তৎকালীন ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ফ্রাঁসোয়া মিতেরাঁ ১৯৯০ সালে বাংলাদেশ সফর করেছিলেন। এরপর গত ৩৩ বছরের মধ্যে আর কোনো ফরাসি প্রেসিডেন্ট ঢাকায় পা রাখেননি।
বর্তমানে ভারত মহাসাগর ও প্রশান্ত মহাসাগর ঘিরে ভূরাজনীতিতে গুরুত্ব বেড়েছে বাংলাদেশের। এই বাস্তবতার ওপর ভিত্তি করে গত কয়েক বছরে ঢাকা-প্যারিসের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক আরেকটু বিস্তৃত পরিসরে বেড়েছে।
বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০২১ সালে ফ্রান্সে দ্বিপক্ষীয় সফর করেছিলেন। সেই সময় ফরাসি প্রেসিডেন্টকে আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন তিনি। ওই আমন্ত্রণ রক্ষাতেই আজ রোববার দুই দিনের সফরে ঢাকায় আসছেন প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ। নয়া দিল্লিতে জি-২০ শীর্ষ সম্মেলন শেষ করে ঢাকার পথে রওনা হবেন তিনি। শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ম্যাক্রোঁকে অভ্যর্থনা জানাবেন বঙ্গবন্ধু কন্যা।
ঢাকার কূটনৈতিক সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ফ্রান্স বিশ্ব রাজনীতি এবং অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। ভূরাজনৈতিক বিবেচনা ছাড়াও নানা কারণে ম্যাক্রোঁর এ সফর বেশ গুরুত্বপূর্ণ। ম্যাক্রোঁর এ সফরে বাংলাদেশের সঙ্গে ফ্রান্সের রাজনৈতিক সম্পর্ক দৃঢ় করার পাশাপাশি অর্থনৈতিক সম্পর্ক আরও জোরদারের সুযোগ রয়েছে বলে মনে করছেন তারা।
কূটনৈতিক সূত্র বলছে, ২০২১ সালে শেখ হাসিনার সফরে বাংলাদেশ ও ফ্রান্স একটি প্রতিরক্ষা সমঝোতা স্মারক সই করে। এ সংক্রান্ত কিছু আলোচনায় গুরুত্ব থাকবে এবার। কিছু দ্বিপাক্ষিক চুক্তি স্বাক্ষর হওয়ারও কথা রয়েছে। এয়ারবাস থেকে একটি স্যাটেলাইট কেনার বিষয়ে একটি চুক্তি হতে পারে। একই কোম্পানি থেকে উড়োজাহাজ কেনার বিষয়ে যে কথা উঠেছে সে বিষয়ে কিছু অগ্রগতি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। ফ্রান্সের সাহায্য সংস্থা এএফডি থেকে ২০ কোটি ডলার সহায়তা নিয়েও একটি সমঝোতা স্মারক সই হতে পারে।
এছাড়া বাণিজ্য, বিনিয়োগ, জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় সহায়তা, প্রযুক্তি হস্তান্তরসহ রোহিঙ্গা ইস্যু দুই সরকারপ্রধানের আলোচনায় গুরুত্ব পাবে বলে আশা করা হচ্ছে।
এর আগে বিভিন্ন সময় ফ্রান্সের কাছ থেকে নৌযান ও হেলিকপ্টারসহ সামরিক সরঞ্জাম কিনেছে বাংলাদেশ। এখন এয়ারবাস থেকে ১০টি বিমান কেনার বিষয়ে কথাবার্তা চলছে। দুই শীর্ষ নেতার বৈঠকে মহাকাশ প্রযুক্তি, প্রতিরক্ষা ক্রয়, জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা, জলবায়ু পরিবর্তন, আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা, মানবাধিকার, নির্বাচন ও ইন্দো-প্যাসিফিক ইস্যুর মতো বিষয়গুলোতে আলোচনা হতে পারে।