সাধারণ বিনিয়োগকারীদের শেয়ার বেচাকেনার মাধ্যমে ক্যাপিটাল গেইনের (অর্জিত মূলধনী আয়) ওপর করারোপ করা হচ্ছে- এমন গুজবের কারণে মঙ্গলবার (৬ জুন) পুঁজিবাজারে বড় দরপতনের ঘটনা ঘটেছে। পুঁজিবাজারে এ ধরনের গুজব রটনাকারীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে যাচ্ছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)।
সেই সঙ্গে ওইদিন যেসব ব্রোকারেজ হাউজ থেকে শেয়ার বিক্রির চাপ দিয়ে পুঁজিবাজারকে পতনমুখী করা হয়েছিল, তাদের বিরুদ্ধেও বিএসইসি কঠোর ব্যবস্থা নেবে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।
কমিশন সূত্রে জানা গেছে, মঙ্গলবার বিনা কারণে যে সকল ব্রোকারেজ হাউস থেকে বিপুল পরিমান শেয়ার বিক্রির চাপ সৃষ্টি করে পুঁজিবাজারে সূচকের পতন ত্বরান্বিত করা হয়েছে তাদের বিরুদ্ধে কমিশনের পক্ষ থেকে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। দীর্ঘদিন ধরে একটি কুচক্রী মহল পুঁজিবাজারকে ক্ষতিগ্রস্ত করার লক্ষ্যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমকে ব্যবহার করে আসছে। এর আগে দুজন ব্যক্তিকে এ ধরনের অনৈতিক কর্মকাণ্ডের জন্য আটক করেছে ডিবি পুলিশের সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইম ডিভিশন। এছাড়া সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে গুজব রটনাকারীদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময় আইনানুগ ব্যবস্থা নিয়ে আসছে কমিশন। তারই ধারাবাহিকতায় মঙ্গলবার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমকে ব্যবহার করে যারা পুঁজিবাজারকে ক্ষতিগ্রস্ত করেছেন তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
এর আগে শেয়ারবাজারে ক্যাপিটাল গেইনারের উপর কর আরোপের বিষয়ে গুজব ছড়িয়ে বলা হয়, শেয়াবাজারের মূল আইন ১৯৬৯ সালের অধ্যাদেশ এবং ১৯৯৩ সালের আইন। এই দুইটিকে এক করে ২০২৩ সালে নতুন আইন হতে যাচ্ছে। নতুন আইনটি মূলত পুরনো দুই আইনকে একত্রিত করবে এবং কিছুক্ষেত্রে যুগোপযোগি হবে। এখন নতুন আইন কার্যকরের পর আগের অধ্যাদেশ এবং আইন রহিত হবে, সে ক্ষেত্রে ২০১৫ সালের জারি করা এসআরও 'ক্যাপিটাল মার্কেটে বিনিয়োগ থেকে মুনাফা করলে সেটার উপর কর দিতে হবে না' সেটা বাতিল হবে বলে বাজারে গুজব ছড়ানো হয়। আর এ থেকেই মূলত মঙ্গলবার পুঁজিবাজারে বড় পতন ঘটে।
তবে এখনো এ বিষয়ে এনবিআর থেকে কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি। আর এনবিআরের নতুন আইনে পুরানো সিদ্ধান্ত বাতিল করার বিষয়ে কিছু বলা হয়নি। ফলে নতুন আইনটি জারি হলে আগের সিদ্ধান্ত বাতিল হওয়ার খবরটি গুজব ছিল বলে বিএসইসি থেকে জানানো হয়। আর এই গুজব ছড়িয়ে একটি চক্র বাজারে পতন ঘটায় এবং অনেক ব্রোকারেজ হাউস থেকে সেদিন সেল প্রোসর দিয়ে পেনিক সৃষ্টি করে। এতে বিনিয়োগকারীরাও ভয় পেয়ে শেয়ার বিক্রি শুরু করলে বাজারে বড় পতনের সম্মূখীন হয়।