অর্থ কেলেঙ্কারিতে সমালোচিত প্রশান্ত কুমার হালদারের (পিকে হালদার) কোম্পানি নর্দার্ণ জুট অ্যান্ড ম্যানুফ্যাকচারিং কোম্পানি লিমিটেডের কারখানা পরিদর্শনে গিয়ে প্রবেশ করতে পারেনি ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) পরিদর্শক দল।
সম্প্রতি পুঁজিবাজারের তালিকাভুক্ত পাট খাতের প্রতিষ্ঠান নর্দার্ণ জুট অ্যান্ড ম্যানুফ্যাকচারিংয়ের বর্তমান উৎপাদন অবস্থা পরিদর্শনের জন্য কোম্পানিটির কারখানা প্রদর্শনে যায় ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের একটি পরিদর্শক দল। তবে কারখানাটি সম্পূর্ণরূপে বন্ধ থাকার কারণে কারখানা পরিদর্শন না করেই ফিরে আসতে হয় পরিদর্শক দলটিকে। এতে ডিএসইর পরিদর্শক দল নর্দার্ণ জুটের বর্তমান অবস্থা সম্পর্কে কোনো তথ্য জানতে পারেনি।
ডিএসই সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
এদিকে, আজ (০৫ সেপ্টেম্বর) নর্দার্ণ জুটের শেয়ারের দর ০ দশমিক ১৯ শতাংশ বা ৪০ পয়সা বৃদ্ধি পেয়ে সর্বশেষ ২১২ টাকা ৮০ পয়সা দরে লেনদেন হয়।
পাট খাতের এই কোম্পানিটি ১৯৯৪ সালে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হয়। কয়েক বছর আগে শেয়ার কিনে রাতারাতি নর্দার্ণ জুট সহ পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত আরও দুটি কোম্পানির নিয়ন্ত্রণ নেন প্রশান্ত কুমার হালদার (পিকে হালদার)। পরিচালক পদে বসান স্বজনদের। প্রতিষ্ঠানগুলোর কার্যালয়ও এক ভবনে, কারওয়ান বাজারের ডিএইচ টাওয়ারে নিয়ে আসেন তিনি।
পি কে হালদারের নিয়ন্ত্রণে যাওয়া নর্দান জুট সহ আরো দুইটি প্রতিষ্ঠানের নামে ইন্টারন্যাশনাল লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস থেকে ১৭০ কোটি ঋণ নেওয়া হয়। বাংলাদেশ ব্যাংকের এক প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, ওই ১৭০ কোটি টাকা ঋণের সুবিধাভোগী পি কে হালদারই।
জানা যায়, পুঁজিবাজার থেকে নর্দান জুটের শেয়ার কেনেন পি কে হালদার। সেখানে চেয়ারম্যান করা হয় পিপলস লিজিংয়ের চেয়ারম্যান উজ্জল কুমার নন্দীকে। আর পরিচালক করা হয় পি কে হালদারের খালাতো ভাই অমিতাভ অধিকারীকে।
পিকে হালদার পালিয়ে যাওয়ার পর থেকেই প্রায় বন্ধ হয়ে গেছে কোম্পানিগুলো। সংশয়ে আছেন কোম্পানিগুলোর সাধারণ বিনিয়োগকারীরা। ব্যতিক্রম হয়নি নর্দার্ণ জুট অ্যান্ড ম্যানুফ্যাকচারিং কোম্পানি এবং কোম্পানিটির বিনিয়োগকারীদের সাথেও।
কোম্পানিটি গত ২ বছরে বিনিয়োগকারীদের কোনো লভ্যাংশ দেয়নি। এমনকি ২০২০ সালের পর থেকে কোনো আর্থিক প্রতিবেদনও প্রকাশ করেনি। স্টক এক্সচেঞ্জের সাথেও যোগাযোগ রাখছে না কোম্পানিটি। ফলে কোম্পানিটির হালনাগদ কোনো তথ্য জানার উপায় নেই। তবু অন্ধকারে এই কোম্পানির শেয়ারে বিনিয়োগ করছেন অনেক বিনিয়োগকারী। আর তাদেরকে আকৃষ্ট করতে কিছু কারসাজিকারী নানা কৌশল অবলম্বন করছেন বলে সংশ্লিষ্টদের সন্দেহ। আর এ কারণে এমন একটি দূর্বল কোম্পানির শেয়ারের দাম গত কিছুদিনে টানা বেড়েছে। বর্তমানে বাজারে শেয়ারটির দাম তার অভিহিত মূল্যের ২০ গুণেরও বেশি।