বেসরকারি এনআরবি কমার্শিয়াল (এনআরবিসি) ব্যাংকে নিজের ক্ষমতা প্রদর্শন আর সিন্ডিকেটদের বসিয়ে অনিয়ম, লুটপাটের নেতৃত্ব দিচ্ছে ব্যাংকটির চেয়ারম্যান পারভেজ তমাল ও এক্সিকিউটিভ কমিটির চেয়ারম্যান আদনান ইমাম। ইতোমধ্যে তাদের বিরুদ্ধে অর্থ পাচার, ঋন জালিয়াতি, অবৈধ ঋণ বিতরণসহ নানান অভিযোগ লিখিতভাবে কেন্দ্রীয় ব্যাংকে জানিয়েছে ব্যাংকটির প্রতিষ্ঠাতাদের কয়েকজন। গত ১০ আগস্ট বাংলাদেশ ব্যাংকের গর্ভনর বরাবর পাঠানো এক চিঠিতে এসব তথ্য তুলে ধরে অভিযোগ করা হয়।
একই সঙ্গে শেয়ার কারসাজি, গ্রাহকের কোম্পানি দখল, ব্যাংকিং কার্যক্রমে স্বজনপ্রীতি, চুক্তিভিত্তিক কর্মকর্তা নিয়োগ, কমিশন বানিজ্য, কর্মকর্তা নিয়োগে অনিয়মেরও অভিযোগ রয়েছে। ব্যাংকটির পছন্দের কর্মকর্তাদের অস্বাভাবিক ইনক্রিমেন্ট, পদোন্নতিসহ নানা অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। লুটতন্ত্র টিকিয়ে রাখতে ব্যাংকের সিনিয়র ম্যানেজমেন্ট ও একাধিক শাখা ব্যবস্থাপকের যোগসাজশে সংঘবদ্ধ আর্থিক দুর্নীতি চক্র গড়ে তুলেছেন তারা। এমনকি এর সঙ্গে সাবেক গর্ভনর আব্দুর রউফ তালুকদারের সংশ্লিষ্টতা রয়েছে বলে অভিযোগ তুলেছেন।
এখনো এনআরবিসি ব্যাংকের চেয়ারম্যান পারভেজ তমাল ও আদনান ইমাম বহাল তবিয়তেই রয়েছেন। তাদের সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে বিশেষ পরিদর্শন প্রতিবেদন করেছে বাংলাদেশ ব্যাংকের ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টিগ্রেশন ও কাস্টমার সার্ভিসেস ডিভিশন (এফআইসিএসডি)। তদন্ত প্রতিবেদনে পরিচালকদের মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে ব্যাংকের চুক্তিভিত্তিক কর্মকর্তা নিয়োগসহ নানান অনিয়ম পাওয়া গেছে। এর মধ্যে- নিয়ম বহির্ভূত ঋণ প্রদান, ঋণ বিতরণে কমিশন বানিজ্য, শেয়ার কারসাজি, অবৈধভাবে গ্রাহকের কোম্পানি দখল, কর্মকর্তা নিয়োগে অনিয়ম, চেয়ারম্যানের অবৈধভাবে দুটি কার্যালয় ব্যবহার, পছন্দের কর্মকর্তাদের অস্বাভাবিক ইনক্রিমেন্ট, পদোন্নতিসহ নানান অনিয়মের সত্যতা উঠে এসেছে। এছাড়া পরিদর্শন প্রতিবেদনে ব্যাংকের পর্ষদের সদস্যদের উদ্দেশ্য প্রনোদিতভাবে ব্যাংকের আয় হ্রাসসহ কেন্দ্রীয় ব্যাংকের আউটসোর্সিং নীতিমালা লঙ্ঘনের পাশাপাশি ব্যাংকের নিজস্ব প্রকিউরমেন্ট অ্যান্ড এক্সপেন্ডিচার ম্যানেজমেন্ট পলিসির গুরুতর লঙ্ঘনের অভিযোগ তুলে ধরা হয়। এছাড়া পরিচালকেরা ব্যাংকের কর্মকর্তাকে ডেপুটেশনে নিজেদের মালিকানাধীন এনআরবিসি ম্যানেজমেন্টের সিইওর দায়িত্ব পালন করে সুস্পষ্ট ‘কনফ্লিক্ট অব ইন্টারেস্ট’ সৃষ্টি করা হয়েছে বলে প্রতিবেদনে তুলে ধরা হয়। সংশ্লিষ্ট সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
