গাজা উপত্যকায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে ১,২০০ জনে দাঁড়িয়েছে। হামাসের আকস্মিক হামলার পর থেকে ষষ্ঠ দিনে ইসরাইলি বাহিনী গাজায় বোমাবর্ষণ বৃদ্ধি করায় প্রাণহানির সংখ্যা বাড়লো।
আজ বৃহস্পতিবার (১২ অক্টোবর) কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা জানায়, আজ সকালে ইসরায়েলের নতুন হামলায় হতাহতের সংখ্যা বেড়ে যায়। গাজার জেইতুন, সাবরা, আল-নাফাক ও তেল আল-হাওয়া আবাসিক এলাকায় এই হতাহতের ঘটনা ঘটে।
ফিলিস্তিনের স্বাস্থ্য উপমন্ত্রী ইউসেফ আবু আল-রিশ বলেছেন, ধ্বংসস্তুপের নিচে এখনো অনেকে আটকা পড়ে আছে। সর্বোচ্চ ধ্বংসাত্মক মনোভাব নিয়ে নেমেছে ইসরায়েল, এ জন্য আবাসিক এলাকাগুলো পুরোপুরি মিশিয়ে দিচ্ছে।
তিনি বলেন, “গাজায় আক্রমণ শুরুর পর ইসরায়েল বিদ্যুৎ, জ্বালানি এবং পানি সরবরাহ বন্ধ করে দেওয়ায় ঘনবসিতপূর্ণ গাজা মানবিক বিপর্যয়ের মুখে রয়েছে। গাজার ছয় লাখ অধিবাসী এখন পানি পাচ্ছে না, হাসপাতালগুলোতেও পানি মিলছে না। ইসরাইলি আগ্রাসন বন্ধে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে উদ্যোগী হতে হবে।”
জাতিসংঘ জানিয়েছে, ইসরায়েলের বিমান হামলা অব্যাহত থাকায় ৩ লাখ ৩৮ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি বাস্তুচ্যুত হয়েছেন।
জাতিসংঘের মহাসচিব গুতেরেস, ইসরায়েলি এই হামলাকে যুদ্ধাপরাধ হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন।
তিনি বলেছেন, “গাজায় জীবন রক্ষাকারী উপাদান যেমন খাদ্য, জ্বালানি ও পানি সরবরাহ করতে হবে। ইসরায়েল বিমান হামলা চালাচ্ছে এবং খাদ্য, জ্বালানি ও পানি সরবরাহ বন্ধ করে গাজাকে সম্পূর্ণ অবরুদ্ধ করেছে। যা জাতিসংঘের আইন অনুযায়ী যুদ্ধাপরাধ।”
গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ায় ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস। একযোগে পাঁচ হাজার রকেট ছোড়ে তারা। এর অল্প সময়ের ব্যবধানে পাল্টা আক্রমণ চালায় ইসরায়েল। পাল্টাপাল্টি হামলায় দুই পক্ষের আড়াই হাজারের বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে।
ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু গাজা উপত্যকাকে “জনমানবশূন্য দ্বীপে” পরিণত করার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। দখলদার ইসরায়েল সবদিক থেকে ফিলিস্তিনিদের কোণঠাসা করার পদক্ষেপ নিয়েছে। ইতোমধ্যে স্থল অভিযানের জন্য গাজা সীমান্তে বিপুল অস্ত্রশস্ত্র ও সৈন্য সমাবেশ শুরু করেছে ইসরায়েল। এতে গাজায় দীর্ঘমেয়াদি যুদ্ধের ঝুঁকি তৈরি হয়েছে। সেই সঙ্গে গাজার বাসিন্দাদের আবারও ভয়ানক মানবিক সঙ্কটের মুখে পড়ার শঙ্কা দেখা দিয়েছে।
এদিকে ইসরায়েলের হামলায় অবরুদ্ধ গাজায় অন্তত ৩ লাখ ৩৮ হাজার মানুষ ঘরবাড়ি ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন বলে জানিয়েছে জাতিসংঘ।