দেশে গত বছরের শুরু থেকেই চলছে ডলার সংকট। আমদানি বিল পরিশোধে বাংলাদেশ ব্যাংক রিজার্ভ থেকে ডলার বিক্রি করছে। এর ফলে রিজার্ভ ধারাবাহিকভাবে কমছে। এসব সংকটের মধ্যেও জানুয়ারি মাসে কার্ডের মাধ্যমে বৈদেশিক মুদ্রার লেনদেন হয়েছে ৬২০ কোটি টাকা। যা এর আগের মাসের চেয়ে ১৯ কোটি টাকা কম। ডিসেম্বরে কার্ডে ৬৩৯ কোটি টাকার বৈদেশিক মুদ্রা লেনদেন হয়েছিলো।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ হালনাগদ প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা যায়।
তথ্য অনুযায়ী, চলতি ২০২২-২৩ অর্থবছরের জানুয়ারিতে মোট ৩৯ হাজার ৭৫৭ কোটি টাকা লেনদেন হয়। এর মধ্যে দেশি মুদ্রায় ৩৯ হাজার ১৩৭ কোটি এবং বৈদেশিক মুদ্রায় ৬২০ কোটি টাকা।
দেশে রেমিট্যান্স ও রপ্তানি ভালো থাকায় ২০২১ সালের আগস্টে রিজার্ভের পরিমাণ দাঁড়ায় ৪৮ বিলিয়ন ডলার। ওই বছরের আগস্টের পর থেকে বাংলাদেশ ব্যাংক টানা ডলার বিক্রি শুরু করে। আর্থিক খাতের নিয়ন্ত্রক সংস্থাটির ডলার বিক্রি অব্যাহত থাকলেও আমদানি ব্যয় বেড়ে যাওয়ায় গত বছর এপ্রিল থেকে ডলারের সংকট তৈরি হয়। এরপর বাংলাদেশ ব্যাংক ধীরে ধীরে দাম ও রিজার্ভ থেকে ডলার বিক্রি বাড়াতে থাকায় রিজার্ভ কমতে থাকে।
জানা যায়, গত ২০২১-২২ অর্থবছর শেষে দেশে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ছিল ৩ হাজার ৩৪০ কোটি ডলার। বর্তমানে তা ৩ হাজার কোটি ডলারের আশে-পাশে নেমে এসেছে। তবে চলতি মাসে প্রবাসী আয়ে কিছুটা ইতিবাচক প্রবৃদ্ধি লক্ষ্য করা গেছে। এ মাসে প্রথম ২৪ দিনে প্রবাসীরা পাঠিয়েছে ১৫৯ কোটি ৭৫ লাখ ৩০ হাজার মার্কিন ডলার।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, চলতি ২০২২-২৩ অর্থবছরের প্রথম মাস থেকেই কার্ডে বৈদেশিক মুদ্রার লেনদেন বাড়ছে। জুলাইয়ে কার্ডে লেনদেন হয় ৪৪০ কোটি টাকা। এরপরের মাসে আগস্টে ৫২০ কোটি টাকা লেনদেন হয়। অর্থবছরের তৃতীয় মাস সেপ্টেম্বরে লেনদেন হয়েছিলো ৫৮৫ কোটি টাকা, অক্টোবরে লেনদেন হয় ৬০৫ কোটি টাকা, নভেম্বরে ৫৭২ কোটি টাকা এবং ডিসেম্বরে ৬৩৯ কোটি টাকার লেনদেন হয়। এরপরে চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে কার্ডে বৈদেশিক মুদ্রার লেনদেন হয় ৬২০ কোটি টাকা। যা ডিসেম্বর মাসে তুলনায় ১৯ কোটি টাকা কম।
দেশের রিজার্ভের পরিমাণ কমতে থাকায় ব্যাংকগুলোতে ডলার সংকট তৈরি হয় ২০২২ সালের এপ্রিল থেকে। গত ১২ জুলাই প্রথমবারের মতো দেশের খোলাবাজারে ডলার বিক্রি হয় ১০০ টাকায়। এরপরে ক্রমান্বয়ে দাম বাড়লে-কমলেও একইবছরের ১০ আগস্ট ডলারের দাম আরও বেড়ে দাড়ায় ১২০ টাকায়। এরপর বাংলাদেশ ব্যাংক বিভিন্ন পদক্ষেপ হাতে নেয়। পরবর্তীতে কিছুটা স্বস্তি ফেরে খোলা বাজারের ডলারের দামে।
এক বছরে একটি ক্রেডিট কার্ড দিয়ে সর্বোচ্চ ১২ হাজার ডলার ব্যয় করতে পারবেন একজন গ্রাহক। সেক্ষেত্রে ছোট ছোট ব্যবসায়ীরা একই পরিবারের অধিকাংশ ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করে বিদেশ থেকে পণ্য আমদানি করছে।