পশ্চিম এশিয়ায় সফর করছেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিংকেন। মঙ্গল এবং বুধবার তিনি ইসরায়েলে ছিলেন। সফর চলাকালীন একাধিকবার তিনি ইরানকে হুমকি দিয়ে বলেছেন, হুতি বিদ্রোহীরা লোহিত সাগরে আক্রমণ বন্ধ না করলে ইরানের বিরুদ্ধে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
বুধবার ওয়াশিংটনও একই কথা বলেছে। হোয়াইট হাউসের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ইরানকে আমেরিকা-সহ একাধিক দেশ বলেছে, লোহিত সাগরে হুতি বিদ্রোহীদের আক্রমণ বন্ধ করতে। আক্রমণ বন্ধ না হলে অন্য দেশগুলির সঙ্গে পরামর্শ করে পরবর্তী পদক্ষেপের পরিকল্পনা করা হবে।
বস্তুত, পেন্টাগন আগেই জানিয়েছিল, একাধিক দেশকে সঙ্গে নিয়ে লোহিত সাগরে তারা একটি নিরাপত্তা জোট তৈরি করছে। যারা হুতি বিদ্রোহীদের সঙ্গে লড়াই করবে। আমেরিকা-সহ একাধিক দেশের অভিয়োগ, হুতি বিদ্রোহীরা একাজ ইরানের মদতে করছে।
এদিকে বুধবার ১১-০ ভোটে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ একটি প্রস্তাব পাশ করেছে। তাতে বলা হয়েছে অবিলম্বে লোহিত সাগরে পণ্যবাহী জাহাজের উপর হুতি বিদ্রোহীদের আক্রমণ বন্ধ করতে হবে। আমেরিকা এবং জাপান যৌথভাবে এই প্রস্তাব সামনে নিয়ে এসেছিল। হুতি বিদ্রোহীদের আক্রমণ আন্তর্জাতিক বাণিজ্যকে বিপুল ক্ষতির মুখে ফেলছে বলে ওই প্রস্তাবে বলা হয়েছে।
রাশিয়া, চীন, মোজাম্বিক এবং আলজেরিয়া এই ভোটে অংশ নেয়নি। বস্তুত, লোহিত সাগরে হুতি বিদ্রোহীরা এখনো পর্যন্ত ২৬ বার পণ্যবাহী জাহাজে আক্রমণ চালিয়েছে। যে কারণে, লোহিত সাগর হয়ে সুয়েজ খালের ওই রাস্তা আপাতত ব্যবহার করছে না অধিকাংশ পণ্যবাহী জাহাজ। ইউরোপ থেকে এশিয়া যাওয়ার জন্য আফ্রিকার কেপ অফ গুড হোপের রাস্তা ধরছে তারা। যার জেরে বিপুল পরিমাণ ক্ষতি হচ্ছে। সময়ও লাগছে অনেক বেশি।
হুতি বিদ্রোহীরা জানিয়েছে, গাজায় ইসরায়েলের অভিযান বন্ধ না হওয়া পর্যন্ত তারা এই আক্রমণ চালিয়ে যাবে।
উল্লেখ্য, ৭ অক্টোবরের ঘটনার পর থেকেই লোহিত সাগরে ইসরাইলমুখী জাহাজে আক্রমণ শুরু করে হুতি বিদ্রোহীরা। ডিসেম্বরের গোড়ায় তারা মার্কিন জাহাজে আক্রমণ চালায়। তবে সবচেয়ে বড় আক্রমণ হয় ৯ জানুয়ারি। ওইদিন ইয়েমেনের দিক থেকে অন্তত ২০ টি মিসাইল ছোঁড়া হয় বলে আমেরিকার দাবি। লোহিত সাগরে যুক্তরাজ্য এবং আমেরিকার যুদ্ধজাহাজ ওই মিসাইলগুলিকে প্রতিহত করে বলে আমেরিকা দাবি করেছে। সূত্র: ডিডাব্লিউ, রয়টার্স, এপি, এএফপি