গত কিছুদিন ধরেই শেয়ারবাজারে টানা দরপতন চলছে। এই দরপতন ঠেকানোর উপায় খুঁজে বের করতে বাজারমধ্যস্থতাকারীদের সঙ্গে বৈঠক করেছে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। সোমবার বিকাল ৩টায় বিএসইসির কমিশনার ড. শেখ শামসুদ্দিন আহমেদের সভাপতিত্বে বিএসইসির প্রধান কার্যালয়ে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে শেয়ারবাজারের উন্নয়নে তিনটি সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে।
এ সময় ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) ব্যবস্থাপনা পরিচালক, ব্রোকারেজ হাউসগুলোর সংগঠন ডিএসই ব্রোকারেজ অ্যাসোসিয়েশন (ডিবিএ), মার্চেন্ট ব্যাংকারদের সংগঠন বাংলাদেশ মার্চেন্ট ব্যাংকার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিএমবিএ) এবং প্রধান ১০টি ব্রোকারেজ হাউসের শীর্ষ নির্বাহীরা উপস্থিত ছিলেন।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, শেয়ারবাজারের বর্তমান সংকট থেকে উত্তরণে প্রাথমিকভাবে তিনটি সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এগুলো হলো- প্রতিটি প্রতিষ্ঠানের ডিলার একাউন্ট থেকে বাজারে সর্বোচ্চ সহযোগিতা প্রদান, ব্যাংকের ট্রেজারি প্রধানদের সাথে বৈঠক করে বিনিয়োগ সক্রিয় করা এবং মিউচুয়াল ফান্ডকে শক্তিশালী করা।
সভায় বিএসইসির কমিশনার ড. শেখ শামসুদ্দিন আহমেদ বলেন, শেয়ারবাজারের অংশীজন এবং ব্রোকাররা বাজারের সাথে সরাসরি সম্পৃক্ত হয়ে কাজ করছেন। নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসি বাজার সংশ্লিষ্টদের মতামত গুরুত্ব সহকারে মূল্যায়ন করে থাকে এবং শেয়ারবাজারের বিভিন্ন বিষয়ে বাজার সংশ্লিষ্টদের মতামত ও পরামর্শ এর মাধ্যমে দেশের শেয়ারবাজারের সমৃদ্ধি নিশ্চিত করাই বিএসইসির লক্ষ্য।
তিনি বলেন, শেয়ারবাজারের বর্তমান পরিস্থিতিরি উত্তরণে সোমবারের বাজার সংশ্লিষ্টদের মতামত ও পরামর্শ আমলে নিয়ে কাজ করবে বিএসইসি। বাংলাদেশের অর্থনৈতিক পরিস্থিতি ও আর্থিক অবস্থান যেমন উন্নতি হচ্ছে এবং দেশের শেয়ারবাজারও দ্রুতই প্রাণবন্ত ও বলিষ্ঠ রূপে ফিরবে বলে আশা করা যায়। সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টায় দ্রুতই বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ ও পুঁজির সুরক্ষা নিশ্চিত করে দেশের শেয়ারবাজারের উন্নয়ন তরান্বিত করার বিষয়ে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।
সভায় বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক মোহাম্মদ রেজাউল করিম শেয়ারবাজারের বর্তমান পরিস্থিতিতে বিদ্যমান চ্যালেঞ্জসমূহ তুলে ধরে করণীয় বিষয়ে আলোকপাত করেন। এছাড়া বিএসইসির নিবন্ধনপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠান সমূহের (স্টক ডিলার, মার্চেন্ট ব্যাংক, অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট কোম্পানি, মিউচুয়াল ফান্ড ইত্যাদি) বিনিয়োগ বাড়ানোর জন্য আহ্বান জানান। তিনি ব্যাংকের বিনিয়োগ বাড়ানোর বিষয়ে ব্যাংকসমূহের হেড অব ট্রেজারিদের সাথে একটি সভা অনুষ্ঠানের বিষয়ে মতামত প্রদান করেন।
বৈঠকে বাজারের সংকটসমূহ ও সংকট উত্তরনের উপায়সহ সকল সমস্যা সমাধানের জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিয়ে বিএসইসি ও ব্রোকারেজ হাউজের প্রতিনিধিরা সমন্বিতভবে কাজ করার বিষয়ে একমত পোষণ করেন। তারা জানান, পুঁজিবাজারকে আরো ভালো অবস্থানে নিয়ে যেতে তাদের সর্বাত্বক চেষ্টা ও সহযোগিতা থাকবে।
বাজারের টানা দরপতন ঠেকাতে ও প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগ বাড়ানোর লক্ষ্যে মূলত এ বৈঠকের আয়োজন করেছে বিএসইসি। গত ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি থেকে শেয়ারবাজারে দরপতন শুরু হয়। প্রায় দুই মাস ধরে দরপতনের ধারায় রয়েছে বাজার। ঈদের আগে শেষ ৪ কার্যদিবসে কিছুটা আশা দেখালেও ঈদের পরে আগের ধারায় ফিরেছে বাজারের লেনদেন। ফলে বিদ্যমান চ্যালেঞ্জসমূহ তুলে ধরতে অংশীজনদের সঙ্গে বৈঠক করেছে বিএসইসি।