বলিউড ইন্ডাস্ট্রি এমন একটি স্থান যা সব সময় গুজব এবং আলোচনার মধ্যে থাকে। ভারতবাসীর মধ্যে বলিউড তারকাদের প্রতি ক্রেজটা একটু অন্যরকম।
এ বলি জগতের জনপ্রিয় এক অভিনেত্রী হলেন ঐশ্বরিয়া রাই বচ্চন। অমিতাভ বচ্চনের পুত্রবধূ এবং নিজেও একাধিক হিট হিন্দি সিনেমাতে কাজ করে ভারতীয় দর্শকদের মধ্যে নিজের পরিচিতি ধরে রেখেছেন এই অভিনেত্রী।
বর্তমানে সিনেমায় অভিনয় করতে দেখা যায় না এই অভিনেত্রীকে। সম্প্রতি তার বিচ্ছেদের গুঞ্জনে সরগরম মিডিয়া। কখনো শোনা যাচ্ছে শ্বশুরবাড়ি ছেড়ে বেরিয়ে এসেছেন ঐশ্বরিয়া রাই বচ্চন। আবার কখনো দেখা যাচ্ছে বিয়ের আংটি খুলে ফেলেছেন অভিষেক। পরক্ষণেই আবার একসঙ্গে হাতেহাত রেখে চলতে।
এবার শোনা গেল এই বিশ্বসুন্দরীর প্রথম প্রেমের কথা ও বিচ্ছেদের গল্প। আনন্দবাজার অনলাইনের খবরে উঠে এসেছে এসব তথ্য।
২০০৭ সালে সাত পাকে বাঁধা পড়েছিলেন অভিষেক এবং ঐশ্বরিয়া। তখন ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম না থাকার কারণে তারকাদের বিয়ে নিয়ে এত হইচই ছিল না। কিন্তু অভিষেক এবং ঐশ্বরিয়ার বিয়ের খবর এবং ছবিতে সংবাদমাধ্যমের পাতা ভরে গিয়েছিল।
ঐশ্বরিয়া যখন মা হন, তখনো কম মাতামাতি হয়নি। সেই তারকা জুটিরই বিচ্ছেদের জল্পনা এখন বলিপাড়ার অলিগলিতে।
ঐশ্বরিয়াকে নিয়ে অনুরাগীদের আগ্রহ বরাবরই বেশি। তা তার সৌন্দর্যের কারণেই হোক বা সুঅভিনেত্রী হিসেবে পরিচিতির কারণে। দীর্ঘ সময় সিনে দুনিয়া থেকে দূরে থাকলেও তাকে নিয়ে চর্চা কখনো কমেনি।
ঐশ্বরিয়াকে নিয়ে বর্তমানে জল্পনা তো হচ্ছেই, তবে অতীতেও তাকে নিয়ে জল্পনার সুর এবং বিতর্কের পারদ কিছু কম চড়েনি। এক নজরে দেখে নেওয়া যাক অভিনেত্রীর প্রেম এবং বিতর্ক পর্বের অধ্যায়।
ঐশ্বরিয়ার প্রথম প্রেমিক হিসেবে খুঁজলেই বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম এবং ওয়েবসাইটে যে নামটি উঠে আসে, তা হল রাজীব মুলচন্দানি।
শোনা যায়, মডেল থাকাকালীন রাজীবের সঙ্গে সম্পর্কে জড়িয়েছিলেন তিনি। সেই সময় তিনি অভিনেত্রী নন, মডেল হিসেবে সুপরিচিত ছিলেন। বিভিন্ন পণ্যের জন্য মডেলিং করার পাশাপাশি নামীদামি পোশাকশিল্পীদের জন্য র্যাম্পে হাঁটতেন ঐশ্বরিয়া।
সেই সময়েই রাজীবের সঙ্গে আলাপ হয় ঐশ্বরিয়ার। রাজীবও পেশায় মডেল ছিলেন। শিগগিরই দুজন মেলামেশা শুরু করেন। কিন্তু ঐশ্বরিয়া বলিউডে পা রাখার পরেই নাকি রাজীবের সঙ্গে তার দূরত্ব বাড়তে থাকে।
