অস্থির হয়ে উঠেছে আশুলিয়া শিল্পাঞ্চল। যৌথ বাহিনী নামিয়েও সামাল দেওয়া যায়নি পরিস্থিতি। আজ বুধবার (৪ সেপ্টেম্বর) সকাল থেকেই কাজে যোগ না দিয়ে পথে নেমেছেন শ্রমিকরা। এমন পরিস্থিতিতে ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে আশুলিয়ার অধিকাংশ কারখানায়।
একই সঙ্গে চাকরিচ্যুত শ্রমিক ও চাকরিপ্রত্যাশীরাও চাকরির দাবির পাশাপাশি নিয়োগে নারী-পুরুষের সমতা চেয়ে শ্রমিকদের একটি পক্ষ জোর করে ঢাকা রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চলের ঢোকার চেষ্টা করে। নতুন ইপিজেডে গেইট ভেঙে ভেতরে প্রবেশের চেষ্টাকালে তাদের ধাওয়া করে যৌথ বাহিনী।
এমন পরিস্থিতিতে কারখানার নিরাপত্তা শংকায় রয়েছেন শিল্প মালিকরা। এর আগে বিভিন্ন কারখানার শ্রমিক ছাঁটাই বন্ধ, হাজিরা বোনাসসহ নানা দাবিতে বিক্ষোভ করেন বিভিন্ন কারখানার শ্রমিকরা।
শিল্প পুলিশের একটি সূত্র জানায়, মজুরি বৈষম্যের প্রতিবাদে ব্যাংক উদ্যোক্তাদের সংগঠন বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকস এর চেয়ারম্যান (বিএবি) ও এক্সিম ব্যাংকের চেয়ারম্যান পদ থেকে সদ্য অপসারিত নজরুল ইসলাম মজুমদারের মালিকানাধীন নাসা গ্রুপের শিল্প কারখানায় বেশ কয়েকদিন ধরেই চলছিল শ্রমিক অসন্তোষ।
সকালে নাসা সুপার নামের তৈরি পোশাক কারখানার শ্রমিকরা বের হয়ে এসে আশেপাশের বিভিন্ন কারখানায় ইট পাটকেল ছুঁড়তে থাকেন। এ সময় আশেপাশের হামীম গ্রুপ, শারমিন গ্রুপ, এনভয় গ্ৰুপ, স্টারলিং অ্যাপারেলসেল মতো কমপ্লায়েন্স কারখানাতে ছুটি ঘোষণা করা হলে শ্রমিকরা সব একযোগে রাস্তায় নেমে আসে। তাদের দেখাদেখি অন্য প্রতিষ্ঠানগুলোতেও ছুটি ঘোষণা করলে এদিন শিল্পাঞ্চলে উৎপাদন ব্যবস্থাপনায় ধস নামে।
এ ব্যাপারে পোশাকশিল্পের মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএর ভারপ্রাপ্ত সভাপতি খন্দকার রফিকুল ইসলাম বলেছেন, গতকাল নিরাপত্তা পরিস্থিতি ভালো ছিল। দুপুর থেকে ক্রমশ উত্তেজনা ছড়াতে থাকে। অস্থিতিশীল হয়ে ওঠে উৎপাদন পরিবেশ। যে কারণে দুপুর থেকে বিকেল না হতেই অধিকাংশ কারখানায় ছুটি ঘোষণা করা হয়। আজ সকাল থেকেই সবগুলো কারখানায় এমন পরিস্থিতি। এভাবে চলতে থাকলে সময় মতো ক্রেতাদের কাছে পণ্য সরবরাহ করা যাবে না। পক্ষান্তরে দেশেরই ক্ষতি হবে। তৈরি পোশাকশিল্প নিয়ে গভীর ষড়যন্ত্র চলছে।
আশুলিয়া শিল্পাঞ্চলের অধিকাংশ কারখানায় ছুটি ঘোষণার বিষয়টি নিশ্চিত করে আশুলিয়া শিল্প পুলিশ-১ এর পুলিশ সুপার (এসপি) মোহাম্মদ সারোয়ার আলম বলেন, শিল্পাঞ্চলে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরির চেষ্টা করা হচ্ছে। শিল্পাঞ্চলের নিরাপত্তায় শিল্পপুলিশ ছাড়াও বিজিবি ও সেনাবাহিনীর টহল জোরদার করা হয়েছে।