দ্বাদশ জাতীয় সংসদের মন্ত্রিসভার শপথগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীসহ মন্ত্রিপরিষদের নবনিযুক্ত সদস্যদের শপথ বাক্য পাঠ করান রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। এরপর তারা নিজ নিজ শপথবাক্যে স্বাক্ষর করেন। পরে প্রধানমন্ত্রী নবনিযুক্ত মন্ত্রী ও প্রতিমন্ত্রীদের মধ্যে দপ্তর বণ্টন করেন।
৩৭ সদস্যের মন্ত্রিসভায় এবার ১৭ জন নতুন মুখ। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে ২৫ মন্ত্রী ও ১১ প্রতিমন্ত্রীর নাম প্রকাশ করা হয়েছে। এদিকে পূর্বের মন্ত্রিসভার অনেক সদস্য এবারের মন্ত্রিসভায় স্থান পেলেও দপ্তর বণ্টনে রয়েছে বড় রকমের পরিবর্তন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবার তার অধীনে রাখছেন মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ; প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়; সশস্ত্র বাহিনী বিভাগ; বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়, সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয় এবং শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়।
সর্বশেষ মন্ত্রিসভায় তার অধীনে ছিল চারটি মন্ত্রণালয় ও দুটি বিভাগ। সেগুলো হলো মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ; জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়; প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়; সশস্ত্র বাহিনী বিভাগ; বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয় এবং মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়।
এ ছাড়া নির্বাচনী তফসিল ঘোষণার পর স্থপতি ইয়াফেস ওসমান মন্ত্রী পদ থেকে পদত্যাগ করলে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ও প্রধানমন্ত্রীর অধীনস্ত হয়।
তার মধ্যে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পাচ্ছেন যে মন্ত্রীরা-
আ ক ম মোজাম্মেল হক (গাজীপুর-১) : মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়
ওবায়দুল কাদের (নোয়াখালী-৫) : সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়
নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন (নরসিংদী-৪) : শিল্প মন্ত্রণালয়
আসাদুজ্জামান খান কামাল (ঢাকা-১২) : স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়
ডা. দীপু মনি (চাঁদপুর-৩) : সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়
মো. তাজুল ইসলাম (কুমিল্লা-৯) : স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়
মুহাম্মদ ফারুক খান (গোপালগঞ্জ-১) : বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়
আবুল হাসান মাহমুদ আলী (দিনাজপুর-৪) : অর্থ মন্ত্রণালয়
আনিসুল হক (বাহ্মণবাড়িয়া-৪) : আইন মন্ত্রণালয়
মোহাম্মদ হাছান মাহমুদ (চট্টগ্রাম-৭) : পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়
মো. আব্দুস শহীদ (মৌলভীবাজার-৪) : কৃষি মন্ত্রণালয়
সাধন চন্দ্র মজুমদার (নওগাঁ-১) : খাদ্য মন্ত্রণালয়
র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী (ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৩) : গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়
মো. আব্দুর রহমান (ফরিদপুর-১) : মৎস ও প্রাণীসম্পদ মন্ত্রণালয়
মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল (চট্টগ্রাম-৯) : শিক্ষা মন্ত্রণালয়
ফরহাদ হোসেন (মেহেরপুর-১) : জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়
মো. ফরিদুল হক খান (জামালপুর-২) : ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়
মো. জিল্লুল হাকিম (রাজবাড়ী-২) : রেলপথ মন্ত্রণালয়
সাবের হোসেন চৌধুরী (ঢাকা-৯) : পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়
জাহাঙ্গীর কবির নানক (ঢাকা-১৩) : বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়
নাজমুল হাসান পাপন (কিশোরগঞ্জ-৬) : যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়
স্থপতি ইয়াফেস ওসমান (টেকনোক্র্যাট) : বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়
ডা. সামন্ত লাল সেন (টেকনোক্র্যাট) : স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়
নারায়ন চন্দ্র চন্দ-ভূমি মন্ত্রণালয়
আব্দুস সালাম- পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়
উল্লেখ্য, গত ৭ জানুয়ারি দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচনে ৩০০ আসনের মধ্যে ২৯৯টি আসনে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। এর মধ্যে গোলযোগের কারণে একটি আসনের ফল স্থগিত রাখা হয়েছে। বাকি ২৯৮টি আসনের ফলাফল প্রকাশ করেছে নির্বাচন কমিশন। এর মধ্যে ২২২ আসনে জয় পেয়েছে আওয়ামী লীগ। জাতীয় পার্টি পেয়েছে ১১টি আসন। বাকি ৬৫ আসনের মধ্যে ৬২টিতে জয় পেয়েছেন স্বতন্ত্র প্রার্থীরা। আর জাসদ, ওয়ার্কার্স পার্টি ও কল্যাণ পার্টি পেয়েছে একটি করে আসন। নির্বাচনে দেশের প্রধান বিরোধী দল বিএনপি ও তাদের জোটসঙ্গীরা নির্বাচনে অংশ নেয়নি।