কোটা সংস্কার আন্দোলনের সমন্বয়কদের পুলিশের গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) কার্যালয়ে আটকে রেখে কর্মসূচি প্রত্যাহারের ঘোষণা পাঠে বাধ্য করাকে ‘অনৈতিক’ ও ‘গর্হিত অপরাধ’ বলে উল্লেখ করেছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)। সংস্থাটি বলছে, ডিবি জনগণকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করেছে। নিরাপত্তা হেফাজতের কোনো আইনি ভিত্তি নেই।
আজ সোমবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে টিআইবির পক্ষ থেকে এ কথা বলা হয়। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, কোটা সংস্কার আন্দোলনের সমন্বয়কদের অবৈধভাবে তুলে নিয়ে ডিবি কার্যালয়ে আটকে রেখে ভিডিও বার্তার মাধ্যমে কর্মসূচি প্রত্যাহারের ঘোষণা পড়তে বাধ্য করানোর ঘটনা ‘প্রতারণামূলক’ ও ‘সংবিধান–পরিপন্থী’। গণমাধ্যম সূত্রে যা জানা যাচ্ছে, তাতে এমন মনে হওয়ার যথেষ্ট কারণ রয়েছে যে আন্দোলনের সমন্বয়কদের মূলত তুলে নিয়ে গিয়ে চাপ প্রয়োগ করা হয়েছে।
টিআইবির বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, আন্দোলন দমন করতে গিয়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে বিপুল প্রাণহানি, বাছবিচারহীন মামলা ও ধরপাকড়ের মতো অধিকার লঙ্ঘন হচ্ছে। এই বিষয়গুলোকে বৈধতা দিতে সরকার ও ক্ষমতাসীন দলের অসত্য বয়ানের ধারাবাহিকতায় ডিবির আচরণ নির্মম নাটকীয়তাপূর্ণ। রাষ্ট্রীয় সংস্থাগুলোকে ক্ষমতার অপব্যবহারের সুযোগ করে দিয়ে সরকার অরাজনৈতিক ও শান্তিপূর্ণ আন্দোলনকে সহিংসতার দিকে ঠেলে দিয়েছে উল্লেখ করে টিআইবি গণগ্রেপ্তার, নির্বিচার মামলা, ব্লক রেইড, সাধারণ নাগরিককে হয়রানি ও সত্যের অপলাপ বন্ধের দাবি জানায়।
কোটা সংস্কার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে সাম্প্রতিক সহিংসতার ঘটনায় সাধারণ মানুষকে হেনস্তা করা হচ্ছে উল্লেখ করে বিজ্ঞপ্তিতে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান বলেন, গণগ্রেপ্তার ও যথেচ্ছ মামলা দায়ের সংবিধান–পরিপন্থী। শিক্ষার্থী, পেশাজীবীসহ সাধারণ মানুষকে নির্বিচার গ্রেপ্তার করা হচ্ছে। সহিংসতার বাইরে থাকা ১৩ থেকে ১৭ বছর বয়সের কিশোরকে হাতকড়া পরিয়ে আদালতে তোলার ঘটনা ঘটেছে।
আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর উদ্দেশে ইফতেখারুজ্জামান বলেন, আইনের রক্ষক হিসেবে নিজেদের পরিচয়ের প্রতি শ্রদ্ধা থাকলে আইনের ভক্ষকের পথ থেকে বেরিয়ে এসে সাধারণ নাগরিককে হয়রানি বন্ধ করুন।