নির্বাচন কমিশন (ইসি) সংবিধানের বাইরে যে কোনো দায়িত্ব পালন করতে সক্ষম নয় বলে জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশনার মো. আলমগীর। আজ সোমবার (১৪ আগস্ট) আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা বলেন।
রাজনৈতিক দলগুলো সমঝোতায় আসার কোনো রাস্তা আছে কি না? এ ক্ষেত্রে কমিশন কোনো উদ্যোগ (সংলাপের) নিতে পারে কি না? সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে ইসি আলমগীর বলেন, ‘সংবিধানে সুস্পষ্টভাবে উল্লেখ আছে নির্বাচন কমিশনের দায়িত্ব কী। রাষ্ট্রপতি নির্বাচন, জাতীয় সংসদ নির্বাচন, ভোটার তালিকা প্রণয়ন ও আসনের সীমানা নির্ধারণ এবং সংসদ যদি আইন করে কোনো দায়িত্ব দেয়। নির্বাচন কমিশন সংবিধানের বাইরে যাবে না। নির্বাচন কমিশন সংবিধানের বাইরে গিয়ে কোনো দায়িত্ব পালন করতে পারে না। কারণ, এটা অসাংবিধানিক হয়ে যাবে। আমরা যখন শপথ করেছি, তখন বলেছি সংবিধান মেনে চলবো। যেই শপথ করে এসেছে নির্বাচন কমিশন হয়তো সেই শপথ ভঙ্গ করবে না।’
জাতীয় নির্বাচনের আগে বিদেশিরা এসে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে কথা বলছে। এটাতে আপনাদের কাজে কোনো প্রভাব পড়ছে কি না? সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে মো. আলমগীর বলেন, ‘না, ওই বিষয়ের সঙ্গে আমাদের কাজের কোনো সংশ্লিষ্টতা নাই। ওটা রাজনৈতিক বিষয়।’
সব দল নির্বাচনে না আসলে আপনাদের কমিশনের দক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে পারে, বিদেশিরাও সেটাই বলছে। সাংবাদিকদের এমন মন্তব্য করলে এই ইসি বলেন, ‘বিদেশিরা এমন কথা বলবে না। বলার কথাও না। কারণ নির্বাচনে সব রাজনৈতিক দল কখনোই অংশগ্রহণ করে না। অতীতেও কখনো করেনি।’ বিএনপি যদি নির্বাচনে না আসে নির্বাচন কি দেশে বিদেশে গ্রহণযোগ্য হবে? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘এ বিষয়ে চিন্তা করার আমাদের কোনো সুযোগ নেই, অধিকারও নেই।’
নির্বাচনকালীন সরকার নিয়ে কথা হচ্ছে। নির্বাচনকালীন সরকারের সময় নির্বাচন কমিশনের কাজটা আসলে কি হবে? জানতে চাইলে ইসি আলমগীর বলেন, ‘সরকার পদ্ধতি কি হবে, না হবে সংবিধানে বলা আছে। সংবিধানে যেভাবে বলা আছে আমরা সেভাবে কাজ করবো। নির্বাচনকালীন সরকার পদ্ধতি তো রাজনৈতিক বিষয়। যেই থাকুক নির্বাচনকালীন একটা সরকার থাকবে। সেই সরকারের অধীনেই নির্বাচন হবে। আমরা নির্বাচন সেভাবেই করবো।’
ডিসি–এসপিদের বদলির বিষয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে এই কমিশনার বলেন, ‘নির্বাচনকালীন সময় জেলা প্রশাসক, এসপি, পুলিশ কমিশনারসহ অন্যান্যদের বদলি করতে হলে নির্বাচন কমিশনের অনুমতি নিতে হবে। নির্বাচন কমিশন যদি কাউকে বদলি করতে বলে সেটিও ওনারা বদলি করে দেবেন। এটি আইনেই বলা আছে।’
সংবিধান তো সাধারণ নাগরিকদের জন্য, তাদের প্রত্যাশার প্রতিফলন যদি না ঘটে সে বিষয়টিকে আপনারা কীভাবে দেখছেন? এমন প্রশ্নের জবাবে ইসি কমিশনার বলেন, ‘সেটা দেখার দায়িত্ব আমাদের না। আমাদের কাজ সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচন যথাসময়ে করতে হবে।’
ক্ষমতাসীনদের অধীনে নির্বাচন গেলে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড থাকে না, লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড কি আপনারা নিশ্চিত করতে পারবেন? সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে আলমগীর বলেন, ‘লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত করার দায়িত্ব শুধু নির্বাচন কমিশনের নয়। সরকার, ভোটার, প্রার্থী, সমর্থক সংশ্লিষ্ট সবার দায়িত্ব।’