সূত্র মতে, বাংলাদেশ ব্যাংক ও দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) বিভিন্ন সময়ে পরিচালিত পরিদর্শন ও বিশেষ তদন্ত রিপোর্টেও এনআরবিসি ব্যাংকের শীর্ষ এই দুই কর্তার বিরুদ্ধে অর্থপাচারসহ এসব অনিয়ম ও লুটতরাজের সত্যতা পাওয়া গেছে। এ বিষয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে একাধিক প্রতিবেদন প্রকাশিত হলেও পারভেজ তমাল ও আদনান ইমামের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। গুঞ্জন রয়েছে, আওয়ামীলীগ সরকারের উচ্চমহলের একাধিক সদস্যের সহযোগিতায় তারা অবাধে এসব অপকর্ম চালিয়ে গেছেন। ব্যাংকের এই লুটপাটের ঘটনায় বেশ আতঙ্কে রয়েছেন শেয়ারধারী ও আমানতকারীরা।
সূত্র জানায়, ২০১৬ সালের ৭ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত এনআরবিসি ব্যাংকের ৪০তম পর্ষদ সভায় পরিচালকদের ভীতি প্রদর্শনের মাধ্যমে প্রভাব বিস্তার ও ব্যাংক দখলের উদ্দেশ্যে অস্ত্রসহ বহিরাগত নিয়ে মিটিংয়ে প্রবেশ করে প্রথম আলোচনায় আসেন তারা। এরপর শুরু হয় ব্যাংক থেকে নিজেদের প্রতিষ্ঠানের নামে অবৈধ ঋণ বিতরণ। বাংলাদেশ ব্যাংকের নীতিমালাকে তোয়াক্কা না করে নিজেদের স্বার্থসংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান অর্নিতা এগ্রোর নামে ৩ কোটি, পূবালী কন্সেন্ট্রেশনের নামে ৯ কোটি, এনইএস ট্রেডিং এর নামে ১৯ কোটি ও লান্তা সার্ভিসেসের নামে ৩ কোটিসহ মোট ৬৪ কোটি টাকার ঋণ অনুমোদন করে তারা।
সূত্র মতে, বাংলাদেশ ব্যাংকের নীতিমালা অনুসারে কোন ব্যক্তি একত্রে ব্যাংক ও ব্যবস্থাপনা পর্ষদের শীর্ষে পদে থাকতে পারবেন না। কিন্তু পারভেজ তমাল নিয়মকে পাত্তা না দিয়ে একইসাথে এনআরবিসি ব্যাংকের ও এনআরবিসি ম্যানেজমেন্টের চেয়ারম্যান ছিলেন। চেয়ারম্যান থাকাকালীন গত ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ অনুষ্ঠিত ব্যাংকের ৭৮তম বোর্ড সভায় এনআরবিসি ম্যানেজমেন্ট লিমিটেডের অনুকূলে ৬০ কোটি টাকার কম্পোজিট ক্রেডিট ফ্যাসিলিটি অনুমোদন করা হয়। যার মধ্যে ২০ কোটি টাকার অমনিবাস ক্রেডিট ফ্যাসিলিটি ও ৪০ কোটি টাকার লিজ ফাইন্যান্স ফ্যাসিলিটি অন্তর্ভুক্ত ছিলো। এভাবে ঋণ অনুমোদন ব্যাংক কোম্পানি আইন ১৯৯১ ও বাংলাদেশ ব্যাংকের নীতিমালার পরিপন্থী ও শাস্তিযোগ্য অপরাধ।