সেই সময় জল্পনা রটেছিল, সাফল্যের সিঁড়ি চড়তে শুরু করার পর থেকেই না কি নিজেকে রাজীবের থেকে দূরে সরিয়ে নেন অ্যাশ। পরে তাদের বিচ্ছেদ হয়ে যায়।
এর পর বেশ কয়েক বছর কাউকে মন দেননি ঐশ্বরিয়া। এর পর ১৯৯৯ সালে মুক্তি পাওয়া সঞ্জয় লীলা বানসালির ‘হম দিল দে চুকে সনম’ ছবির সেটে সালমান খানের সঙ্গে আলাপ হয় অভিনেত্রীর।
শোনা যায়, একে অপরের প্রেমে পড়ে যান সালমান এবং ঐশ্বরিয়া। প্রেমপর্বের কারণে বলিউডের অন্যতম আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হন তারা।
তবে শোনা যায়, সালমানের অন্য নারীদের সঙ্গে ওঠাবসা এবং সব বিষয়ে ছড়ি ঘোরানো না কি ঐশ্বরিয়ার পছন্দ ছিল না। পাশাপাশি ঐশ্বরিয়ার ওপর সালমানের অধিকারবোধও নাকি অভিনেত্রীকে অতিষ্ঠ করে তুলেছিল বলে শোনা যায়।
এর পরেই সালমানের জীবন থেকে সরে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন ঐশ্বরিয়া। শোনা যায়, এই ছাড়াছাড়ি হওয়ার বিষয়ে মত ছিল না সালমানের।
মনে করা হয়, সালমান-ঐশ্বরিয়ার সম্পর্কের তিক্ততা আরও বাড়ে যখন, অভিনেত্রীর জীবনে বিবেক ওবেরয়ের প্রবেশ ঘটে। সেই সময় ঐশ্বরিয়ার প্রেমে বিবেক এমনই হাবুডুবু খাচ্ছিলেন যে, তিনি অভিনেত্রীর ৩০তম জন্মদিনে ৩০টি উপহার পাঠিয়েছিলেন।
বেশ কয়েকটি জায়গায় বিবেক এবং ঐশ্বরিয়াকে একসঙ্গে দেখা গিয়েছিল। এর ফলে সালমান এবং ঐশ্বরিয়ার পারস্পরিক সম্পর্কের রসায়ন আরও জটিল হয়।
এর পর সাংবাদিক সম্মেলন করে বোমা ফাটান বিবেক। তার অভিযোগ ছিল, ঐশ্বরিয়ার সঙ্গে মেলামেশার জন্য সালমান তাকে মারার হুমকি দিচ্ছেন। সেই সব অভিযোগও অস্বীকার করেন সালমান।
তবে এত কিছুর পর বিবেকের সঙ্গেও ঐশ্বরিয়ার সম্পর্ক বেশি দিন টেকেনি। সাংবাদিকদের ডেকে বৈঠক করার ‘ফল’ও তাকে ভুগতে হয়েছিল। কোনো পরিচালক বা প্রযোজক বিবেকের সঙ্গে কাজ করতে রাজি হতেন না। গুজব ওঠে, সালমানের নাড়া কলকাঠিতেই বিবেকের ক্যারিয়ার ধ্বংস হয়ে যায়।
এর পর অভিষেকের সঙ্গে বিয়ে ঠিক হয়ে যায় ঐশ্বরিয়ার। তবে বিতর্ক বাধে ‘ধুম-২’ ছবির একটি দৃশ্য নিয়ে।
ওই ছবিতে হৃতিক রোশন এবং ঐশ্বরিয়ার একটি চুম্বনের দৃশ্য ছিল। শোনা যায়, সেই দৃশ্য ভালোভাবে নেয়নি বচ্চন পরিবার। কারণ অভিষেক এবং ঐশ্বরিয়ার বিয়ের প্রস্তুতি তখন তুঙ্গে ছিল। এ দৃশ্যের জন্য আইনি নোটিশও পান ঐশ্বরিয়া।
এ-ও রটেছিল যে, ব্যবসায়ী অনিল আম্বানির সঙ্গেও সম্পর্ক ছিল ঐশ্বরিয়ার। যদিও অভিনেত্রী তা গুজব বলে উড়িয়ে দেন।