রাশিয়া কৃষ্ণসাগরে তুরস্কের সুকরো ওকান নামে একটি মালবাহী জাহাজ আটক করেছিল। ওই জাহাজটি ইউক্রেনের ইজমাইল বন্দরের দিকে যাচ্ছিল। রাশিয়ার সেনারা জাহাজটি থামানোর নির্দেশ দিলেও নাবিক না থামিয়ে চলে যেতে চেয়েছিলেন। আর নির্দেশ না মানায় তখন সতর্কতামূলক গুলি ছুড়ে ও হেলিকপ্টার থেকে সেনা নামিয়ে জাহাজটি আটকায় তারা। এর পর পুরো জাহাজটিতে দীর্ঘ সময় তল্লাশি চালান রুশ সেনারা।
বৃহস্পতিবার তুরস্কের প্রেসিডেন্ট দপ্তরের পক্ষ থেকে এক বিবৃতিতে তুরস্ক রাশিয়াকে সতর্ক করেছে। খবর রয়টার্সের।
আর রাশিয়ার সেনারা জোরপূর্বক জাহাজ থামিয়ে তল্লাশি চালানোয় ক্ষেপেছে তুরস্ক। রাশিয়াকে ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনা থেকে দূরে থাকতে সতর্কতা দিয়েছে দেশটি।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘জাহাজে হস্তক্ষেপের পর, আমরা রাশিয়াকে ভবিষ্যতে এ ধরনের প্রচেষ্টার ব্যাপারে সতর্ক করেছি। এসব বিষয় কৃষ্ণসাগরে উত্তেজনা বৃদ্ধি করবে।
এদিকে এক সপ্তাহেরও বেশি সময় আগে এ ঘটনা ঘটলেও বৃহস্পতিবার এ নিয়ে মুখ খুলেছে তুরস্ক। রাশিয়ার সেনাদের এমন কাণ্ডের পরও বিষয়টি নিয়ে কথা না বলায় চাপে ছিলেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোগান। অবশেষে তার দপ্তরের পক্ষ থেকে বিবৃতি দেওয়া হয়েছে।
তবে এতদিন কথা না বলার ব্যাপারে তার্কিস প্রেসিডেন্ট দপ্তর নিজস্ব যুক্তি দিয়েছে। তারা বলেছে, জাহাজটি তুরস্কের মালিকানাধীন হলেও এটি চলে পালাওয়ের পতাকা নিয়ে। ফলে তারা আশা করছিল পালাও এ নিয়ে প্রথমে কথা বলবে।
পালাও হলো— প্রশান্ত মহাসাগরের একটি দ্বীপপুঞ্জ। বিশ্বের বড় বড় জাহাজ কোম্পানিগুলো পালাওয়ের পতাকা ব্যবহার করে জাহাজ পরিচালনা করে। এতে করে কোনো সমস্যা ছাড়া আন্তর্জাতিক বন্দরগুলো ব্যবহার করতে পারে তারা।
গত বছর রাশিয়া ইউক্রেনে হামলা করার পরই দেশটির সেনারা কৃষ্ণসাগরের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নেয়। এতে করে ইউক্রেনের শস্য রপ্তানি বন্ধ হয়ে যায়। তখন তুরস্ক ও জাতিসংঘের মধ্যস্থতায় ২০২২ সালের জুলাইয়ে রাশিয়া-ইউক্রেনের মধ্যে কৃষ্ণসাগরের মধ্যে দিয়ে যাওয়ার অনুমতি- শস্যচুক্তি হয়। এর মাধ্যমে নির্বিঘ্নে কৃষ্ণসাগর ব্যবহার করে ইউক্রনের শস্য আন্তর্জাতিক বাজারে যাচ্ছিল। কিন্তু এ বছরের জুলাইয়ে চুক্তিটি ভেস্তে যায়। এর পর রাশিয়া হুমকি দেয় কৃষ্ণসাগর দিয়ে ইউক্রেনের শস্য পরিবহণের চেষ্টা করলে তারা এতে বাধা দেবে।