তুরস্কে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ভোটগ্রহণ চলছে। বর্তমান প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়্যেব এরদোয়ান ও তার প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী কামাল কিলিচদারওগ্লুর মধ্যে তুমুল প্রতিদ্বন্দ্বিতার মধ্যদিয়ে চলছে ভোটগ্রহণ। একইদিনে সংসদীয় এবং প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ভোট গ্রহণ করা হচ্ছে।
রোববার সকাল ৮টায় ভোটগ্রহণ শুরু হয় এবং বিকাল ৫টায় তা শেষ হবে। এবারের নির্বাচনে প্রায় ছয় কোটি ৪০ লাখ ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন। এর মধ্যে ৩৪ লাখ বিদেশী ভোটার এবং প্রায় ৬০ লাখ নতুন ভোটার রয়েছেন যারা জীবনে প্রথমবারের ভোট দিচ্ছেন।
দুই দশকের বেশি সময় ধরে এরদোগান ক্ষমতায় রয়েছেন এবং তুরস্কের সব নির্বাচনে তিনি চমক দেখিয়েছেন। কিন্তু এবারের নির্বাচনে এরদোয়ানের সামনে কঠিন বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছেন তার প্রতিদ্বন্দ্বী কামাল কিলিচদারওগ্লু। তুরস্ককে শাসন করা এরদোয়ান সহজে পরাজয় মেনে নিয়ে নীরবে ক্ষমতা ছেড়ে চলে যাবেন, এমন কথাও বিশ্বাস করা কঠিন।
তুরস্কের জনগণ ব্যাপক মূল্যস্ফীতি, মুদ্রার দরপতন ও জীবনযাত্রার মান কমে যাওয়া নিয়ে সরকারের বিরুদ্ধে অভিযোগ করে আসছে। এর মধ্যেই গত ফেব্রুয়ারিতে দেশটিতে ভয়াবহ ভূমিকম্প আঘাত হানে। এতে ৫০ হাজারের বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন। এছাড়া গৃহহীন হয়েছেন লাখো মানুষ।
দেশটিতে নির্বাচনের আগে করা জনমত জরিপে এরদোয়ানের চেয়ে কিছুটা এগিয়ে রয়েছেন কিলিচদারওগ্লু। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এরদোয়ান তার চমক দেখাতে পারেন। আনাতোলিয়া অঞ্চলের শ্রমজীবী মানুষের মধ্যে তার ব্যাপক সমর্থন রয়েছে। এতে ভোটের চিত্র বদলে যেতে পারে বলে অনেকে মনে করছেন।
প্রেসিডেন্ট এবং সংসদ উভয়ই পাঁচ বছরের মেয়াদের জন্য নির্বাচিত করা হবে৷ তুরস্কে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হতে হলে একজন প্রার্থীকে মোট ভোটের ৫০ শতাংশের বেশি পেতে হবে। তবে কোনো প্রার্থী ৫০ শতাংশের বেশি ভোট না পেলে রান অফ নির্বাচন হবে। এজন্য সময় থাকবে দুই সপ্তাহ। নির্বাচনে কেউ যদি অর্ধেকের বেশি ভোট পান, তাহলে তিনিই সরাসরি প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হবেন।
তুরস্কের নির্বাচনে ভোটারের উপস্থিতি বেশ তাৎপর্যপূর্ণ৷ ২০১৮ সালে প্রায় ৮৭ ভাগ ভোট দিয়েছিলেন৷ নির্বাচনের দিন তুরস্কে মদ বিক্রিতে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে৷ নির্বাচনে দুই প্রার্থীই বিদেশী হস্তক্ষেপের অভিযোগ তুলেছেন। এরদোয়ান বলছেন, মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ও তার প্রশাসন তাকে ক্ষমতাচ্যুত করার চেষ্টা করছে। অন্যদিকে, কিলিচদারওগ্লু অভিযোগ তুলেছেন- রাশিয়া এ নির্বাচনে এরদোয়ানের পক্ষে অবস্থান নিয়েছে এবং মস্কো তুরস্কের নির্বাচনে হস্তক্ষেপ করছে। মস্কো এই অভিযোগ সরাসরি নাকচ করেছে। সূত্র: ডিডাব্লিউ, পার্সটুডে, রয়টার্স, এএফপি,এপি