গাজীপুর সিটি করপোরেশন (জিসিসি) নির্বাচন পর্যবেক্ষণে ৪ হাজার ৪৩৫টি সিসিটিভি বসিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এসব সিসিটিভির মাধ্যমে নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ে বসেই গাজীপুরের নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করছে ইসি।
বৃহস্পতিবার (২৫ মে) সকাল ৮টায় শুরু হওয়া ভোট চলবে বিকেল ৪টা পর্যন্ত। সব কেন্দ্রে ভোট হচ্ছে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম)। ভোট গ্রহণের শুরু থেকে সিসি ক্যামেরার মাধ্যমে নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।
জিসিসি নির্বাচনে মোট ৪ হাজার ৪৩৫টি সিসি ক্যামেরার মাধ্যমে নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। ১৮টি ডিজিটাল ডিসপ্লে বোর্ডের মাধ্যমে একইসঙ্গে ৪৬৬টি সিসি ক্যামেরায় ৪৬৬টি ভোট কক্ষ পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। প্রতি ডিসপ্লে দশ সেকেন্ড পরপর অটো রোটেড করে এভাবে ৪ হাজার ৪৩৫টি কেন্দ্রের ভোট গ্রহণ কার্যক্রম পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। সিটি নির্বাচনে অস্থায়ী ভোট কক্ষ রয়েছে ৪৯১টি। প্রতিটি ভোট কক্ষে একটি করে আর কেন্দ্র প্রতি দুটি করে সিসি ক্যামেরা স্থাপন করে নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। নির্বাচনে এখন পর্যন্ত কোনো অপ্রীতিকর ঘটনার খবর পাওয়া যায় নি।
প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিব আওয়ালসহ নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল অবসরপ্রাপ্ত আহসান হাবীব খান, নির্বাচন কমিশনার মো. আলমগীর, নির্বাচন কমিশনার রাশেদা সুলতানা, নির্বাচন কমিশনার আনিছুর রহমান কন্ট্রোল রুমে উপস্থিত থেকে নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করছেন।
সিটি করপোরেশন গঠনের পর তৃতীয়বারের মতো এ নির্বাচন হচ্ছে। নগরীর ৪৮০টি কেন্দ্রে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) ভোট হচ্ছে। এবারের নির্বাচনে ৩৫১টি ভোট কেন্দ্রকে ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। নির্বাচনী এলাকায় দায়িত্ব পালন করছেন পুলিশ, র্যাব, বিজিবি, এপিবিএন ও আনসার-ভিডিপিসহ আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর প্রায় ১৩ হাজার সদস্য।
নির্বাচনে মেয়র পদে ৮ জন প্রার্থী থাকলেও আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী আজমত উল্লা খান ও দলটির বিদ্রোহী প্রার্থী জায়েদা খাতুনের মধ্যে মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে বলে আভাস পাওয়া গেছে। জায়েদা খাতুন গাজীপুর সিটি করপোরেশনের সাময়িক বরখাস্ত অবস্থায় থেকে সদস্য পদত্যাগ করা মেয়র জাহাঙ্গীর আলমের মা। মা প্রার্থী হলেও তার নির্বাচনে অগ্রণী ভূমিকা পালন করছেন ছেলে জাহাঙ্গীর।
মেয়র পদে প্রার্থীরা হচ্ছেন- অ্যাডভোকেট মো. আজমত উল্লা খান (আওয়ামী লীগ-নৌকা), এম এম নিয়াজ উদ্দিন (জাতীয় পার্টি-লাঙ্গল), আতিকুল ইসলাম (গণফ্রন্ট-মাছ), গাজী আতাউর রহমান (ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ-হাতপাখা), জায়েদা খাতুন (স্বতন্ত্র-টেবিলঘড়ি), মো. রাজু আহম্মেদ (জাকের পার্টি-গোলাপ ফুল), মো. হারুন-অর-রশীদ (স্বতন্ত্র-ঘোড়া) এবং সরকার শাহনুর ইসলাম (স্বতন্ত্র-হাতি)।
নির্বাচন কমিশনের তথ্য অনুযায়ী, গাজীপুর সিটিতে মোট ভোটার ১১ লাখ ৭৯ হাজার ৪৭৬ জন। তাদের মধ্যে ৫ লাখ ৯২ হাজার ৭৬২ জন পুরুষ, ৫ লাখ ৮৬ হাজার ৬৯৬ জন নারী এবং ১৮ জন হিজড়া। এই সিটিতে ৫৭টি সাধারণ ও ১৯টি সংরক্ষিত ওয়ার্ড আছে। মোট ভোটকেন্দ্র ৪৮০টি, মোট ভোটকক্ষ ৩ হাজার ৪৯৭টি। সিটি করপোরেশনের আওতাভুক্ত ৮টি থানার মধ্যে কাশিমপুর থানায় ৪৭টি, কোনাবাড়ি থানায় ৪৩টি, বাসন থানায় ৪২টি, সদর থানায় ৪৬টি, গাছা থানায় ৫৭টি, পূবাইল থানায় ৩২টি, টঙ্গী পূর্ব থানায় ১১১টি এবং টঙ্গী পশ্চিম থানায় ৫২টি ভোটকেন্দ্র রয়েছে।
জানা গেছে, গাজীপুর সিটিতে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন মোট ৩৩৩ জন প্রার্থী। এরমধ্যে মেয়র পদে ৮ জন, সংরক্ষিত কাউন্সিলর পদে ৭৯ জন এবং সাধারণ কাউন্সিলর পদে ২৪৬ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।