গাজা উপত্যকার জাবালিয়ায় একটি বাড়িতে ইসরায়েলি হামলার পর ধ্বংসস্তূপে আটকে পড়া একটি ছেলেকে উদ্ধার কাজ করছেন স্থানীয়রা। গত ১৯ অক্টোবরের ছবি
ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় ভয়াবহ বিমান হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। ভূখণ্ডটির জাবালিয়া শরণার্থী শিবিরে চালানো ওই হামলায় ৩০ জন নিহত হয়েছেন। নিহতদের বেশিরভাগই শিশু। এছাড়া হামলায় আহত হয়েছেন আরও ২৭ জন।
রোববার (২২ অক্টোবর) গভীর রাতে গাজার এই শরণার্থী শিবিরে ইসরায়েলি হামলার ঘটনা ঘটে বলে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গাজার জাবালিয়া শরণার্থী শিবিরে ইসরায়েলি বোমায় বিধ্বস্ত ভবনের ধ্বংসাবশেষের নিচ থেকে ৩০টি মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে বলে সেখানকার বেসামরিক প্রতিরক্ষা ইউনিট আল জাজিরাকে জানিয়েছে। নিহতদের বেশিরভাগই নারী ও শিশু।
গাজার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, গাজায় উপত্যকায় আটটি শরণার্থী শিবিরের মধ্যে জাবালিয়া শরণার্থী শিবিরটি বৃহত্তম এবং এখানকারই একটি আবাসিক ভবনে রোববার গভীর রাতে ইসরায়েলি বিমান হামলার পরে অনেক হতাহতের ঘটনা ঘটেছে।
আল জাজিরা বলছে, ইসরায়েলি ওই বিমান হামলায় কমপক্ষে ২৭ জন আহত হয়েছেন। গাজার হাসপাতালগুলো বলছে, তারা আহতদের চিকিৎসা করতে কার্যত লড়াই করছে। উত্তর গাজার ইন্দোনেশিয়ান হাসপাতালের পরিচালক আল জাজিরাকে বলেছেন, ‘আমরা ওষুধ ও চিকিৎসা সরঞ্জামের তীব্র সংকটে ভুগছি।’
গত ৭ অক্টোবর থেকে গাজায় বিমান হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েলি বিমান বাহিনী। তাদের এ নির্বিচার হামলায় এখন পর্যন্ত ৪ হাজার ৬৫১ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। যার মধ্যে শিশুর সংখ্যাই ১ হাজার ৭০০ জনেরও বেশি। হামলায় আহত হয়েছেন ১৪ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি।
যদিও ইসরায়েল দাবি করছে তারা হামাসের অবকাঠামো লক্ষ্য করে হামলা চালাচ্ছে। তবে হামাসের যোদ্ধাদের চেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন গাজার বেসামরিক মানুষ।
আল জাজিরা বলছে, ঘনবসতিপূর্ণ জাবালিয়া ক্যাম্পে তিনটি স্কুল রয়েছে যা ইউনাইটেড নেশনস রিলিফ অ্যান্ড ওয়ার্কস এজেন্সি ফর প্যালেস্টাইন রিফিউজিস ইন দ্য নেয়ার ইস্ট বা ইউএনডব্লিউআরএ-এর মাধ্যমে পরিচালিত হয়ে থাকে। এর মধ্যে কয়েকটি বিদ্যালয় শত শত বাস্তুচ্যুত পরিবারের আশ্রয়কেন্দ্রে রূপান্তরিত হয়েছে।
এর আগেও ইসরায়েল এই শিবিরে বোমাবর্ষণ করেছে। অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল বলছে, গত ৯ অক্টোবর এই ক্যাম্পের একটি বাজারে বিমান হামলা চালায় ইসরায়েল। গাজার ব্যস্ততম এলাকাগুলোর মধ্যে একটি বলে বিবেচিত স্থানে হওয়া সেই হামলায় কতসংখ্যক মানুষ নিহত হয়েছেন তা এখনও জানা যায়নি।
জাবালিয়া ক্যাম্পের একজন বাসিন্দা বলেন, গত দুই সপ্তাহের ঘটনা সবকিছু বদলে দিয়েছে।