মন্দার বাজারে চলতি অর্থবছরের জুলাই থেকে জানুয়ারি সময়ে বাংলাদেশের তৈরি পোশাক পণ্য বিশ্ববাজারে রপ্তানি হয়েছে ২ হাজার ৭৪১ কোটি ৮০ লাখ ২০ হাজার মার্কিন ডলার। যা ২০২১-২২ অর্থবছরে ছিল ২ হাজার ৩৯৮ কোটি ৫২ লাখ ৮০ হাজার মার্কিন ডলার পরিমাণ। অর্থাৎ আগের অর্থবছরের চেয়ে ১৪ শতাংশ বেড়েছে। রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সবশেষ তথ্যে এই চিত্র উঠে এসেছে।
এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি পোশাক পণ্য রপ্তানি হয়েছে ইউরোপের বাজারে। দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে, তৃতীয় যুক্তরাজ্য এবং চতুর্থ অবস্থান রয়েছে কানাডার বাজারে।
ইপিবির তথ্য মতে, ২০২২-২৩ অর্থবছরের জুলাই-জানুয়ারি অর্থাৎ গত সাত মাসে ইউরোপীয় ইউনিয়নে বাংলাদেশের পোশাক রপ্তানি বেড়েছে ১৫ দশমিক ৪ শতাংশ। ২০২১-২২ অর্থবছরে এই সময়ে ইউরোপের বাজারে ১১ দশমিক ৯৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলার পরিমাণ পোশাক পণ্য রপ্তানি হয়েছিল। সেখান থেকে প্রায় ২ বিলিয়ন বেড়ে ১৩ দশমিক ৭৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে দাঁড়িয়েছে।
অর্থাৎ চলতি অর্থ বছরের ১ হাজার ৩৭৩ কোটি ৯৭ লাখ ৪০ হাজার পোশাক পণ্য গত সাত মাসে রপ্তানি হয়েছে। যা আগের বছরে ছিল ১ হাজার ১৯৪ কোটি ৩০ লাখ ৪০ হাজার ডলারে।
তার মধ্যে সবচেয়ে বেশি রপ্তানি হয়েছে জার্মানিতে। দেশটিতে আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় মাত্র দশমিক ৮৩ শতাংশ বেড়ে পোশাক পণ্য রপ্তানি হয়েছে ৪ দশমিক ০৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। এরপর স্পেন এবং ফ্রান্সেও রপ্তানি বেড়েছে যথাক্রমে ১৮ দশমিক ১৮ শতাংশ এবং ১৮ দশমিক ৭৪ শতাংশ।
অন্যান্য প্রধান ইইউ দেশ, যেমন ইতালিতে সাড়ে ৫৭ শতাংশ, অস্ট্রিয়াতে ৩২ দশমিক ৯৩ শতাংশ, নেদারল্যান্ডসে ৩২ দশমিক ৪১ শতাংশ এবং সুইডেনে পোশা পণ্য রপ্তানি বেড়েছে ২৩ দশমিক ২৮ শতাংশ।
ইউরোপের পাশাপাশি রপ্তানি বেড়েছে যুক্তরাজ্য ও কানাডার বাজারে। তবে কমেছে যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে। পরিসংখ্যান মতে, যুক্তরাজ্য এবং কানাডায় বাংলাদেশের পণ্য রপ্তানি বেড়েছে ১৪ দশমিক ৪৭ শতাংশ এবং ১৯ দশমিক ২৫ শতাংশ। যুক্তরাজ্যের বাজারে চলতি অর্থ বছরের সাত মাসে রপ্তানি হয়েছে ২৯৩ কোটি ২২ লাখ ৭০ হাজার ডলার পণ্য। যা আগের বছর ছিল ২৫৬ কোটি ১৬ লাখ ৪০ হাজার ডলার।
আর কানাডার বাজারে চলতি বছরে রপ্তানি হয়েছে ৮৬ কোটি ৫৪ লাখ ২০ হাজার ডলার পরিমাণ পণ্য। যা আগের অর্থবছরের একই সময়ে ছিল ৭২ কোটি ৫৭ লাখ ৪০ হাজার ডলার পরিমাণ পণ্য।
অপর দিকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে চলতি অর্থবছরের সাত মাসে পোশাক পণ্য রপ্তানি হয়েছে ৪ দশমিক ৯৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলার বা ৪৯৮ কোটি ৭০ লাখ ১০ হাজার ডলারে। যা ২০২১-২২ অর্থবছরের একই সময়ে রপ্তানি হয়েছিল ৫ দশমিক ৮ বিলিয়ন অর্থাৎ ৫০৮ কোটি ৭৭ লাখ ৪০ হাজার ডলার। অর্থাৎ আগের বছরের তুলনায় ১ দশমকি ৯৮ শতাংশ রপ্তানি আয় কমেছে।
অপ্রচলিত বাজারে বেড়েছে রপ্তানি আয়
প্রচলিত বাজারে পাশাপাশি ২০২১-২২ অর্থবছরের তুলনায় ২০২২-২৩ অর্থ বছরের অপ্রচলিত বাজারে রপ্তানি ৩ দশমিক ৬৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলার থেকে ৩৩ দশমিক ৪৪ শতাংশ বেড়ে ৪ দশমিক ৮৯ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে উন্নীত হয়েছে।
এর মধ্যে ২০২২-২৩ অর্থবছরের জুলাই-জানুয়ারিতে জাপানে আমাদের রপ্তানি ৯২০ দশমিক ২৬ মিলিয়ন মার্কিন ডলারে পৌঁছেছে। যা আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় ৪৫ দশমিক ৯২ শতাংশ বেড়েছে।
উচ্চ প্রবৃদ্ধিসহ অন্যান্য অপ্রচলিত বাজারগুলো হলো মালয়েশিয়া ৯২ দশমিক ৭৭ শতাংশ, মেক্সিকো ৪২ দশমিক ৭০ শতাংশ, ভারত ৫৮ শতাংশ, ব্রাজিল ৬৪ দশমিক ১৪ শতাংশ এবং দক্ষিণ কোরিয়া ৩৭ দশমিক ৩৯ শতাংশ বেড়েছে।