জাল স্লিপের মাধ্যমে গ্রাহকদের সাড়ে তিন কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে প্রিমিয়ার ব্যাংক লিমিটেডের রাজশাহী শাখার আট কর্মকর্তার বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
বৃহস্পতিবার (৩১ অক্টোবর) রাজশাহী মহানগর বিশেষ আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন দুদকের আইনজীবী বজলে তৌহিদ আল হাসান বাবলা।
জানা গেছে, দুর্নীতি দমন কমিশন সমন্বিত জেলা কার্যালয় রাজশাহী ২০২০ সালের ১২ ফেব্রুয়ারি প্রিমিয়ার ব্যাংক লিমিটেডের রাজশাহী শাখার সাবেক সিনিয়র ক্যাশ অফিসার ও ক্যাশ ইনচার্জ এফএম শামসুল ইসলাম ওরফে ফয়সালের (৪২) বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন।
আরও জানা যায়, মামলাটি তদন্তকালে ডেপুটি ম্যানেজার (বর্তমানে বরখাস্ত) মাজেদুল ইসলাম, সাবেক অফিসার (ক্যাশ) মো. মাহবুবুল আলম ওমো. আতাউর রহমান, সাবেক এসএভিপি (বর্তমানে অবসরপ্রাপ্ত) শাহ মাসুদ জামাল, ট্রেইনি জুনিয়র অফিসার (ক্যাশ) রাকেশ কুমার দত্ত, সিনিয়র এক্সিকিউটিভ অফিসার মোসা. ফাহমিদা উম্মে নাজনীন এবং সাবেক ম্যানেজার ও জোনাল ম্যানেজার (বর্তমানে বরখাস্ত) সেলিম রেজা খানের সম্পৃক্ততা পাওয়া যায়। তারা পারস্পরিক যোগসাজশে প্রতারণা জালিয়াতির মাধ্যমে গত ২০১৭ সালের ২৭ মার্চ থেকে ২০২০ সালের ২৩ জানুয়ারি পর্যন্ত গ্রাহকদের টাকা প্রকৃতপক্ষে তাদের হিসাব নম্বরে টাকা জমা না করেই ভুয়া জমা স্লিপ প্রদান করেন।
দুদকের চার্জশিটে আরও জানা যায়, তারা গ্রাহকের টাকা জমা দেখিয়ে চেকে জাল স্বাক্ষরের মাধ্যমে আব্দুল্লাহ জুল বাদাইন নামে এক গ্রাহকের হিসাব হতে ১৬টি চেকের মাধ্যমে ১ কোটি ১৫ লাখ ৯০ হাজার টাকা ও ফজিলা খাতুনের হিসাব হতে ১৫টি চেক মূলে ১ কোটি ৪ লাখ ১৫ হাজার টাকাসহ মোট ২ কোটি ২০ লাখ ৫ হাজার টাকা তুলে নেন। এছাড়া আরও ১ কোটি ২৪ লাখ ৯৫ হাজার টাকা বিভিন্ন সময়ে ভল্ট হতে সরাসরি গ্রহণ করেন। নানা কায়দায় তারা মোট ৩ কোটি ৫৮ লাখ ৯৮ হাজার টাকা হাতিয়ে নেন। এ ঘটনাটি দুদক তদন্ত করে প্রাথমিক সত্যতা পাওয়ায় আদালতে চার্জশীট দাখিল করেন।
এর আগে ২০২০ সালের জানুয়ারিতে ব্যাংকের ক্যাশ উজাড় করে প্রায় সাড়ে তিন কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে প্রিমিয়ার ব্যাংক রাজশাহী শাখার ক্যাশ ইনচার্জ শামসুল ইসলাম ফয়সালকে আটক করে পুলিশে দেয় ব্যাংক কর্তৃপক্ষ। তখন তিনি নিজের অপরাধ স্বীকার করে আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিও দিয়েছিলেন।