দেশের শীর্ষস্থানীয় জাতীয় উন্নয়ন সংস্থা ‘পদক্ষেপ’ তাদের উল্লেখযোগ্য উন্নয়নমূলক কার্যক্রমগুলোকে গতিশীল করার লক্ষ্যে এক কর্মশালার আয়োজন করে। সম্প্রতি ঢাকার মহাখালী ‘রাওয়া কনভেনশন সেন্টার’ এর হেলমেট হলে “ষাম্মাসিক পরিকল্পনা বাস্তবায়ন পর্যালোচনা-২০২৩-২০২৪” কর্মশালাটি অনুষ্ঠিত হয়।
দুই দিনব্যাপী কর্মশালার সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বস্ত্র ও পাট মন্ত্রী অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর কবির নানক। বিশেষ অতিথি ছিলেন মাইক্রোক্রেডিট রেগুলেটরী অথরিটি (এমআরএ) এর এক্সিকিউটিভ ভাইস চেয়ারম্যান মো. ফসিউল্লাহ্। কর্মশালার উদ্বোধনী ও সমাপনী অনুষ্ঠানে পদক্ষেপের প্রতিষ্ঠাতা ও প্রেসিডেন্ট বীর মুক্তিযোদ্ধা এবিএম সিদ্দীক সভাপতিত্ব করেন। এছাড়া কর্মশালায় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সংস্থার বিভিন্ন পর্যায়ের যুগ্ম পরিচালকবৃন্দ, উপ-পরিচালকবৃন্দ, সিনিয়র পরিচালক ও সহকারী পরিচালকবৃন্দ, বিভাগীয় প্রধান এবং জোনাল, প্রজেক্ট ম্যানেজার, এরিয়া ও ব্রাঞ্চ ম্যানেজারগণ। অনুষ্ঠানে সংস্থার প্রধান কার্যালয় ও মাঠ পর্যায়ের প্রায় সাত শতাধিক কর্মীবৃন্দ অংশগ্রহণ করেন।
বস্ত্র ও পাট মন্ত্রী অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেন, ‘পদক্ষেপ’ আমার জন্মভূমি বরিশালে প্রতিষ্ঠা হয়েছে। এর প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি আমার অত্যন্ত প্রিয়। যার সাথে আমি দীর্ঘদিন অনেক ধরণের কাজ করেছি। তবে ‘পদক্ষেপ যে এত বিশাল প্রতিষ্ঠানে প্রতিষ্ঠিত হয়ে দেশের জন্য বিভিন্ন কাজ করছে তা আমার জানা ছিল না। ‘পদক্ষেপ’ দারিদ্র বিমোচনে সামাজিক উন্নয়ন, জলবায়ু পরিবর্তন অভিযোজন, স্বাস্থ্য, পুষ্টি ও স্যানিটেশন, ক্ষুদ্র অর্থায়ন ও সঞ্চয়, শিক্ষা ও দক্ষতা উন্নয়ন, কৃষি ও ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা উন্নয়ন ইত্যাদি কর্মসূচির মাধ্যমে অভিষ্ট জনগোষ্ঠির মধ্যে যে সেবা প্রদান করছে জেনে আমি খুবই আনন্দিত।
বিশেষ অতিথি ‘এমআরএ’ এর এক্সিউটিভ ভাইস চেয়ারম্যান মো. ফসিউল্লাহ বলেন, পদক্ষেপ ‘এমআরএ’ এর তালিকাভ‚ক্ত সেরা দশটি প্রতিষ্ঠানের একটি। করোনাকালে পদক্ষেপ দেশের জনগনকে নানাভাবে সহযোগিতা করেছে এবং বঙ্গবন্ধু শিক্ষা বৃত্তি প্রদানের ক্ষেত্রে পদক্ষেপ সবার চেয়ে এগিয়ে আছে।
পদক্ষেপের প্রতিষ্ঠাতা ও প্রেসিডেন্ট বীর মুক্তিযোদ্ধা এবিএম সিদ্দীক বলেন, আমাদের সকলের চাহিদা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে, সেইসাথে সংস্থার চাহিদাও বৃদ্ধি পাচ্ছে। এ সকল বিষয় বিবেচনায় রেখে দুই দিনব্যাপী এই কর্মশালাকে স্বার্থক করে তুলতে হবে।
পদক্ষেপের নিবার্হী পরিচালক মো. সালেহ্ বিন সামস বলেন, মাইক্রোক্রেডিট ও বেশ কিছু উন্নয়নমূলক কার্যক্রমের পাশাপাশি পদক্ষেপ বর্তমানে প্রায় ২৬টি প্রকল্পসহ বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কার্যক্রম পরিচালনা করছে। এছাড়া বঙ্গবন্ধু উচ্চ শিক্ষা বৃত্তি, কর্মী কল্যাণ তহবিল, বিভিন্ন সামাজিক কার্যক্রমে অংশগ্রহণ এবং সংস্থাকে ডিজিটালাইজেশন ও স্মাট প্রতিষ্ঠান হিসেবে গড়ে তোলা হচ্ছে।
পদক্ষেপের সংস্থার ক্ষুদ্র অর্থায়ন কর্মসূচির পরিচালক এবং প্রোগ্রাম ও এন্টারপ্রাইজ উইংয়ের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক ড. মুহম্মদ রিসালাত সিদ্দীক বলেন, আমরা বর্তমানে মাইক্রোফাইন্যান্স প্রোগ্রামের মাধ্যমে প্রায় ১ মিলিয়নের বেশি মহিলাদের সেবা প্রদান করেছি। মাইক্রোফাইন্যান্স এর চলমান প্রকল্পের আওতায় স্বাস্থ্যসেবা, শিক্ষা, বিভিন্ন ধরনের হাইজিন, ফিসারিজ, রেমিটেন্স, লাইভলিহুড এবং রিনিওবল এনার্জি নিয়ে কাজ করে যাচ্ছি।
উল্লেখ, জাতীয় উন্নয়ন সংস্থা ‘পদক্ষেপ’ ১৯৮৬ সাল থেকে দেশের আর্থসামাজিক উন্নয়ন অগ্রযাত্রায় অগ্রগামী ভূমিকা পালন করে চলেছে। ৩৭ বছরের এই রূপান্তরিত অভিযাত্রায় সম্ভাবনার ক্ষমতায়নে ৪৫০০ এর অধিক কর্মী ও ৭০০+ কার্যালয়ের বিস্তৃত নেটওয়ার্ক এর মাধ্যমে পদক্ষেপ ১ কোটির অধিক দরিদ্র জনগণের সক্ষমতা উন্নয়ন, বাজার সংযোগ ও অর্থায়ন সহযোগিতায় সমন্বিত উন্নয়ন কৌশল বাস্তবায়নের মাধ্যমে দেশের টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে।