পশ্চিম আফ্রিকার দেশ নাইজেরিয়ায় ভয়াবহ বন্যায় কমপক্ষে ১৭০ জনের প্রাণহানি ঘটেছে। দেশটিতে দুই সপ্তাহ ধরে চলা বন্যায় আহত হয়েছেন আরও প্রায় ২ হাজার মানুষ।
এছাড়া ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে সৃষ্ট এই বন্যায় বাস্তুচ্যুত হয়েছেন ২ লক্ষাধিক মানুষ। মঙ্গলবার (২৭ আগস্ট) রাতে এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা আনাদোলু।
আফ্রিকার এই দেশটির জাতীয় জরুরি অবস্থার প্রকাশিত ফ্লাড ন্যাশনাল ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার (এনইওসি) এর তথ্য অনুসারে, দুই সপ্তাহের বন্যার সময় নাইজেরিয়া জুড়ে বৃষ্টি-বন্যা-সংক্রান্ত ঘটনায় কমপক্ষে ১৭০ জন নিহত এবং আরও প্রায় ২ হাজার মানুষ আহত হয়েছেন।
এছাড়া বন্যায় ২ লাখ ৫ হাজারেরও বেশি লোক বাস্তুচ্যুত হয়েছে বলে মঙ্গলবার জানানো হয়েছে।
আনাদোলু বলছে, মঙ্গলবার আপডেট করা এবং ন্যাশনাল ইমার্জেন্সি ম্যানেজমেন্ট এজেন্সির (এনইএমএ) প্রকাশিত সর্বশেষ এনইওসি পরিসংখ্যান অনুসারে, এ পর্যন্ত দেশটিতে ১৭০ জন নিহত, ১ হাজার ৯৪১ জন আহত এবং ২ লাখ ৫ হাজার ৩৩৮ জন তাদের বাড়িঘর থেকে বাস্তুচ্যুত হয়েছেন।
চলমান এই বন্যা দেশের উত্তরাঞ্চলের আটটি প্রদেশে প্রচণ্ড আঘাত হেনেছে। এছাড়া বেশ কয়েকটি অঞ্চলে বৃষ্টি এখনও অব্যাহত রয়েছে এবং আবহাওয়া কর্তৃপক্ষের দেওয়া পূর্বাভাসে আগামী মাসেও এই বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকবে বলে জানানো হয়েছে।
এদিকে চলমান এই বন্যা কয়েক হাজার হেক্টর জমির ফসলও ভাসিয়ে নিয়ে গেছে। আর এতে করে পশ্চিম আফ্রিকার দেশটিতে চলতি বছর খাদ্যের প্রাপ্যতা নিয়ে উদ্বেগ বৃদ্ধি পেয়েছে।
এর আগে, নাইজেরিয়া এক দশকেরও বেশি সময়ের মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ বন্যার মুখোমুখি হয় ২০২২ সালে। ওই সময় দেশটিতে বন্যায় ৬ শতাধিক মানুষের প্রাণহানি ঘটে এবং বাস্তুচ্যুত হন প্রায় ১৪ লাখ মানুষ। এছাড়া বন্যায় ৪ লাখ ৪০ হাজার হেক্টর কৃষিজমির ফসল নষ্ট হয়।
খরায় ভয়াবহ পরিস্থিতির মুখোমুখি আফ্রিকার ৬ কোটি ৮০ লাখ মানুষ
অর্থনৈতিক সংকটের জেরে আফ্রিকার এই দেশটিতে মুদ্রাস্ফীতি ইতোমধ্যে দুই সংখ্যার ঘরে পৌঁছেছে এবং দ্রব্যমূল্য ব্যাপক বৃদ্ধি পেয়েছে। দেশটির উত্তরপূর্বাঞ্চলীয় মরু অঞ্চলগুলোতে জঙ্গিদের বার বার হামলার কারণে অনেকে কৃষি খাত ছেড়ে দিচ্ছেন।
এমন পরিস্থিতিতে সেখানে বন্যা দেখা দেওয়ায় তা কৃষিক্ষেত্রে ভয়াবহ সমস্যা তৈরি করেছে। চলমান বন্যায় দেশটিতে বিস্তৃত কৃষি জমির ফসলের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।