উত্তর ইরাকের কুর্দি অধ্যুষিত স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চলে একাধিক কুর্দি গোষ্ঠী আছে। সেখানে থাকা ইরানের বিরোধী কুর্দি গোষ্ঠীদের অস্ত্র সংবরণ করিয়ে ক্যাম্পে রাখবে বাগদাদ৷ ইরাকের সরকারের সঙ্গে এমন চুক্তি হয়েছে বলে জানিয়েছে তেহরান৷
ইরানের অভিযোগ, এই গোষ্ঠীগুলি একের পর এক হামলা চালাচ্ছে ইরানে। তাদের প্ররোচনাতেই ইরানের কুর্দি জনতা বার বার বিদ্রোহ ঘোষণা করছে। বিশেষ করে ইরানে পুলিশ হেফাজতে এক কুর্দি নারীর মৃত্যুর পর থেকে অশান্ত হয়ে উঠেছে ইরান।
এই পরিস্থিতিতে ইরাকের উপর চাপসৃষ্টি করছে ইরান। ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র নাসের কানানি জানিয়েছেন, ১৯ সেপ্টেম্বরের মধ্য়ে ইরাককে ব্যবস্থা নিতে হবে। কুর্দি গোষ্ঠীর নেতা এবং কর্মীদের অস্ত্র সংবরণ করাতে হবে। তাদের জন্য নির্দিষ্ট ক্যাম্প তৈরি করতে হবে। সেখানে তাদের ঢোকানোর ব্যবস্থা করতে হবে। কোনোভাবেই যেন তারা আর লড়াইয়ে যোগ দিতে না পারে।
বাগদাদ সেপ্টেম্বরের মধ্যে এই ব্যবস্থা করতে না পারলে তেহেরান ব্যবস্থা নিতে বাধ্য হবে বলে কানানি জানিয়েছেন। ইরাক এ বিষয়ে প্রকাশ্যে কোনো মন্তব্য না করলে খবরের সত্যতা স্বীকার করেছে।
ইরান, ইরাক, তুরস্ক এবং সিরিয়ার একাংশ নিয়ে কুর্দিদের অঞ্চল। দীর্ঘদিন ধরেই নিজেদের আলাদা রাষ্ট্রের জন্য লড়াই চালাচ্ছে তারা। সব মিলিয়ে কুর্দিদের সংখ্যা প্রায় ৩৫ লাখ। ইরাকের উত্তরে স্বায়ত্তশাসিত কুর্দি অঞ্চলে একাধিক ইরানের কুর্দি গোষ্ঠী বসবাস করে। ইরান এই গোষ্ঠীগুলিকে সন্ত্রাসী গোষ্ঠী হিসেবে চিহ্নিত করেছে। বস্তুত, তুরস্কও কুর্দিদের এই ধরনের গোষ্ঠীগুলিকে সন্ত্রাসী হিসেবে দেখে। ইরান এই গোষ্ঠীগুলির উপর আক্রমণও চালিয়েছে। এবার তারা ইরাকের উপর চাপ তৈরি করল।
গত জুলাই মাসে ইরাক কুর্দি নেতাদের সঙ্গে আলোচনা করে ইরান সীমান্তে একটি বিশেষ ব্রিগেড রাখার ব্যবস্থা করেছিল। সীমান্ত চৌকি তৈরির জন্য বাগদাদ সম্প্রতি প্রায় সাত মিলিয়ান অর্থাৎ, ৭০ লাখ মার্কিন ডলার খরচ করেছে। কিন্তু এতেও সন্তুষ্ট হয়নি ইরান। সে কারণেই তারা নতুন দাবি সামনে এনেছে। ১৯ সেপ্টেম্বরের মধ্যে ইরানের দাবি মেনে কাজ করতে হবে ইরাককে। কিন্তু কুর্দিরা এই দাবির বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয় কি না, সে দিকেও তাকিয়ে বিশেষজ্ঞেরা। সূত্র: ডিডাব্লিউ, রয়টার্স, এপি, এএফপি