গতবছর রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার পর ইউক্রেনের অলভিয়া বন্দরে পরিত্যক্ত করা হয় বাংলার সমৃদ্ধি নামের জাহাজটিকে।
ইউক্রেনে ক্ষেপণাস্ত্র হামলার শিকার জাহাজটির ক্ষতিপূরণ বাবদ বীমা কোম্পানির কাছ থেকে এ মাসেই ২২.৪৮ মিলিয়ন মার্কিন ডলারা পেতে যাচ্ছে রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন সংস্থা বাংলাদেশ শিপিং কর্পোরেশন। গতবছর রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার পর ইউক্রেনের অলভিয়া বন্দরে পরিত্যক্ত করা হয় বাংলার সমৃদ্ধি নামের জাহাজটিকে।
"আমরা কয়েক মাস ধরে টাইসারের সঙ্গে জাহাজটির বীমা দাবি নিয়ে আলোচনা করছি। পুনঃবীমাকারী সংস্থাটি অবশেষে এ মাসের মধ্যেই বৈদেশিক মুদ্রায় অর্থ প্রদানের বিষয়টি নিশ্চিত করেছে," সাধারন বীমা কর্পোরেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সৈয়দ বেলাল হোসেন দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে এ কথা বলেন। উল্লেখ্য, সাধারন বীমা কর্পোরেশন জাহাজটির প্রাইমারি ইন্স্যুরার বা প্রাথমিক বীমাকারী সংস্থা।
ডেনমার্কের ডেল্টা কর্পোরেশনের কাছে বাংলার সমৃদ্ধিকে ভাড়া দিয়েছিল শিপিং কর্পোরেশন। এরপর ২২ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে পৌঁছায় জাহাজটি। ইতালিতে নিজের গন্তব্যে পৌঁছানোর আগে ইউক্রেনের ওই বন্দর থেকে বল ক্লে নেওয়ার কথা ছিল জাহাজটির।
কিন্তু ২৪ ফেব্রুয়ারি রাশিয়ার আগ্রাসন শুরু হলে, ইউক্রেন তার বন্দরগুলোর কার্যক্রম বন্ধ করে দেয়। ২ মার্চ, আটকে থাকা জাহাজটিতে একটি রকেট আঘাত হানে; এ ঘটনায় একজন নাবিকও নিহত হন।
পরে বাকি ক্রু সদস্যরা জাহাজটিকে অলভিয়া বন্দরে রেখেই নিরাপদে রোমানিয়াতে গিয়ে পৌঁছায়। হামলায় জাহাজের নেভিগেশন ব্রিজ ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। বিস্ফোরণ থেকে আগুন ধরে যাওয়ায় জাহাজের অন্যান্য অংশও ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
প্রাথমিকভাবে জাহাজটি সাধারন বীমা কর্পোরেশনের মাধ্যমে বীমা করা হয়েছিল এবং লয়েডস অফ লন্ডন ব্রোকার টাইসারের মাধ্যমে পুনঃবীমা করা হয়েছিল।
গত বছরের মার্চে শিপিং কর্পোরেশন সাধারন বীমার কাছে বীমা দাবি দাখিল করে তাদেরকে পুনর্বীমাকারী কোম্পানির সঙ্গে যোগাযোগের জন্য অনুরোধ জানায়।
যুদ্ধের ঝুঁকির ক্ষেত্রে বীমার নিয়মনীতি উল্লেখ করে শিপিং কর্পোরেশন শীর্ষ এক কর্মকর্তা জানান, যদি একটি ক্ষতিগ্রস্থ জাহাজকে এক বছরের মধ্যে উদ্ধার করা না যায়, তবে এটিকে কনস্ট্রাকটিভ টোটাল কস্ট বা মোট ক্ষতি হিসেবে ঘোষণা করা হয়; অর্থাৎ ক্ষতি এতটাই ব্যাপক যে, মেরামত ব্যয় জাহাজের দামের সমান বা এরচেয়েও বেশি অথবা বীমার মূল্যের চেয়ে বেশি।
ওই কর্মকর্তার মতে, এসব ক্ষেত্রে পুনর্বীমাকারী প্রতিষ্ঠান জাহাজের সম্পূর্ণ ক্ষতিপূরণ পরিশোধ করবে।
সাধারন বীমার ব্যবস্থাপনা পরিচালক সৈয়দ বেলাল হোসেন বলেন, ক্ষতিপূরণের পর জাহাজটি পুনর্বীমাকারী প্রতিষ্ঠানের কাছে যাবে। পরবর্তীতে, জাহাজটি বিক্রি করা হবে এবং সাধারন বীমা ঝুঁকি কভারেজের ১ শতাংশ পাবে।
২০১৮ সালে বাংলাদেশ শিপিং কর্পোরেশনের বহরে যুক্ত হয় বাংলার সমৃদ্ধি। চীনের সঙ্গে ঋণ চুক্তির মাধ্যমে ২০৪ কোটি টাকায় জাহাজটি কেনা হয়েছিল