এছাড়াও, তাদের দুজনের মালিকাধীন এনআরবিসি ম্যানেজমেন্ট কোম্পানিতে ব্যাংকের নিয়মিত কর্মকর্তা ল্যাফটেন্যান্ট কমান্ডার (অবঃ) ফরহাদ সরকারকে ডেপুটেশনে নিয়োগ দেয়া হয়। পাশাপাশি ব্যাংকের অর্থ খরচ করে তাকে যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ায় ১৪ দিনের বিশেষ প্রশিক্ষন দেওয়ার নামে বিদেশ ভ্রমণে নেওয়া হয়। যা ব্যাংকের স্বার্থবিরোধী কাজ।
এদিকে ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে ব্যাংকের গ্রাহকের কোম্পানি দখল করার অভিযোগ উঠেছে তমাল-আদনান সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে। নিজেদের পদপদবীর অপব্যবহার, প্রভাব খাটানোর মাধ্যমে ইক্সোরা এ্যাপারেলস লিমিটেড নামের একটি রপ্তানীমুখী সোয়েটার প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠান দখল করেছে তারা। এই কোম্পানির নাম ভাঙিয়ে শতকোটি টাকার ঋণ জালিয়তি ও বৈদেশিক মুদ্রা পাচারের প্রমান পাওয়া গেছে। যার মামলা বর্তমানে দুদকে চলমান রয়েছে। শুধু ইক্সোরা নয়, পলিগন ফ্যাশন, রিল্যাক্স ফ্যাশন, ইনসাইড নিট কম্পোজিট, সাফি নিট, ফাইভ এফ এ্যাপারেলস, ব্লেসিংস নিটওয়্যার ও সিলভার এ্যাপারেলসসহ প্রায় ১৫টি পোশাক রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে ২ হাজার কোটি টাকার অবৈধ ঋণ অনুমোদন, ঋণ জালিয়াতি এবং এর আড়ালে বৈদেশিক মুদ্রা পাচারে তমাল ও আদনান প্রত্যক্ষভাবে জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে।
জানা যায়, শেয়ারবাজারের কারসাজিতেও বেশ সরব তমাল ও আদনান। এসব কাজে পরিবারের সদস্যদেরও ব্যবহার করতেন তারা। এছাড়াও এনআরবিসি ব্যাংকের প্রিন্সিপাল শাখায় পরিচালিত পারভেজ তমালের মায়ের ব্যাংক হিসাব উম্মে বিলকিস (হিসাব নংঃ ০১০১৩১১০০০০৫৫২৫), পারভেজ তমালের ভাইয়ের ব্যাংক হিসাব সৈয়দ শাব্বির আহমেদ (হিসাব নংঃ ০১০১৩১১০০০০৫৭৩৬), সৈয়দ শাব্বিরের স্ত্রীর ব্যাংক হিসাব আসমা রশীদ (হিসাব নংঃ ০১০১৩১১০০০০৫৫৩০), পারভেজ তমালের ছোট ভাইয়ের ব্যাংক হিসাব সৈয়দ শোয়েব (হিসাব নংঃ ০১০১৩১১০০০০৫৫২৬), আসিফ ইকবালের পিতার ব্যাংক হিসাব আব্দুর রশীদ (হিসাব নংঃ ০১০১৩১১০০০০৫৫৬৭), আসিফ ইকবালের মায়ের একাউন্ট মাকসুদা বেগম (হিসাব নংঃ ০১০১৩১১০০০০৫৫৬৪), আসিফ ইকবালের স্ত্রীর ব্যাংক হিসাব তাকিয়া নিশি (হিসাব নংঃ ০১০১৩১১০০০০৫৫৩৩), আসিফ ইকবালের বোনের ব্যাংক হিসাব নাঈমা সুলতানা (হিসাব নংঃ ০১০১৩১১০০০০৫৫৬৬) এবং (হিসাব নংঃ ০১০১৩১১০০০০৫৫২২) তমাল ও আদনানের মাধ্যমেই পরিচালিত হয়। উল্লেখিত নামের অজ্ঞাতে খোলা এসব ব্যাংক হিসাবের মাধ্যমে তারা শেয়ার কারসাজি ও অর্থপাচার করেছেন। এসবের সঙ্গে ব্যাংকের কর্মকর্তা জাফর ইকবাল হাওলাদার, জমির উদ্দিন ও কামরুল হাসানও জড়িত থাকার অভিযোগ উঠেছে।
