ঝিনাইদহ-৪ আসনের সরকার দলীয় সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজিম আনারকে পশ্চিমবঙ্গের বিধাননগরের নিউটাউনের যেখানে হত্যা করা হয়েছে সেখানে কোনো লাশের সন্ধান পাওয়া যায়নি। টুকরো টুকরো লাশের সন্ধান করছে ভারতের পুলিশ।
গত ১২ মে ভারতে চিকিৎসা করাতে এসেছিলেন আনোয়ারুল। প্রথমে উঠেছিলেন বরাহনগরে তাঁরই এক বন্ধু গোপাল বিশ্বাসের বাড়িতে। দিন দুয়েক সেখানে থাকার পর এক দিন বাড়ি থেকে বেরোন আনোয়ারুল। তার পর থেকেই আর তাঁর খোঁজ মিলছিল না। আনোয়ারুলের পরিবারও তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করতে না পেরে অগত্যা গোপালের সঙ্গে যোগাযোগ করে। গোপাল তাঁদের জানান, তিনিও আনোয়ারুলের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারছেন না।
এদিকে এই ঘটনার তদন্তভার নেয় ভারতের সিআইডি। তার পরেই নিউটাউনের অভিজাত আবাসন দেখতে যান পশ্চিমবঙ্গ সিআইডির আইজি অখিলেশ চতুর্বেদী।
অখিলেশ জানিয়েছেন, খোঁজ না পেয়ে গোপাল থানায় একটি নিখোঁজ ডায়েরি করেন। সেই অভিযোগের তদন্ত করতে একটি দল গঠন করে ব্যারাকপুর পুলিশ কমিশনারেট। সেই তদন্ত চলছিল। তার মধ্যে ২২ মে আমরা জানতে পারি, তাঁকে খুন করা হয়েছে। শেষ বার যেখানে তাঁকে দেখা গিয়েছিল, সেই জায়গাটি খুঁজে বার করে স্থানীয় থানা। এর পরে সিআইডিকে তদন্তের ভার দেওয়া হয়।
সিআইডি সূত্রে খবর, নিউটাউনের যে আবাসনে আনোয়ারুল ছিলেন বলে মনে করা হচ্ছে, সেই ফ্ল্যাটটির মালিক সরকারি কর্মচারী জনৈক সন্দীপ। তিনি আবার আখতারুজ্জামান নামে এক ব্যক্তিকে ফ্ল্যাটটি ভাড়া দেন। সিআইডির আইজি জানিয়েছেন, আখতারুজ্জামান আমেরিকার নাগরিক। কিন্তু আখতারুজ্জামানের নামে ভাড়া নেওয়া ফ্ল্যাটে কী করে বাংলাদেশের সংসদ সদস্য (আনোয়ারুল) থাকলেন, তা এখনও স্পষ্ট নয়। এ বিষয়ে অখিলেশকে প্রশ্ন করা হলেও তিনি জবাব দেননি। খবর- আনন্দবাজারের
এই আবাসনের সিসিটিভি ফুটেজে দেখা গেছে, আনোয়ারুলের সঙ্গে কয়েকজন ওই আবাসনে ঢুকছেন। পরে তারা সেই আবাসন থেকে চলে যায়। কিন্তু আনোয়ারুল যাননি।
আনোয়ারুল যে নিউটাউনের ফ্ল্যাটে আছেন, তা জানা গেল কী ভাবে? অখিলেশ বলেন, ‘১৮ তারিখে একটি নিখোঁজ অভিযোগ দায়ের হয়েছিল। তার পর ব্যারাকপুর পুলিশ কমিশনারেট একটি এসআইটি গঠন করে। সেই তদন্ত করতে গিয়েই আমরা খবর পাই।’ নিউটাউনের আবাসনের ফ্ল্যাটে রক্তের দাগ পাওয়া গিয়েছে বলে পুলিশ সূত্রে খবর। ইতিমধ্যেই সেখানে পৌঁছে নমুনা সংগ্রহের কাজ করেছেন ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞরা। রক্তের দাগ বাংলাদেশের সংসদ সদস্যেরই কিনা তা খতিয়ে দেখা হবে। সিআইডি কর্তা জানিয়েছেন, বাংলাদেশের সংসদ সদস্যের দেহ এখনও উদ্ধার হয়নি।
গত ১২ মে দর্শনা সীমান্ত দিয়ে ভারতে প্রবেশ করেন আনোয়ারুল। ১৪ মে পর্যন্ত পরিবারের সঙ্গে তাঁর যোগাযোগ ছিল। তবে ১৬ মে সংসদ সদস্যের ফোন থেকে আনোয়ারুলের ব্যক্তিগত সহকারী আবদুর রউফের কাছে ফোন আসে। তিনি ফোন ধরতে পারেননি। পরে আবার তিনি ফোন করলে ফোনটি বন্ধ পেয়েছেন। এর পর থেকে সংসদ সদস্যের সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন।