ রাতের অন্ধকারে স্ট্যাম্পিং করে ব্যালট বাক্স ভরে রেখেছে কি না...। আপনি এটাও বিশ্বাস করতে পারেন... খুব আশ্চর্যজনক!’
বিদেশি পর্যবেক্ষকদের সঙ্গে বিএনপি প্রসঙ্গে আলোচনা হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘অপজিশন পার্টির সঙ্গে যে তিক্ততা সৃষ্টি হয়েছে, ভবিষ্যতে আমরা তিক্ততা কমানোর বিষয়ে কী মনে করছি সেটি তারা জানতে চেয়েছে। অন্যথায় তারা কোনো মন্তব্য করেনি। বিরোধীদের সঙ্গে তিক্ততা কমানো নিয়ে যদি ইস্যু থাকতৃ কারণ বিএনপি তো কোনো দাবি নিয়ে আসেনি; যে ইস্যুর ওপর আমরা আলোচনা করতে পারি।’
‘তাদের একটি দাবি হলো, প্রধানমন্ত্রীকে অবশ্যই পদত্যাগ করতে হবে। দুনিয়ায় এ ধরনের কোনো পদ্ধতি আছে? এগুলো হলো ইচ্ছে করে বলা যেন কোনো ধরনের আলাপ-আলোচনার সুযোগ না থাকে। আমেরিকায় বাইডেন সাহেব রিজাইন করবে, তারপর নির্বাচন হবে! এমন দাবিতে উনি কি রিজাইন করবে?’ বিরোধী দল কে হবে জানতে চাইলে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘দেখি কারা জিতে আসে। আগেভাগে বলবেন কেন? আমরা এখনো ফলাফল পাইনি। নতুন এমপিদের শপথগ্রহণ কবে হতে পারে এ প্রশ্নে মোমেন বলেন, ‘আমার কোনো আইডিয়া নেই। সংবিধানের অধীনে কী হয় না হয় সেটি আমি জানি না।’