কলকাতার আরজি কর মেডিকেল কলেজ এবং হাসপাতালে মেডিকেল ছাত্রীকে ধর্ষণ ও খুনের ঘটনার চলমান তদন্ত নিয়ে মুখ খুললেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জির ভাতিজা ও তৃণমূল কংগ্রেস সংসদ সদস্য অভিষেক ব্যানার্জি। গোটা ভারত জুড়ে ধর্ষণের ঘটনা বৃদ্ধি নিয়েও প্রশ্ন তোলেন তিনি। ৩১ বছর বয়সী পোস্ট গ্রাজুয়েট'এর দ্বিতীয় বর্ষের ওই ছাত্রীর নৃশংস হত্যাকাণ্ডের পর গোটা দেশ জুড়ে বিক্ষোভ, প্রতিবাদ, আন্দোলনের ঢেউ আছড়ে পড়েছে।
এমন এক পরিস্থিতিতে বৃহস্পতিবার নিজের এক্স হ্যান্ডেলে একটি লম্বা পোস্ট করেন অভিষেক।
এক পরিসংখ্যান তুলে ধরে অভিষেক লেখেন, ‘গত ১০ দিন ধরে, যখন গোটা দেশ আরজি কর মেডিকেল কলেজের ঘটনার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাচ্ছে, ন্যায়বিচারের দাবি করছে, তখন একাধিক রিপোর্ট বলছে, এই সময়ে সারা দেশে ৯০০টি ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে– এবং এই সময়ে প্রতিটি ঘটনায় মানুষ এই ভয়ংকর অপরাধের প্রতিবাদে রাস্তায় নেমেছে।
কার্যকর আইনি পদক্ষেপের প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দিয়ে তিনি বলেন, গত সপ্তাহে প্রতিদিন গড়ে ৯০টি ধর্ষণের ঘটনা ঘটছে- যা প্রতি ঘণ্টায় ৪টি এবং প্রতি ১৫ মিনিটে ১টি ঘটনার সমান। তার অভিমত, ধর্ষণ বিরোধী কঠোর আইন বলবৎ করা কতটা জরুরি তা স্পষ্ট। আমাদের কঠোর আইন দরকার যেখানে ৫০ দিনের মধ্যে গোটা বিচার প্রক্রিয়ার নিষ্পত্তি এবং দোষী সাব্যস্ত করার আদেশ থাকবে।
সেইসাথে অপরাধীদের জন্য কঠোরতম শাস্তির বিধান থাকবে।
কেন্দ্রের কাছে ধর্ষণবিরোধী কঠোর আইন চালু করার জন্য রাজ্য সরকারকে ক্রমাগত চাপ তৈরি করতে হবে বলে জানান তৃণমূল সংসদ সদস্য।
এদিকে অভিষেকের এই দীর্ঘ পোস্টের পরই এদিন বিকালের দিকে প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি লিখলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি। প্রধানমন্ত্রীকে লেখা চিঠিতে মুখ্যমন্ত্রী লিখেছেন ‘গোটা দেশে ধর্ষণের ঘটনা বেড়ে চলেছে এবং কিছু ক্ষেত্রে ধর্ষণের পর খুনের ঘটনাও ঘটছে।
এ বিষয়ে আপনার দৃষ্টিপাত করছি। বিভিন্ন মাধ্যম থেকে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, গোটা দেশে গড়ে ৯০টি ধর্ষণের ঘটনা ঘটছে- এটি খুবই লজ্জাজনক। এটা সমাজ ও জাতির আস্থা ও বিবেককে নাড়া দেয়। এটা বন্ধ করা আমাদের সকলের বাধ্যতামূলক কর্তব্য যাতে নারীরা নিরাপদ ও সুরক্ষিত বোধ করে।
মুখ্যমন্ত্রী লেখেন, এই ধরনের জঘন্য অপরাধের সাথে জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির বিধান করে কঠোর কেন্দ্রীয় আইনের মাধ্যমে এ ধরনের গুরুতর এবং সংবেদনশীল সমস্যাটি ব্যাপকভাবে সমাধান করা দরকার।
এই ধরনের মামলার দ্রুত বিচারের জন্য ফার্স্ট ট্র্যাক বিশেষ আদালত গঠনের বিষয়টিও প্রস্তাবিত আইনে বিবেচনা করা উচিত। দ্রুত ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে, এই ধরনের মামলার বিচার ১৫ দিনের মধ্যে শেষ করা উচিত।