কাচ্চি ভাইয়ের মালিক মো. সোহেল সিরাজের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের স্পেশাল মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (আদালত নং-২) আদালত। তার বিরুদ্ধে অনুমোদনবিহীন বাদাম শরবত উৎপাদন ও বিক্রি করার অভিযোগ রয়েছে।
একই সঙ্গে প্রতিষ্ঠানের ফাঁকা প্যাডে চিকিৎসকের অগ্রিম সই করে রাখায় (যা টেস্ট রিপোর্টের কাজে ব্যবহৃত হয়) রাজধানীর শান্তিনগরস্থ ‘ঢাকা গ্যাস্ট্রো-লিভার সেন্টারের’ মালিক মো. সাল্লাহ উদ্দিন মেহেদী, প্যাথলজি কনসালটেন্ট ডাক্তার ফরিদা ইয়াসমিন ও মেডিকেল টেকনোলজিস্ট মো. আতিকুর রহমানের বিরুদ্ধেও গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন আদালত।
গত বুধবার (১৫ নভেম্বর) ম্যাজিস্ট্রেট আলাউল আকবর এই আদেশ দেন।
আদেশে পল্টন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে গ্যাস্ট্রো-লিভার সেন্টারের মালিক-ডাক্তার-টেকনোলজিস্টকে এবং খিলগাঁও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে কাচ্চি ভাইয়ের মালিককে গ্রেপ্তার করতে নির্দেশনা দেওয়া হয়। এছাড়াও আদেশে আদালত আগামী ৬ ডিসেম্বর মামলার শুনানির দিন ধার্য করেছেন।
খিলগাঁওয়ের চৌধুরী পাড়ায় অবস্থিত কাচ্চি ভাই নামক প্রতিষ্ঠান কর্তৃক ট্রেড লাইসেন্সের আবেদনের প্রেক্ষিতে অঞ্চল-২ এর নিরাপদ খাদ্য পরিদর্শক কামরুল হাসান গত ১ নভেম্বর সেখানে সরেজমিন পরিদর্শনে যান। পরিদর্শনকালে তিনি খাওয়ার অনুপযোগী ও নাম-ঠিকানাবিহীন আনুমানিক ১০০ বোতল বাদাম শরবত জব্দ ও ধ্বংস করেন। এ সময় তিনি অনুমোদনবিহীন বাদাম শরবত উৎপাদন, বিষাক্ত রঙ, ঘন চিনি ইত্যাদি ব্যবহার না করার জন্য ম্যানেজার ও কর্মচারীদের মৌখিকভাবে সতর্ক করেন।
পরবর্তীতে গত ৭ নভেম্বর সংশ্লিষ্ট পরিদর্শক আবারও সেখানে পরিদর্শনে যান। এ সময় তিনি অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে বাদাম শরবত উৎপাদন ও বিক্রি করার চিত্র দেখতে পান এবং সেগুলোর নমুনা সংগ্রহ করেন। আদালত বিষয়টি আমলে নিয়ে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন।
মামলার আর্জিতে প্রসিকিউটিং অফিসার ও খাদ্য পরিদর্শক মোহাং কামরুল হাসান বলেন, শান্তিনগরের শান টাওয়ারের ৩য় তলায় অবস্থিত দি ঢাকা গ্যাস্ট্রো-লিভার সেন্টারের মালিক গত ৫ নভেম্বর নতুন ট্রেড লাইসেন্সের আবেদন করেন। এর প্রেক্ষিতে ১২ নভেম্বর ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের অঞ্চল-২ এর স্বাস্থ্য পরিদর্শক কামরুল হাসান স্বাস্থ্যগত মতামত প্রদানের লক্ষ্যে সরেজমিন পরিদর্শনে যান। পরিদর্শনকালে তিনি প্রতিষ্ঠানটির ল্যাবের কম্পিউটারের প্রিন্টারের ভেতরে ফাঁকা প্যাডে প্রতিষ্ঠানটির প্যাথলজি কনসালটেন্ট ডাক্তার ফরিদা ইয়াসমিনের স্বাক্ষর দেখতে পান।
এ সময় স্বাস্থ্য পরিদর্শক এ বিষয়ে জানতে চাইলে প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. সাল্লাহ উদ্দিন মেহেদী তাকে বলেন- ডাক্তার এক সপ্তাহের ছুটিতে আছেন, তাই অগ্রিম সই করে রেখে গেছেন। পরবর্তীতে স্বাস্থ্য পরিদর্শক খালি প্যাডে ডাক্তারের স্বাক্ষর রেখে যাওয়া সংক্রান্ত তাৎক্ষণিকভাবে লিখিত স্বীকারোক্তি নেন এবং নমুনা হিসেবে ৩০টি স্বাক্ষরিত ব্ল্যাংক প্যাড জব্দ করে নিয়ে আসেন। পরে স্বাস্থ্য পরিদর্শক বিষয়টি করপোরেশন স্পেশাল মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে উপস্থাপন করেন।’ আর্জির প্রেক্ষিতে আদালত বিষয়টি আমলে নেন এবং বিষয়টির গুরুত্ব বিবেচনায় গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন।