কোটা আন্দোলনের আড়ালে নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন ভবন ও এর বিভিন্ন স্থাপনায় দুর্বৃত্তরা হামলা ও আগুন দেয়ার ঘটনায় প্রায় ৫০ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। আগুন লাগিয়ে দেয়ার আগে দুর্বৃত্তরা ভবনটির ভিডিও এবং র্যাকি করে পরিকল্পিতভাবে হামলা চালায় বলে সাংবাদিকদের জানিয়েছেন নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভী।
তিনি বলেন-তবে সিটি কর্পোরেশনের সার্ভার ক্ষতিগ্রস্ত না হওয়ায় জন্ম-মৃত্যু নিবন্ধন, ওয়াসার বিলসহ অন্যান্য বিষয়ে সমস্যা হবেনা বলে জানিয়েছে সিটি কর্পোরেশন। ইন্টারনেট স্বাভাবিক হলেই এসব সার্ভিস স্বাভাবিক হবে। কোটা বিরোধি আন্দোলনের সুযোগে গত ১৮ ও ১৯ জুলাই নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন ভবন ও সিটি কর্পোরেশনের বিভিন্ন স্থাপনায় হামলা চালায় দুবৃত্তরা। ১৮ জুলাই বৃহস্পতিবার বিকেল চারটায় নগরীর দুই নং রেলগেটস্থ মিনি পার্কে স্থাপিত বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য ভাংচুর করে ও গাছপালা উপড়ে ফেলে। নগর মিলনায়তনের পাশে সিটি কর্পোরেশনের বাণিজ্যিক ভবন দোয়েল সিটি প্লাজা-১ ভাংচুর করা হয়। জিমখানা এলাকায় দোয়েল সিটি প্লাজা-৩ এ ভাংচুর করে আগুন লাগিয়ে দেয়া হয়।
এ দুইদিন নগরীর চাষাড়া থেকে নিতাইগঞ্জ পর্যন্ত নবাব সলিমুল্লাহ রোডের ডিভাইডারের বিভিন্ন অংশের গাছ, ফুলের টব উপরে ফেলে দুর্বৃত্তরা। ভেঙ্গে ফেলে ডিভাইডারের বিভিন্ন স্থানের দেয়াল। ১৯ জুলাই শুক্রবার রাত পৌনে ১০টায় নগর ভবনে হামলা চালিয়ে আগুন লাগিয়ে দেয় দুর্বৃত্তরা। সিটি কর্পোরেশনের চারটি গাড়ি, ১০টি মোটর সাইকেল, কম্পিউটার, আসবাবপত্রে আগুন লাগিয়ে দেয়। বিনামূল্যে দেয়ার জন্য রাখা বিপুল পরিমাণ ওষুধপত্র, সিটি কর্পোরেশনের বিক্রয় কেন্দ্র এবং সিটি কর্পোরেশনের প্রায় দেড়শ বছর পুরনো হেরিটেজ ভবন ভাংচুর ও লুটপাট করে। নগর ভবন চত্ত্বরে অবস্থিত ওয়ান ব্যাংক ও সিটি ব্যাংক ভাংচুর করে। এছাড়া, আলী আহম্মদ চুনকা নগর পাঠাগার ও মিলনায়তনে দুই দফায় ব্যপক ভাংচুর ও লুটপাট করে দুর্বৃত্তরা।
মেয়র আইভী বলেন, পরিকল্পিতভাবে এ হামলা চালানো হয়েছে। সিটি কর্পোরেশন ভবনে আগুন লাগানোর আগের দিন ভবনের ভিডিও করে নিয়ে গেছে বলে জানিয়েছেন আমাদের সিকিউরিটি গার্ড। তখন তারা এ ভিডিওকে সন্দেহ করেনি। এখন বুঝা যাচ্ছে ভিডিও করাটি ছিলো হামলার আগে র্যাকির অংশ। নারায়ণগঞ্জে পাসপোর্ট অফিস, সিটি কর্পোরেশন সহ বেশকিছু সেবামূলক প্রতিষ্ঠানে নাশকতা চালিয়েছে আন্দোলনকারিরা।
নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন ও আওয়ামী লীগ অফিস গতকাল পরিদর্শন করেন জাতীয় সংসদের হুইপ নজরুল ইসলাম বাবু এমপি। এসময় বাবু বলেন, এসব সেবামূলক প্রতিষ্ঠানে যারা হামলা চালিয়েছে তারা দেশদ্রোহী। তারা বাংলাদেশের উন্নয়ন চায় না। শেখ হাসিনার কর্মী ও নেতাদেরকে চিহ্নিত করে নিশ্চিহ্ন করার দুঃসাহস যারা দেখিয়েছে তাদের খুঁজে বের করে আইনের আওতায় আনার দায়িত্ব প্রশাসনকেই নিতে হবে।