কোটাবিরোধী আন্দোলনকারীদের ওপর ছাত্রলীগের হামলার প্রতিবাদে ক্লাস পরীক্ষাসহ সব ধরনের একাডেমিক কার্যক্রম বর্জন করেছেন রাজধানীর নীলক্ষেতের গভর্নমেন্ট কলেজ অব অ্যাপ্লাইড হিউম্যান সায়েন্সের শিক্ষার্থীরা।
মঙ্গলবার (১৬ জুলাই) সকাল থেকে সাধারণ শিক্ষার্থীরা কোনো ক্লাস-পরীক্ষায় অংশ নেননি। একইসঙ্গে তাদেরকে ‘বয়কট এক্সাম, বয়কট ক্লাস’ প্ল্যাকার্ড প্রদর্শন করতেও দেখা গেছে।
শিক্ষার্থীরা বলেন, সারা দেশের সাধারণ শিক্ষার্থীদের দাবির বিরুদ্ধে একটি বিশেষ শ্রেণি পরিকল্পিতভাবে দাঁড়িয়েছে। তারা বিভিন্ন ক্যাম্পাসে বর্বরোচিতভাবে হামলা চালিয়েছে। সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠের মেধাবী শিক্ষার্থীদের পিটিয়ে রক্তাক্ত করেছে। যার প্রতিবাদে আমরা সব ধরনের ক্লাস-পরীক্ষাসহ সব একাডেমিক কার্যক্রম বর্জন করেছি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শিক্ষার্থী বলেন, কোটা সংস্কার নিয়ে শিক্ষার্থীদের শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে হামলা চালিয়েছে ছাত্রলীগ। নারী শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা করা হয়েছে। এজন্য আমরা অবস্থান করছি। আজ আমাদের মাস্টার্স পরীক্ষা হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু আমরা সেই পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করিনি। যতক্ষণ পর্যন্ত না কোটা বাতিল করা হবে এবং শিক্ষার্থীদের ওপর হামলাকারীদের বিচার করা হবে ততক্ষণ পর্যন্ত এ বর্জন কর্মসূচি চলবে।
উল্লেখ্য, রোববার (১৪ জুলাই) চীন সফর নিয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে কোটা সংস্কার আন্দোলন প্রসঙ্গে করা এক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে এত ক্ষোভ কেন? মুক্তিযোদ্ধার নাতিপুতিরা কিছুই পাবে না, তাহলে কি রাজাকারের নাতিপুতিরা সব পাবে?’
প্রধানমন্ত্রীর এ বক্তব্যে কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের ‘রাজাকারের বাচ্চা বা নাতিপুতি’ বলা হয়েছে অভিযোগ করে রোববার রাত থেকে প্রতিবাদ শুরু করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। রাতে প্রথমে রোকেয়া হলের মেয়ে শিক্ষার্থীরা হল থেকে মিছিল নিয়ে বের হয়ে আসেন। তারা স্লোগান দেওয়া শুরু করেন ‘তুমি কে আমি কে, রাজাকার রাজাকার’। একপর্যায়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের সব হল থেকে ছেলে ও মেয়ে শিক্ষার্থীরা দলে দলে মিছিল নিয়ে টিএসসির রাজু ভাস্কর্যের সামনে এসে বিক্ষোভ শুরু করেন। প্রায় দেড় ঘণ্টার বিক্ষোভ শেষে হলে ফিরে যান তারা।
একই সময়ে চট্টগ্রাম ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাও প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের প্রতিবাদ জানিয়ে বিক্ষোভ মিছিল করেন।
একই ইস্যুতে গতকাল সোমবারও উত্তাল ছিল ঢাবিসহ দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়। সেখানে ছাত্রলীগের হামলার ঘটনা ঘটে। অ্যাকশনে যায় পুলিশও।