ওজন কমানোর ক্ষেত্রে খাওয়ার আগে পানি পান করার পদ্ধতিটা প্রায় সবারই জানা। তবে এই পন্থায় আসলেই কি ওজন কমে?
‘খাওয়ার আগে এক গ্লাস পানি পান করলে বেশি খাওয়ার সম্ভাবনা কমে-বিষয়টা যুক্ত সঙ্গত বটে'- হার্ভার্ড হেল্থ পাবলিশিংয়ে প্রকাশিত প্রতিবেদনে মন্তব্য করেন হার্ভার্ড মেডিকেল স্কুলের চিকিৎসক রবার্ট এইচ.স্মার্লিং।
তিনি বলেন, খাওয়ার আগে পানি দিয়ে পেট ভর্তি করলে, অল্পতেই পেটভরা অনুভূতি চলে আসে। ফলে বেশি খাওয়ার সম্ভাবনা কমে। তবে ওজন কমানোর ক্ষেত্রে অন্যান্য বিষয়গুলো বিবেচনা করা জরুরি।
পেটভরা অনুভূতি মানে কম খাওয়া
খাওয়ার সময় পাকস্থলী স্ফিত হতে থাকে। তখন পাকস্থলীর স্নায়ুকোষ মস্তিষ্কে সংকেত পাঠায় কম খেতে বা খাওয়া বন্ধ করতে। পানির পানের পরও একই রকম সংকেত প্রেরিত হয়।
এই বিষয়ে ২০০৭ সালে ‘ভার্জিনিয়া পলিটেকনিক ইন্সটিটিউট অ্যান্ড স্টেট ইউনিভার্সিটি’র করা গবেষণার ফলাফল থেকে জানা যায়-যারা খাওয়ার আগে ভর্তি এক গ্লাস পানি পান করেছেন তারা অন্যদের তুলনায় কম খেয়েছেন।
এই প্রতিষ্ঠানের গবেষকদের করা আরেকটি গবেষণায় দেখা গেছে, যারা খাওয়া আগে অতিরিক্ত পানি পান করেছেন আর খেয়েছেন স্বল্প ক্যালরির খাবার- তাদের ক্ষুধাভাব যেমন কমেছে তেমনি ১২ সপ্তাহে ওজনও কমেছে। সেই তুলনায় একই রকম খাদ্যাভ্যাসে যারা জড়িত ছিল, কিন্তু খাওয়ার আগে পানি পান করেননি তাদের ওজন কমেনি।
ডা. এইচ.স্মার্লিং বলেন, এছাড়া দেহের ভেতরে যাওয়ার পানি দেহের তাপমাত্রায় অনুযায়ী গরম হয়। যেটা করতে শরীরকে শক্তি খরচ করা লাগে। এই প্রক্রিয়াকে বলা হয় ‘থার্মোজেনেজিসস’। অনেকে মনে করেন এর ফলে খাবার থেকে কম ক্যালরি শোষিত হয়। তবে এই বিষয়ে সঠিক কোনো গবেষণা নেই।
ওপরের দু্ই গবেষণার ফলাফল থেকে এই চিকিৎসক বলেন, স্বল্প মেয়াদে ওজন কমানোর ক্ষেত্রে খাওয়ার আগে পানি করাটা কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারে। তবে দীর্ঘমেয়াদে ওজন কমিয়ে রাখার জন্য চাই সঠিক খাদ্যাভ্যাস আর ব্যায়াম।
আর কিছু একটা খেতে ইচ্ছে করা মানেই যে খিদা লেগেছে এমন নয়, অনেক সময় তৃষ্ণা পেলেও এরকম হয়।
তাই ডা. এইচ.স্মার্লিং পরামর্শ দেন, রান্নাঘরে ঘুর ঘুর না করে দুই গ্লাস পানি পান করুন। আর তৃষ্ণা মেটাতে চিনিযুক্ত সোডা বা কোমল পানীয়, প্যাকটজাত কৃত্রিম ফলের রস পরিহার করে পানি পানে অভ্যস্ত হন।