সূত্র বলছে, ২০১৬ সালের নভেম্বরে অর্থপাচারের অপরাধে এবিএম আব্দুল মান্নানের ৪ কোটি ৭০ লাখ ১ হাজার ৮৮৬টি শেয়ার বাজেয়াপ্ত ঘোষণা করা হয়। এসব শেয়ারের মধ্যে গত বছরের ৩১ অক্টোবর পারভেজ তমালের ব্যবসায়িক পার্টনার শফিকুল আলম ৬৫ লাখ ৭২ হাজার ৯৯২টি, আদনান ইমামের স্ত্রী নাদিয়া মোমিন ইমাম ৩৮ লাখ ৪৫ হাজার ৯০৪টি এবং মার্কেন্টাইল ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান শহীদুল আহসানের মেয়ে রেহনুমা আহসান ১ কোটি ৪৫ লাখ ৮০ হাজার ৬১৫টি শেয়ার ব্লক মার্কেট থেকে অবৈধভাবে নিজেদের নামে কিনে নেন। অবৈধ এসব শেয়ার হস্তান্তরে ব্যাংকের চেয়ারম্যান পারভেজ তমাল, এক্সিকিউটিভ কমিটির চেয়ারম্যান আদনান ইমাম, ব্যবস্থাপনা পরিচালক গোলাম আউলিয়া ও কোম্পানী সচিব ও সাবেক গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদারের ভগ্নিপতি আহসান হাবিব জড়িত থাকার অভিযোগ উঠেছে।
এদিকে নিজেদের স্বার্থ হাসিলের জন্য সাবেক গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদারের ভগ্নিপতি মেজর (অবঃ) আহসান হাবিবকে এনআরবিসি ব্যাংকে ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসেবে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দেওয়া হয়। ব্যাংকিং পেশায় অভিজ্ঞতাহীন এই সেনা কর্মকর্তাকে নিয়োগের ৭ মাস পরেই ব্যাংকটির কোম্পানি সচিবের মত গুরুত্বপূর্ণ পদে বসানো হয়। এমনকি চুক্তিভিত্তিক নিয়োগের একবছর পূর্ণ হওয়ার আগেই বিশেষ বিবেচনায় তার চাকরি স্থায়ী করা হয়। একই সঙ্গে তাকে সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট পদে পদোন্নতি দেওয়া হয়। মূলত গভর্নরকে বশীকরণের মাধ্যমে তমাল-আদনান চক্রের সব অপকর্ম ধামাচাপা দেওয়াই এই নিয়োগের একমাত্র উদ্দেশ্য বলে অভিযোগ উঠেছে। গভর্নরের ব্যক্তি স্বার্থ সংশ্লিষ্টতার কারণে এনআরবিসি ব্যাংকের বিরুদ্ধে ব্যাপক দুর্নীতি এবং গুরুতর অনিয়মের প্রমাণ থাকা সত্ত্বেও কেন্দ্রীয় বাংকের এফআইসিএডির পর্ষদ ভাঙ্গার সুপারিশ বাস্তবায়ন করা হয়নি।
