তারেক রহমানকে দেশে ফিরিয়ে আনতে জোর কূটনৈতিক তৎপরতা ও আইনি কার্যক্রম চলমান রয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বুধবার (২৬ জুন) জাতীয় সংসদে সংরক্ষিত আসনের সংসদ সদস্য বেগম ফরিদা ইয়াসমিনের প্রশ্নের জবাবে এ তথ্য জানান প্রধানমন্ত্রী।
স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে প্রশ্নোত্তর টেবিলে উপস্থাপিত হয়।
শেখ হাসিনা বলেন, একুশ আগস্ট গ্রেনেড হামলাসহ একাধিক মামলায় সাজাপ্রাপ্ত আসামি তারেক রহমানকে যুক্তরাজ্য থেকে দেশে ফিরিয়ে আনার বিষয়ে কিছু আইনগত জটিলতা রয়েছে। তবে সব আইনি প্রক্রিয়া নিরসন করে তারেককে দেশে ফিরিয়ে এনে সাজার মুখোমুখি করার বিষয়ে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ সরকার। এ উদ্দেশ্য জোর কূটনৈতিক তৎপরতা ও আইনি কার্যক্রম একই সঙ্গে চলমান রয়েছে। যুক্তরাজ্য সরকারের সঙ্গে নিবিড় যোগাযোগ রক্ষার মাধ্যমে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়সহ সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলো কাজ করে যাচ্ছে। আশা করা যায়, এ প্রক্রিয়ায় ফলাফল আমরা অচিরেই দেখতে সক্ষম হবো।
২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলায় তারেক রহমান ওরফে তারেক জিয়াসহ ১৫ জন আসামি বর্তমানে পলাতক রয়েছে উল্লেখ করে সরকারপ্রধান বলেন, পলাতক আসামিদের গ্রেফতারের প্রচেষ্টা অব্যাহত আছে। বিদেশে পলাতক আসামি মাওলানা তাজউদ্দিন, মো. হারিছ চৌধুরী (গণমাধ্যমে খরব প্রকাশ বাংলাদেশের মাটিতে মারা গেছেন) ও রাতুল আহম্মেদ বাবু ওরফে রাতুল বাবুদের বিরুদ্ধে ইন্টাপোলের রেড নোটিশ জারি করা আছে। এছাড়া পলাতক আসামিরা যেসব দেশে অবস্থান করছে সেসব দেশের সঙ্গে আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে ফিরিয়ে আনার প্রচেষ্টা অব্যাহত আছে। সরকারের উচ্চপর্যায় থেকে এ বিষয়ে নানামুখী পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। খুনিদের দেশে ফিরিয়ে আনার বিষয়ে সহযোগিতা চেয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজেই বিভিন্ন সময়ে সংশ্লিষ্ট দেশগুলোর রাষ্ট্র ও সরকারপ্রধানকে একাধিক চিঠি দিয়েছেন বলে সংসদকে জানান।
তিনি বলেন, সংশ্লিষ্ট দেশগুলাতে খুনিদের অবস্থানের বিষয়ে আইনগত জটিলতা থাকায় এ বিষয়ে প্রত্যাশিত অগ্রগতি হয়নি। খুনিদের দেশে ফিরিয়ে আনার লক্ষ্যে বর্তমানে প্রচলিত কূটনীতির পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট দেশগুলোর আইন অনুযায়ীও ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
পলাতক আসামিদের দেশে ফিরিয়ে এনে শাস্তি কার্যকরের লক্ষ্যে ইন্টারপোলের মাধ্যমে রেড নোটিশ জারি করা হয়েছে জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের পলাতক খুনিদের দেশে ফিরিয়ে এনে বিচারের রায় কার্যকর করার বিষয়ে কূটনৈতিক তৎপরতা অব্যাহত রয়েছে। এ বিষয়ে পররাষ্ট্র, আইন ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্ট অন্যান্য প্রতিষ্ঠান পরস্পরের সঙ্গে সমন্বয়ের মাধ্যমে কাজ করে যাচ্ছে।
তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুর পলাতক খুনিদের মধ্যে মেজর (অব.) নূর চৌধুরী বর্তমানে সপরিবারে কানাডায়, আব্দুর রশিদ ও মেজর (বরখাস্ত) শরিফুল হক ডালিম পাকিস্তান বা লিবিয়ায়, লেফটেন্যান্ট কর্নেল (অব.) রাশেদ চৌধুরী যুক্তরাষ্ট্রে এবং রিসালদার মোসলেম উদ্দিন খান ভারতে অবস্থান করছে বলে জানা যায়। এছাড়া লেফটেন্যান্ট কর্নেল (অব.) আজিজ পাশা জিম্বাবুয়ে অবস্থানকালে মারা গেছে বলে জানা যায়। বঙ্গবন্ধু হত্যায় ফাঁসির আদেশপ্রাপ্ত ১২ জন আসামির মধ্যে ছয়জনের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়েছে বলেও জানান সরকারপ্রধান।