ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা ভূখণ্ডের নুসেইরাত শরণার্থী শিবিরে হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। এতে কমপক্ষে ১৪ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে চারজন শিশু।
নুসেইরাত শরণার্থী শিবিরের একটি বাড়িতে ইসরায়েল বোমা হামলা চালালে প্রাণহানির এই ঘটনা ঘটে। এছাড়া হামলায় আরও অনেকে আহত হয়েছেন বলেও জানা গেছে।
বুধবার (১০ এপ্রিল) এই তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা।
সংবাদমাধ্যমটি বলছে, মধ্য গাজার নুসেইরাত শরণার্থী শিবিরের আল-জাওয়াইদা এলাকায় আবু ইউসুফ পরিবারের একটি বাড়ি থেকে ১৪ জনের মৃতদেহ উদ্ধার করার কথা জানিয়েছে গাজার সিভিল ডিফেন্স। ইসরায়েলি সেনাবাহিনী এই বাড়িতে বোমাবর্ষণ করেছিল।
এর আগে হামলার পর তাৎক্ষণিকভাবে চার শিশুসহ অন্তত ১০ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে বলে জানানো হয়েছিল। পরে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ১৪ জনে পৌঁছায়।
আল জাজিরার হাতে আসা এক্সক্লুসিভ ভিডিও ফুটেজে দেখা যাচ্ছে, ইসরায়েলি হামলায় নিহত অন্তত ১০ জনের মৃতদেহ দেইর আল-বালাহের আল-আকসা শহীদ হাসপাতালে পৌঁছেছে। নিহতদের মধ্যে চার শিশুর লাশও রয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইসরায়েলি বর্বর এই হামলার শিকার বাড়িটি ছিল আবু ইউসুফ পরিবারের এবং হামলায় আরও অনেক ফিলিস্তিনি আহত হয়েছেন।
এর আগে গত মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহেও গাজা ভূখণ্ডের নুসেইরাত শরণার্থী শিবিরে হামলা চালিয়েছিল ইসরায়েল। এতে কমপক্ষে ১৩ ফিলিস্তিনি নিহত হন। নিহতদের সবাই নারী ও শিশু বলে সেসময় জানিয়েছিল আল জাজিরা।
উল্লেখ্য, গত ৭ অক্টোবর হামাসের নজিরবিহীন আন্তঃসীমান্ত হামলার পর থেকে ইসরায়েল গাজা উপত্যকায় অবিরাম বিমান ও স্থল হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। ইসরায়েলি এই হামলায় হাসপাতাল, স্কুল, শরণার্থী শিবির, মসজিদ, গির্জাসহ হাজার হাজার ভবন ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস হয়ে গেছে।
এছাড়া ইসরায়েলি আগ্রাসনের কারণে প্রায় ২০ লাখেরও বেশি বাসিন্দা তাদের বাড়িঘর ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন।
মূলত ইসরায়েলি আক্রমণ গাজাকে ধ্বংসস্তূপে পরিণত করেছে। জাতিসংঘের মতে, ইসরায়েলের বর্বর আক্রমণের কারণে গাজার প্রায় ৮৫ শতাংশ ফিলিস্তিনি বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। আর খাদ্য, বিশুদ্ধ পানি এবং ওষুধের তীব্র সংকটের মধ্যে গাজার সকলেই এখন খাদ্য নিরাপত্তাহীন অবস্থার মধ্যে রয়েছেন।
মূলত আন্তর্জাতিক আদালতের অস্থায়ী রায়কে উপেক্ষা করে ইসরায়েল গাজা উপত্যকায় তার আক্রমণ অব্যাহত রেখেছে। ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষের মতে, গত বছরের ৭ অক্টোবর থেকে চলা নিরলস এই হামলায় কমপক্ষে ৩৩ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন।
যাদের বেশিরভাগই নারী এবং শিশু। এছাড়া ইসরায়েলি হামলায় আরও প্রায় ৭৬ হাজার মানুষ আহত হয়েছেন।