ব্যাংকিং খাতের অস্থিরতা আমেরিকা ও সুইজারল্যান্ডে সীমাবদ্ধ থাকেনি। জার্মান ঋণদাতা প্রতিষ্ঠান ডয়েচে ব্যাংকেও তৈরি হয়েছে ব্যাপক অস্থিরতা। তবে ইউরোপীয় কেন্দ্রীয় ব্যাংকের (ইসিবি) প্রেসিডেন্ট ক্রিস্টিন লাগার্ড বলেন, ইউরোপের ব্যাংকগুলো নিরাপদ আছে এবং তারল্য সংকট নেই।
ইউরোপীয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক (ইসিবি) হলো ইউরো মুদ্রার ব্যাংক। ইউরো-জোনের আর্থিক নীতি পরিচালনা করে এটি। গত ২৪ মার্চ ইউরোপীয় ব্যাংকের স্টকে লেনদেন কমে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে সেই সন্দেহ আরও ঘনীভূত হয়। যদিও দিনের শেষ নাগাদ ইউরোপিয়ান কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রেসিডেন্ট ক্রিস্টিন লাগার্ড মন্তব্য করেন ইউরোপের ব্যাংকগুলো নিরাপদ আছে এবং তারল্য সংকট নেই।
ডয়েচে ব্যাংক বছরের পর বছর ধরে সমস্যার বেড়াজালে আটকে ছিল। প্রতিষ্ঠানটির ক্রেডিট-ডিফল্ট অদলবদল (সিডিএস), ব্যাংক ঋণে খেলাপির কারণে ট্রেড ক্রেডিট বিমা রেকর্ডের কাছাকাছি স্তরে পৌঁছেছে। এরই প্রতিক্রিয়ায় বিনিয়োগকারীরা শেয়ার কেনা কমিয়ে দেন। ফলে শেয়ারের ১৪ শতাংশ দরপতন হয়েছে। শেয়ারের দরপতনে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। ইউরো স্টক মার্কেটে ৬০০ ব্যাংক সূচকে প্রতিষ্ঠানটি সেদিন বিকালের দিকে ৫ শতাংশ হারায়।
এর আগে গত ১৯ মার্চ সুইজারল্যান্ডের বৃহত্তম ব্যাংক ইউবিএস কিনে নেয় বিপর্যয়ে পড়া ক্রেডিট সুইস ব্যাংক। বিনিয়োগকারীরা ভাবছিলেন আরও একটি দুর্ভাগ্যজনক সপ্তাহ সামনে আছে কি না।
একটি দীর্ঘ পথ ও তিক্ততার মধ্য দিয়ে পুনর্গঠনের পর, ডয়েচে ব্যাংক এখন লাভজনক প্রতিষ্ঠান। এর খুচরা আমানতের প্রায় ৭০ শতাংশ বিমা করা। নগদ রাখার ব্যাপারেও তারা সতর্ক। ২০১৬ সালের বিপর্যয়ের মুখে আমানতের অবস্থা খারাপ ছিল। ঋণদাতা প্রতিষ্ঠানটির এখন যথেষ্ট তরল সম্পদ রয়েছে, যা ইউরোপীয় কেন্দ্রীয় ব্যাংকে নগদ বিনিময় করতে পারে।
এদিকে ক্রমবর্ধমান সুদের হার, যা সিলিকন ভ্যালি ব্যাংককে (এসভিবি) ধসের দিকে নিয়ে গেছে। সুদের আয় বাড়ার জন্য সুদ হার বৃদ্ধি স্বল্পমেয়াদে ব্যাংকগুলোর জন্য ভালো। প্রকৃতপক্ষে ইউরোপের ব্যাংকগুলো ভালো মুনাফা অর্জন করে। ডয়েচে ব্যাংক ২০২২ সালে ৫ দশমিক ৭ বিলিয়ন ইউরো নিট মুনাফা অর্জন করে। এর আগের বছরের তুলনায় দ্বিগুণ ছিল এই মুনাফা।
বিশ্লেষকদের সংস্থা অটোনোমাস রিসার্চের মতে, ডয়েচে ব্যাংকের ঝুঁকি উচ্চ প্রান্তে থাকলেও এটি খুব বেশি বিপদের কারণ হবে না। আরেকটি উদ্বেগ হলো এসভিবির বিপর্যয়ের ফলে ডয়েচে ব্যাংকের আমেরিকান পোর্টফোলিওকে প্রভাবিত করতে পারে।