জানা যায়, এনআরবিসি ব্যাংকের ঋণ অনিয়মে পদে পদে জড়িত ছিলেন ব্যাংক ও ব্যবস্থাপনার এই দুই চেয়ারম্যান। পারভেজ তমালের ব্যবসায়িক অংশীদার শফিকুল আলমের মালিকানাধীন রিলায়েবল বিল্ডার্সের অনুকূলে এনআরবিসি ব্যাংকের হাতিরপুল শাখার গ্রাহক হিসেবে মাত্র ৩ কোটি টাকা জামানতের বিপরীতে প্রায় ৪০০ কোটি টাকার ঋণ অনুমোদন দেয় এই চক্রটি। যেখানে বাংলাদেশ ব্যাংকের ঋণ অনুমোদনের নীতিমালা পুরোপুরি লঙ্ঘন করা হয়েছে। এছাড়া একই শাখা থেকে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত ফরচুন সুজকে ২০০ কোটি টাকার ঋণ অনুমোদন দেওয়া হয়। বিনিয়োগের নাম করে নেওয়া এ ঋণের মাধ্যমে বিপিএলে ক্রিকেট টিম ক্রয় করেছে ফরচুন বরিশাল। সেখানে আবার বেনামে শেয়ার ধারণ করেছে পারভেজ তমাল। এর মাধ্যমে শেয়ার কারসাজি এবং রপ্তানি বাণিজ্যের আড়ালে অর্থপাচার করেছে এনআরবিসির বর্তমান চেয়ারম্যান।
এদিকে এসকেএস ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে নিয়ম বর্হিভূত উপশাখা স্থাপন ও নীতি লঙ্ঘন করে ক্ষুদ্র ঋণ বিতরণ করছে পারভেজ তমাল ও তার সহযোগী রাসেল আহমেদ লিটন। এসব ঋণ থেকে তমাল বড় অঙ্কের কমিশন পেয়েছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। এসকেএস ফাউন্ডেশনের সঙ্গে যৌথভাবে ১৩১টি পার্টনারশিপ উপশাখাসহ প্রায় ৮০০ শাখা-উপশাখা চালু করা হয়। এসব শাখা-উপশাখার ডেকোরেশন ও আসবাবপত্র ক্রয়ের ক্ষেত্রে তমাল-আদনানের বেনামী প্রতিষ্ঠান লানতা সার্ভিসেস, টিএসএন ট্রেড এন্ড ইনফ্রাস্ট্রাকচার ডেভেলপমেন্ট লিমিটেড এবং এনআরবিসি ম্যানেজমেন্ট কোম্পানির মাধ্যমে ওপেন টেন্ডার ও কার্যাদেশ প্রদান করা হয়। ফলে তাদের ইচ্ছে মতো অর্থ ব্যয় করে ব্যাংকের খরচ বাড়ালেও দরপত্রে নিজেদের কোম্পানির সংশ্লিষ্টতা থাকায় মূলত লাভবান হয়েছে পারভেজ তমাল ও আদনান ইমাম।
সূত্র মতে, ২০২৩ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত এসকেএস ফাউন্ডেশনের সাথে যৌথভাবে ৩ হাজার ৩০০ কোটি টাকার মাইক্রো ক্রেডিট ঋণ প্রদান করা হয়েছে। এছাড়া কোম্পানিটির ব্যবসা সম্প্রসারণের জন্য রিসোর্ট, হাসপাতাল, স্কুল ও কলেজ স্থাপনের নামে নির্দিষ্ট জামানত ছাড়াই দুই শতকোটি টাকার ঋণ দিয়েছে এনআরবিসি ব্যাংক। স্বার্থহাসিল ও স্বজনপ্রীতির মাধ্যমে প্রায়ই নিজের ক্ষমতা ব্যবহার করে বড় অঙ্কের ঋণ অনুমোদন করেছেন তমাল-আদনান চক্র। এছাড়া ২০২২ সালের এপ্রিলে ট্রেইনি অফিসার নিয়োগেও এই চক্রের বিরুদ্ধে স্বজনপ্রীতি ও নিয়োগ অনিয়মের অভিযোগ রয়েছে।