বাংলা চলচ্চিত্রের সোনালি যুগের কালজয়ী অভিনেতা তিনি। দর্শকপ্রিয়তার শিখরে পৌঁছে গিয়েছিলেন বলে তাকে দেওয়া হয় ‘নায়করাজ’ উপাধি। চলচ্চিত্রই ছিল তার প্রাণ। তাকে বলা হয় বাংলা চলচ্চিত্রের মুকুটহীন সম্রাট। তিনি রাজ্জাক। পুরো নাম আব্দুর রাজ্জাক। নীল আকাশের নিচে আমি, রাস্তা চলেছি একা, এই সবুজ শ্যামল মায়ায়, দৃষ্টি পড়েছে ঢাকা...।ষাটের দশক থেকে শুরু করে পরবর্তী সময়ে এ দেশের মানুষের সবচেয়ে প্রিয় অভিনেতা নায়ক রাজ রাজ্জাক। তিনি সেলুলয়েডের ফিতায় আবহমান বাঙালির
আনন্দ-বেদনা-ভালোবাসার অনন্য রূপকার। অনন্ত আকাশের হাতছানিকে আলিঙ্গন করে জীবনের সব গান শেষ করে ২০১৭ সালের ২১ আগষ্ট চিরদিনের জন্য হারিয়ে গেছেন নীল আকাশে। কিন্তু রাজ্জাক বেঁচে আছেন, থাকবেন বাঙালির হৃদয় রাজ্যের রাজা হয়ে। পৃথিবীর মায়া ছেড়ে তার চলে যাওয়ার আজ ছয় বছর। ১৯৪২ সালের ২৩ জানুয়ারি কলকাতার টালিগঞ্জে জন্মগ্রহণ করেন ‘ওরা ১১ জন’ চলচ্চিত্রের অন্যতম নায়ক রাজ্জাক। কলকাতার খানপুর হাইস্কুলে সপ্তম শ্রেণিতে পড়ার সময় সরস্বতী পূজায় মঞ্চ নাটকের মাধ্যমে অভিনয় জগতে পদার্পণ করেন তিনি। কলেজ জীবনে ‘রতন লাল বাঙালি’ সিনেমায় অভিনয়ের মাধ্যমে অভিষেক ঘটে বড় পর্দায়। আর বাংলাদেশি চলচ্চিত্রে অভিষেক ঘটে ‘১৩ নম্বর ফেকু ওস্তাগার লেন’ চলচ্চিত্রে অভিনয়ের মধ্য দিয়ে।
নায়ক হিসেবে তার আত্মপ্রকাশ হয় জহির রায়হানের ‘বেহুলা’ চলচ্চিত্রে সুচন্দার বিপরীতে। সেই থেকে শুরু। জহির রায়হান পরিচালিত ‘বেহুলা’ চলচ্চিত্র নায়ক হিসেবে আবির্ভাবের পর রাজ্জাককে আর পেছন দিকে ফিরে তাকাতে হয়নি। ক্রমান্বয়ে খ্যাতির শীর্ষে উঠেছেন তিনি। তারপর থেকে একাধারে অভিনয়, প্রযোজনা ও পরিচালনার মাধ্যমে চলচ্চিত্রাঙ্গন দাপিয়ে বেড়ান রাজ্জাক। চলচ্চিত্রে বাংলাদেশের ইতিহাসে তিনি যতটা দর্শকপ্রিয়তা পেয়েছেন সেটি অনেকটা বিরল।