যুক্তরাষ্ট্র ও দক্ষিণ কোরিয়ার বিরুদ্ধে পর্যাপ্ত সামরিক সক্ষমতার প্রমাণ হিসেবে পানির নিচে চলতে সক্ষম পারমাণবিক নতুন ড্রোনের পরীক্ষা চালিয়েছে উত্তর কোরিয়ার পিয়ংইয়ং।
এপ্রিলের ৪ থেকে ৭ তারিখ পর্যন্ত ‘হায়িল-২’ নামে পানির নিচে চলতে সক্ষম এমন পারমাণবিক শক্তিধর আক্রমণকারী অস্ত্রের পরীক্ষা চালায় উত্তর কোরিয়া। শনিবার (৮ এপ্রিল) দেশটির রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম কোরিয়ান সেন্ট্রাল নিউজ এজেন্সি (কেসিএনএ) এসব তথ্য জানায়।
প্রায় দেড় সপ্তাহ আগে ‘হায়িল-১’ নামে পারমাণবিক ওয়ারহেড বহনে সক্ষম নতুন ডুবোড্রোনের পরীক্ষা চালানোর কথা জানিয়েছিল। উত্তর কোরীয় ভাষায় ‘হায়িল’ শব্দের অর্থ সুনামি।
কেসিএনএ’র প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, সর্বশেষ পরীক্ষায় ডুবোড্রোন ‘হায়িল-২’ ৭১ ঘণ্টা ৬ মিনিট পানির নিচে ঘুরে বেড়িয়েছে ও সফলতার সঙ্গে কৃত্রিম লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হেনেছে। পরীক্ষাটি পানির নিচের কৌশলগত অস্ত্র ব্যবস্থাপনার নির্ভরযোগ্যতা ও এর আক্রমনের ভয়াবহ ক্ষমতার যথাযথ প্রমাণ দিয়েছে।
পিয়ংইয়ংয়ের এই ডুবোড্রোন আদৌ মোতায়েনের জন্য পুরোপুরি প্রস্তুত কি না, তা নিয়ে পশ্চিমা অনেক বিশ্লেষক সন্দেহ প্রকাশ করলেও কেসিএনএ বলছে, নতুন এ কৌশলগত অস্ত্র ব্যবস্থাপনা উত্তর কোরিয়ার বিরুদ্ধে নেওয়া যেকোনো সামরিক পদক্ষেপ মোকাবিলায় ব্যাপক সাহায্য করবে।
কেসিএনএ’র প্রকাশিত ছবিতে বড়, গাঢ় রংয়ের টর্পেডো আকৃতির একটি বস্তুর পাশাপাশি পানির নিচে বস্তুটির গতিপথ ও সমুদ্রপৃষ্ঠে বিশাল বিস্ফোরণের দৃশ্য দেখা যায়।
সাম্প্রতিক সময়ে উত্তর কোরিয়াকে নিয়মিতই বিভিন্ন ধরনের অস্ত্রের পরীক্ষা চালাতে দেখা যাচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্র ও দক্ষিণ কোরিয়ার সামরিক মহড়ার জবাবে গত কয়েক সপ্তাহ ধরে এ ধরনের পরীক্ষার গতিও বাড়িয়েছে কিম জং উন প্রশাসন।
গত ২৭ মার্চ দেশটি নতুন ও ছোট পারমাণবিক ওয়ারহেডও দেখিয়েছে। এমনকি, যুক্তরাষ্ট্রের যেকোনো জায়গায় আঘাত হানতে সক্ষম এমন আন্তঃমহাদেশীয় ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রেরও পরীক্ষা চালিয়েছে।
গত বছর উত্তর কোরিয়া নিজেকে একটি ‘অপরিবর্তনীয়’ পারমাণবিক শক্তি হিসেবে ঘোষণা করেছিল। সেসময় দেশটির প্রেসিডেন্ট কিম জং উন নিজের সামরিক বাহিনীকে আসল যুদ্ধের প্রস্তুতির জন্য জোরদার মহড়া বলেন।
২০১৯ সালে কিম জং উন ও তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যে দ্বিতীয় শীর্ষ বৈঠক ভেস্তে যাওয়ার পর পরমাণু নিরস্ত্রীকরণ আলোচনা স্থবির হয়ে পড়ে। তবে পিয়ংইয়ংকে জাতিসংঘের রেজুলেশনের অধীনে ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা করা থেকে নিষিদ্ধ করা হয়েছে ও অস্ত্র কর্মসূচির জন্য দেশটির ওপর একাধিক আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞা রয়েছে।