স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছেন, দুর্নীতি ও ক্ষমতার অপব্যবহারের অভিযোগে সাবেক সেনাপ্রধান জেনারেল (অব.) আজিজ আহমেদের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার বিষয়টি এখনও আনুষ্ঠানিকভাবে জানানো হয়নি। পুরো ঘটনা আরও পরে পরিষ্কার হওয়া যাবে।
আজ মঙ্গলবার (২১ মে) সচিবালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এক প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।
আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, ‘সাবেক সেনাপ্রধান জেনারেল (অব.) আজিজ আহমেদের পরিবারসহ যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞার বিষয় এখনও আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু জানি না। তবে যুক্তরাষ্ট্র অনেক সময় ব্যক্তিগতভাবেও অনেককে নিষেধাজ্ঞা দেয়। সাবেক সেনাপ্রধানের বিষয়টি কী হয়েছে? এখনও জানি না। পুরো ঘটনা জানার পর পরিষ্কার হওয়া যাবে।’
এর আগে সীমাহীন দুর্নীতি ও ক্ষমতার মারাত্মক অপব্যবহারের অভিযোগে বাংলাদেশের সাবেক সেনাপ্রধান জেনারেল (অব.) আজিজ আহমেদের ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। স্থানীয় সময় সোমবার (২০ মে) যুক্তরাষ্ট্র সাবেক এ প্রভাবশালী সেনা কর্মকর্তা ও তার পরিবারের সদস্যদের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে। মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের ওয়েবসাইটে এক বিবৃতিতে আজিজ আহমেদ ও তার পরিবারের সদস্যদের যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশে অযোগ্য ঘোষণার কথা জানানো হয়।
যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলারের উদ্ধৃতি দিয়ে ওই বিবৃতিতে বলা হয়, ‘উল্লেখযোগ্য পরিমাণ দুর্নীতিতে সম্পৃক্ততার কারণে বাংলাদেশের সাবেক সেনাপ্রধান জেনারেল (অব.) আজিজ আহমেদকে ডিপার্টমেন্ট অব স্টেট, ফরেন অপারেশন অ্যান্ড রিলেটেড প্রোগ্রামস অ্যাপ্রোপ্রিয়েশনস অ্যাক্টের ৭০৩১ (সি) ধারার আওতায় অন্তর্ভুক্ত করার ঘোষণা দিয়েছে পররাষ্ট্র দপ্তর। এর ফলে আজিজ আহমেদ ও তার পরিবারের সদস্যরা সাধারণভাবেই যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশের জন্য অযোগ্য হবেন।’
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ‘আজিজ আহমেদের কর্মকাণ্ডে বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলোর অবমূল্যায়ন এবং সরকারি প্রতিষ্ঠান ও প্রক্রিয়ার ওপর জনগণের আস্থা কমেছে।’
যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তর বলেছে, ‘আজিজ আহমেদ তার ভাইকে বাংলাদেশে অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের জন্য জবাবদিহি এড়াতে সহযোগিতা করেন। এটা করতে গিয়ে তিনি নিয়মতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় হস্তক্ষেপের মাধ্যমে উল্লেখযোগ্য দুর্নীতিতে জড়িয়েছেন। এ ছাড়া অন্যায্যভাবে সামরিক খাতে কন্ট্রাক্ট পাওয়া নিশ্চিত করার জন্য তিনি তার ভাইয়ের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করেছেন। তিনি নিজের স্বার্থের জন্য সরকারি নিয়োগের বিনিময়ে ঘুষ নিয়েছেন।’
বিবৃতিতে বলা হয়, ‘আজিজ আহমেদের বিরুদ্ধে এই ব্যবস্থার মধ্য দিয়ে বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠান ও আইনের শাসন শক্তিশালী করতে যুক্তরাষ্ট্রের অঙ্গীকার পুনরায় নিশ্চিত করা হলো। সরকারি সেবা আরও স্বচ্ছ ও নাগরিকদের সেবা লাভের সুযোগ তৈরি, ব্যবসা ও নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থার উন্নয়ন এবং মুদ্রা পাচার ও অন্যান্য অর্থনৈতিক অপরাধের অনুসন্ধান ও বিচার নিশ্চিতে সক্ষমতা বৃদ্ধির মাধ্যমে বাংলাদেশে দুর্নীতিবিরোধী প্রচেষ্টায় সহায়তা দেয় যুক্তরাষ্ট্র।’