অমর একুশে বইমেলার দ্বিতীয় দিন আজ শুক্রবার (২ ফেব্রুয়ারি)। ছুটির দিন হওয়ায় দর্শক-ক্রেতার ঢল নামবে বলে আগে থেকেই ধারণা ছিল সংশ্লিষ্টদের। সেটি সত্যিও হয়েছে। সকালেই জমজমাট ছিল শিশুচত্বর। কারণ, এদিন সকাল ১১টা থেকে বেলা ১টা পর্যন্ত ছিল শিশুপ্রহর। সেখানে মেতেছিল শিশুরা। আর তাদের আনন্দে উচ্ছ্বসিত ছিলেন অভিভাবকেরা। আর বিকেল থেকে বাড়তে থাকে ভিড়।
মেলায় গিয়ে দেখা যায়, সকালেই অভিভাবকদের সঙ্গে দলে দলে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আয়োজিত মেলা প্রাঙ্গণে প্রবেশ করতে শুরু করে শিশুরা। তারা ঢুকেই চলে যায় শিশুচত্বরে। এবারের বইমেলায় রমনা কালী মন্দির গেট দিয়ে প্রবেশের পর ঠিক ডান দিকে বড় পরিসরে রাখা হয়েছে এই চত্বর। সেখানে উপস্থিত ছিল সিসিমপুরের চরিত্র হালুম, টুকটুকি, শিখু, ইকরি। তাদের সঙ্গে মজে ছিল শিশুরা। বইয়ের স্টলের পাশে তাদের খেলাধুলার কয়েকটি স্পটেও আনন্দে ঝলমলে তারার মতো জ্বলছিল যেন শিশুগুলো। সংশ্লিষ্টরা জানান, মাসব্যাপী বইমেলায় প্রতি শুক্র ও শনিবার বেলা সাড়ে ১১টা, বিকেল সাড়ে ৩টা এবং সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় তিনটি করে শো করবে সিসিমপুর।
আজ সকাল সোয়া ১১টায় মেলার শিশুচত্বরে সিসিমপুর মঞ্চ উদ্বোধন করেন বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক কবি মুহম্মদ নূরুল হুদা। এ সময় তিনি বলেন, ‘এবার আমরা বইমেলার স্লোগান রেখেছি, ‘পড় বই গড়ো দেশ, বঙ্গবন্ধুর বাংলাদেশ।’ এই বাক্যটির সাথে আরেকটি বাক্য বলব, সেটি হল ‘বিশ্বজোড়া বিশ্বদেশ’। আমরা বই পড়ে বঙ্গবন্ধুর সোনার দেশ গড়তে চাই। সেই সাথে বিশ্বের সুনাগরিক হতে চাই। বাংলাদেশ এবং সৃজনশীলতা চিরজীবী হোক।’
সিসেমি ওয়ার্কশপের বাংলাদেশের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ শাহ আলম, বইমেলা পরিচালনা কমিটির সদস্য সচিব কে এম মোজাহিদুল ইসলাম এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
সাত বছর বয়সী শিশু রাহাত এসেছে তার মা-বাবার সঙ্গে। বাবা ব্যাংক কর্মকর্তা। ছুটির দিনে শিশুপ্রহরে এসে জানাল তার অনুভূতি। এনটিভি অনলাইনকে বলে, ‘সিসিমপুর আমার খুব ভালো লেগেছে। সেখানে আমি হালুম, টুকটুকিকে সত্যি সত্যি দেখেছি।’ আর লুবাবা (১০) জানায়, সে দুটি বই কিনেছে। একটি ছড়ার, অন্যটি গল্পের। এগুলো সে পড়বে। আগামী শুক্রবার অথবা শনিবার আবার বাবার সঙ্গে বইমেলায় আসবে।
গৃহিনী রাজিয়া খানম বলেন, সন্তানদের নিয়ে বইমেলায় আসতে তার ভালো লাগে। বই বিমুখ হতে বসা শিশুদের জন্য মেলাটি একটি ভূমিকার রাখে বলে তার বিশ্বাস। তিনি খুব ছোট থাকতেই তার মেয়ে জান্নাতকে (৯) নিয়ে মেলায় আসতেন। আজও এসেছেন। বই কিনে দেবেন। এভাবে তিনি পাঠোভ্যাস গড়ে তোলার চেষ্টা করেন।
বিকেল থেকে মেলায় বাড়তে থাকে সব বয়সীদের ভিড়। তবে, লোক সমাগম হলেও বিক্রিতে তার প্রভাব কতটা পড়বে তা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন বিভিন্ন প্যাভিলিয়ন ও স্টলের বিক্রয়কর্মী এবং সংশ্লিষ্টরা।