গত বছর আফ্রিকার দেশ গাম্বিয়ায় কাশির সিরাপ খাওয়ার পর কয়েকটি শিশুর মৃত্যু হয়। তখন অভিযোগ করা হয় ভারত থেকে আমদানিকৃত সিরাপে প্রাণ গেছে সেই সব শিশুর। এমন গুরুতর অভিযোগের পর একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে দেশটির সরকার।
সরকার গঠিত সেই তদন্ত কমিটি শুক্রবার (২১ জুলাই) জানিয়েছে, ভারতীয় কোম্পানির উৎপাদিত চারটি সিরাপ খাওয়ার পরই কিডনি বিকল হয়ে অন্তত ৭০ শিশু মারা গেছে। খবর এএফপি।
গাম্বিয়ার স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডাক্তার আহামাদু লামিন সামাতে এক সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, এই সিরাপগুলো আমদানির ক্ষেত্রে— পরীক্ষা-নিরীক্ষা থেকে শুরু করে সবকিছুতে ত্রুটি ছিল। এমনকি এগুলো তাদের ওষুধ নিয়ন্ত্রক সংস্থায় (এমসিএ) নিবন্ধিতও ছিল না।
শিশু মৃত্যুর ঘটনায় এমসিএ’র প্রধানকে বরখাস্ত করা হয়েছে বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্যমন্ত্রী। এছাড়া ওষুধগুলোর ঝুঁকি যাচাই-বাছাই না করে আমদানি অনুমতি দেওয়ায় তত্ত্বাবধানকারী ফার্মাসিস্টের ওপর দায় চাপিয়েছেন তিনি।
গত বছরের সেপ্টেম্বরে শিশু মৃত্যুর ঘটনাটি প্রথম সামনে আসে। এরপর দেশটির সরকার কয়েকটি কাশির সিরাপ ও ঠান্ডার ওষুধ পরীক্ষার নির্দেশ দেয়। যেটির মধ্যে ছিল ভারতের মেইডেন ফার্মাসিউটিক্যালসের পণ্য। এ প্রতিষ্ঠানটিই এই ভেজাল সিরাপ তৈরি করেছিল। পরবর্তীতে গাম্বিয়া ভারতের সব ওষুধ পণ্যের ওপর নিষেধাজ্ঞা দেয়।
গাম্বিয়ার তদন্তকারী দল দেশটিতে একটি কোয়ালিটি কন্ট্রোল ল্যাবরেটরি স্থাপন করার পরামর্শ দিয়েছে। যেন বাইরের দেশ থেকে আসা ওষুধ পণ্য পরীক্ষা করে এরপর বাজারে ছাড়া যায়।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) তথ্য অনুযায়ী, ওই সিরাপগুলোতে ‘অগ্রহণযোগ্য পরিমাণ’ ডাইথেলিন গ্লাইকোল এবং ইথিলেন গ্লাইকোল মেশানো হয়েছিল। এগুলো জমাটবিরোধী পদার্থ হিসেবে ব্যবহার করা হয়। আর এই বিষাক্ত পণ্য কেউ পান করলে বা খেলে তা জীবনহানিকর হতে পারে।